প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিল্লি ও বেইজিং সফরে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে তিস্তা মহাপরিকল্পনা ইস্যু আলোচনার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হতে পারে বলে প্রত্যাশা তিস্তা আন্দোলনের নেতাদের।
প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
তিস্তা নিয়ে নদীপাড়ের মানুষের দীর্ঘ সময়ের যে স্বপ্ন তা এ সফরের মধ্যদিয়ে পূর্ণতা পেতে পারে। একই সঙ্গে সংসদে এ প্রকল্পে চীনা বিনিয়োগ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য ভূ-রাজনৈতিক বাধা ডিঙ্গিয়ে নতুন প্রত্যাশার পালক যুক্ত করেছে বলেও মনে করেন তারা।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেছিলেন, নির্বাচনের পর তিস্তা প্রকল্পের প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার বিষয়ে তারা আশাবাদী। আর নির্বাচনের ঠিক পরপরই পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদের সঙ্গে হওয়া এক বৈঠকের পর চীনা রাষ্ট্রদূত সাংবাদিকদের জানান, বাংলাদেশ চাইলে তিস্তা প্রকল্পের কাজ শুরু করার বিষয়ে চীন তৈরি আছে।
সম্প্রতি সংসদে কুড়িগ্রাম-২ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) হামিদুল হক খন্দকারের এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানান, চীনের কাছে তিস্তা মহা-পরিকল্পনার জন্য ঋণ চাওয়া হয়েছে। আর চীন সরকারের নির্দেশনা মোতাবেক গত বছরের ২৭ আগস্ট ফিজিবিলিটি স্ট্যাডি রিপোর্ট সংশোধনের প্রস্তাব, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডে পাঠিয়েছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে পরবর্তী কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হবে। প্রধানমন্ত্রীর এ বক্তব্যকে খুবই ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন অধিকার কর্মীরা।
রংপুর তিস্তা বাঁচাও নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সফিয়ার রহমান বলেন,
প্রধানমন্ত্রী যখন সংসদে তিস্তা মহা পরিকল্পনার বিষয়ে যে কথা বলেছেন, সেটি নিয়ে আমাদের আস্থা আছে। এইটা যেন দীর্ঘায়িত না হয়।অধিকার কর্মীদের প্রত্যাশা, প্রধানমন্ত্রীর কূটনৈতিক তৎপরতার মধ্যদিয়ে দুই দেশের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের মাধ্যমে দীর্ঘদিনের আকাঙ্ক্ষিত তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
রংপুর তিস্তা বাঁচাও নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম হক্কানী বলেন,
আশা করছি- প্রধানমন্ত্রী চীনে থেকে ফিরে এসেই শুষ্ক মৌমুসেই খুব দ্রুততার সঙ্গে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের কাজ শুরু করবেন।গত বছরের ২ আগস্ট রংপুর জেলা স্কুল মাঠে এক জনসভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা দিয়েছিলেন রংপুরের মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করবে তার সরকার।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় জানিয়েছে, শুক্রবার দুপুর ২টায় দিল্লির উদ্দেশে ঢাকা ছাড়বেন প্রধানমন্ত্রী। ওইদিন বিকালে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী দেখা করবেন শেখ হাসিনার সঙ্গে। এরপরের দিন সকালে ফোরকোর্টে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে রাষ্ট্রীয় সংবর্ধনা জানানো হবে। সেখান থেকে ভারতের জাতির পিতার সমাধিতে শ্রদ্ধা জানাতে শেখ হাসিনা যাবেন রাজঘাটে। এরপরই হায়দ্রাবাদ হাউজে হবে হাসিনা-মোদি শীর্ষ বৈঠক। থাকবে চুক্তি-সমঝোতা সইয়ের আনুষ্ঠানিকতাও। ওইদিন বিকালেই ভারতের উপরাষ্ট্রপতি এবং রাষ্ট্রপতির সঙ্গেও সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবারেই রাতেই তার ঢাকা ফেরার কথা রয়েছে।
নয়াশতাব্দী/জিএস
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ