বাবা মানে বটবৃক্ষ, বাবা মানে নির্ভরতা। যার বাবা আছেন, তিনি হয়তো উপলদ্ধি করতে পারবেন না বাবার গুরত্ব কি: কিন্তু যার বাবা নেই, তিনি বুঝতে পারবেন জীবনজুড়ে বাবা কতটা প্রয়োজন। বাবা থাকা মানে পূর্ণতা। বাবা না থাকা মানে বিশাল এক শূন্যতা। আর এই বাবাকে ঘিরেই প্রতিবছর বিশ্বে পালিত হয় বাবা দিবস। জুন মাসের তৃতীয় রোববার দিবসটি পালিত হয়। আজ সেই বাবা দিবস।
বাবা হলেন আমাদের জীবনের প্রথম নায়ক, প্রথম শিক্ষক এবং প্রথম বন্ধু। বাবা আমাদের জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে আস্থা এবং সাহস জোগায়, তার প্রতি আমাদের ভালোবাসা এবং শ্রদ্ধা জানানোর এ দিনটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। দিবসটি ভালোবাসার এক অবিস্মরণীয় উপলক্ষ্য।
পৃথিবীর সব বাবাদের প্রতি ভালোবাসা, সমর্থন, সম্মান এবং প্রশংসার জন্য বাবা দিবস পালনের প্রথম উদ্যোগ নেয়া হয় ১৯০৮ সালে। যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েস্ট ভার্জিনিয়ার ফেয়ারমন্টে প্রথম ৫ জুলাই দিবসটি পালন করা হয়। এরপর ১৯৬৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট লিন্ডন বি জনসন জুনের তৃতীয় রোববারকে আনুষ্ঠানিকভাবে বাবা দিবস হিসেবে নির্ধারণ করেন। ১৯৭২ সালে প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন প্রতি বছর জাতীয়ভাবে বাবা দিবস পালনের রীতি চালু করেন।
বাবার সঙ্গে সন্তানের সম্পর্কটা খুবই গভীর এবং হৃদয়স্পর্শী। ছোটবেলায় বাবার হাত ধরে আমরা জীবনের প্রথম পদক্ষেপ নিই। বাবার কাঁধে চড়ে আমরা প্রথম আকাশের নীল রং দেখি। তার হাত ধরে প্রথম হাঁটা শিখি, তার সাহস আর স্নেহে ভর করে জীবনের প্রতিটি চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে শিখি। বাবার প্রতিটি পরামর্শ, প্রতিটি শাসন, এবং প্রতিটি স্নেহময় স্পর্শ আমাদের জীবনের মূল ভিত্তি গড়ে তোলে।বাবা নিজে কঠোর পরিশ্রম করেন, তার স্বপ্ন ত্যাগ করেন, শুধু সন্তানের জীবনকে সুন্দর ও সুরক্ষিত করতে। তার প্রতিটি ত্যাগ, প্রতিটি হাসি এবং প্রতিটি কঠোর পরিশ্রমের পিছনে লুকিয়ে থাকে আমাদের প্রতি তার অগাধ ভালোবাসা। তিনি কখনোই তার কষ্টের কথা প্রকাশ করেন না, বরং আমাদের জীবনে সবসময় সুখ এবং শান্তি আনতে সচেষ্ট থাকেন।
আজকের এই বিশেষ দিনে, আমরা বাবাকে ধন্যবাদ জানাই। ধন্যবাদ তার অমিত ভালোবাসার জন্য, তার অগাধ ধৈর্যের জন্য এবং তার নিঃস্বার্থ ত্যাগের জন্য। বাবা আমাদের জীবনের সেই আলোকবর্তিকা, যা আমাদের সঠিক পথ দেখায়, আমাদের জীবনকে আলোকিত করে।বাবার প্রতি আমাদের এই শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা প্রতিদিনের, কিন্তু এ বিশেষ দিনে আমরা তাকে বিশেষভাবে সম্মান জানাই। বাবার অবদান কখনোই ভোলার নয়, বরং আমরা প্রতিদিন তাকে নতুনভাবে উপলব্ধি করি।
প্রিয় বাবা, তুমি আমাদের জীবনের সবচেয়ে বড় নায়ক। তোমার প্রতিটি ত্যাগ, প্রতিটি হাসি এবং প্রতিটি কঠোর পরিশ্রমের জন্য আমরা তোমার প্রতি চিরকাল কৃতজ্ঞ থাকব। বাবা দিবসে তোমার প্রতি আমাদের এ ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা যেন প্রতিটি দিনই বৃদ্ধি পায়। আজকের এ দিনে আমরা প্রতিজ্ঞা করি, তোমার দেখানো পথেই চলব, তোমার আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে জীবনের প্রতিটি চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করব। তোমার নামের মর্যাদা রাখব, তোমার স্বপ্নগুলোকে পূরণ করব।
শুভ বাবা দিবস, প্রিয় বাবা। তুমি আমাদের জীবনের সেই অমূল্য রত্ন, যার কোনো বিকল্প নেই। তোমার ভালোবাসা এবং স্নেহের জন্য আমরা চিরকাল কৃতজ্ঞ থাকব।
নয়াশতাব্দী/জিএস
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ