ঢাকা, শনিবার, ১১ জানুয়ারি ২০২৫, ২৭ পৌষ ১৪৩১, ১০ রজব ১৪৪৬

খুন-অপমৃত্যু রোধে পদক্ষেপ

প্রকাশনার সময়: ১১ জুন ২০২৪, ০৯:১৩

বাঙালি জাতির পিতা, বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যখন দেশ চলছে, তখন স্বাধীনতার ৫৪ বছর পর এসে সকাল থেকে গভীর রাত অবধি দুর্নীতির চাকা চালাচ্ছেন বেনজীর আহমেদের মতো ক্ষমতাবাজদের একটি বড় অংশ। বাড়ছে দ্রব্যমূল্য হু হু করে। রাজনীতিতে চলছে আমলাদের হস্তক্ষেপ।

এমনই একটা পরিস্থিতিতে রাজধানীতে ডিপ্লোমেটিক জোনে অবস্থিত ফিলিস্তিন দূতাবাসের সামনে পুলিশ কনস্টেবল কাউসার আলী দায়িত্বরত অপর পুলিশ কনস্টেবল মনিরুল ইসলামকে এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়ে হত্যা করে। হত্যার পর নিহত মনিরের লাশ সড়কে পড়েছিল বেশ কিছুক্ষণ।

কাউসারকে আটক করে পুলিশী হেফাজতে নেয়া হয়েছে। সহকর্মীদের বরাত দিয়ে এক পুলিশ কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, কাউসার পাঁচ-ছয় দিন থেকে খুব চুপচাপ ছিলেন। ঘটনার পর থমথমে হয়ে যায় এলাকাটি। আতঙ্ক ছড়িয়ে পরে রাষ্ট্রদূত ও তাদের পরিবারের মধ্যে। অবশ্য ঘটনার অনেক পরে রাত আড়াইটায় পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। এ সময় তিনি বলেন, রাত ১১টা ৪৫ মিনিটের দিকে ফিলিস্তিন দূতাবাসের সামনে আমাদের দু’জন কনস্টেবল ডিউটিরত ছিল। এদের মধ্যে কনস্টেবল কাউসার আলীর গুলিতে কনস্টেবল মনিরুল ইসলাম ঘটনাস্থলে মারা যান। এ ঘটনায় জাপান দূতাবাসের গাড়িচালক সাজ্জাদ হোসেন গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন। তিনি এখন ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। সাজ্জাদ হোসেনের শরীরে ৩ রাউন্ড গুলি লেগেছে। আক্রমণকারী কনস্টেবলকে থানায় নেয়া হয়েছে এবং তাকে নিরস্ত্র করা হয়েছে। আমরা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছি।

মনিরুল ইসলামের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে আমরা কিছু গুলির খোসা এবং ২০ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করেছি। এমন নির্মমতার কারণ কী? এমন প্রশ্ন নিশ্চয়ই অনেকের মধ্যে তৈরী হয়েছে। তাদের প্রশ্নের উত্তর আমি দেব, কিন্তু তার আগে জানাতে চাই আরেকটি বিষয়, আর তা হলো- ডিএমপির ডিপ্লোমেটিক সিকিউরিটি জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার আরিফুল ইসলাম সরকার সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘আমাদের প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে কাউসার আলী মানসিকভাবে বিপর্যস্ত অবস্থায় ছিলেন। প্রাথমিকভাবে আমরা হামলাকারী পুলিশ সদস্যের ব্যাপারে যতটুকু জেনেছি তিনি পাঁচ-ছয় দিন থেকে খুব চুপচাপ ছিলেন। তার অন্যান্য সহকর্মীদের সঙ্গেও কথা বলছিলেন না। তার ব্যাচমেটদের সঙ্গে কথা বলে এসব জেনেছি।’

রাজধানী ঢাকাতে যখন নির্মমভাবে একজন পুলিশ সদস্য, আরেক পুলিশ সদস্যের গুলিতে মৃত্যুবরণ করেছে, তখন নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ সদর ইউনিয়নের মুশা বালাপাড়া গ্রামে জমি নিয়ে বিরোধে প্রতিপক্ষের হামলায় আহত যুবক প্রাণকৃষ্ণ রায়ের মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার রাতে ওই যুবক ও বৃহস্পতিবার রাতে তার বৃদ্ধ মা সুফলা রানী রংপুর মেডিকেলে নিহত হন। নিহত প্রাণকৃষ্ণ ওই গ্রামের মৃত রজনীকান্তের ছেলে। ওই গ্রামের সুধীরের ছেলে হরিশচন্দ্রের সঙ্গে এক একর জমি নিয়ে বড়ডুমরিয়া কামারপাড়া গ্রামের শ্রীর ছেলে সুরজিত ওরফে কাল্টুর বিরোধ চলছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে সেই জমির পরিমাপ ও ট্রাক্টর দিয়ে পাট ক্ষেত বিনষ্টের সময় বাধা দেয়ায় কাল্টু ও তার লোকজন হরিশচন্দ্রের লোকদের ওপর হামলা করেন। এতে গুরুতর আহত পাঁচ জনকে রংপুর মেডিকেলে ভর্তি করলে চিকিৎসাধীন ওই বৃদ্ধার মৃত্যু হয়। পর দিন রাতে তার ছেলের মৃত্যু হয়। এমন দু’টি ঘটনার পর আমরা আরেকটি অপমৃত্যুর ঘটনা দেখব, সেখানে নুসরাত সামিয়া (৫) কথা বলছে না। তার স্কুলপড়ুয়া দুই ভাই কাঁদছে অঝোরে। কিন্তু নুসরাত স্তব্ধ। অন্য দিনের মতোই স্কুল থেকে মায়ের সঙ্গে রিকশায় ফিরছিল সে।

মা আর ফেরেননি তার সঙ্গে। ফিরেছেন লাশবাহী গাড়িতে। নুসরাতকে স্তব্ধ করেছে এক ভয়াবহ স্মৃতি। রিকশা থেকে বাসের ধাক্কায় ছিটকে পড়ল মা আর সে। মা পড়ে গেলেন বাসের চাকার নিচে। অনেক রক্ত। চিৎকার। ভিড়। তারপর ফুটপাতে শুইয়ে রাখা হলো মাকে। রক্তভেজা। নীরব। সম্প্রতি রাজধানীর কমলাপুরে ঘাতক বাস কেড়ে নিল নুসরাত সামিয়া নামের শিশুর চোখের সামনে তার মা রোকসানা বেগম লায়লাকে (৩৭)। শুধু লায়লাই নয়, প্রতিদিন এমন অনেক অপমৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। এ যেন অপমৃত্যুর দীর্ঘ মিছিল। এক একটি জীবনের সঙ্গে একেকটি স্বপ্ন লুকিয়ে থাকে। একটি মৃত্যু সব কিছু শেষ করে দেয়। অনেকে জীবনের মূল্য না বুঝে নিজেকে নিঃশেষ করে দেয়। আবার অনেকে বেঁচে থাকার আপ্রাণ চেষ্টা করলেও জীবন তার কাছ থেকে ফাঁকি দিয়ে চলে যায়। বর্তমানে নিজ ঘর, ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান, রাস্তা কোথাও মানুষের জীবনের নিরাপত্তা নেই। প্রতিদিনই মানুষ কোনো না কোনো দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। অনেকে আবার বিভিন্ন কারণে জীবনের প্রতি অনীহা এসে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। এসব মৃত্যুই অপমৃত্যু হিসেবে তালিকাভুক্ত হয়। বর্তমানে সারা দেশে এমন অপমৃত্যুর সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বেড়েই চলেছে।

অপমৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি এমন একটি দিনও নেই। প্রতিদিনই অপমৃত্যুর শিকার হচ্ছে সব বয়সী মানুষ। সড়ক দুর্ঘটনায় প্রতিদিনই রক্ত ঝরছে নারী-পুরুষ, শিশু-বৃদ্ধের। ট্রেনে কাটা পড়েও মানুষের অপমৃত্যু ঘটছে। এ ছাড়া বিষপানে, গলায় ফাঁস লাগিয়ে, চলন্ত ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে, ঘুমের বড়ি খেয়ে, শরীরে আগুন দিয়ে এবং নদীতে ঝাঁপ দিয়ে অপমৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। আবার কোনো কোনো ঘটনায় খুন করে আত্মহত্যা কিংবা দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যু হয়েছে বলে ঘাতক চক্র চালিয়ে দিচ্ছে। এ ধরনের খুনের ঘটনায় অধিকাংশ ক্ষেত্রে রহস্য উদঘাটন হয় না। দেশে অপমৃত্যুর ঘটনা এভাবে বেড়ে যাওয়ায় এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে পরিবার, সমাজ এমনকি রাষ্ট্রে। দেশে প্রতিদিন ১৫ ধরনের অপমৃত্যু বা অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে এর সঠিক কোনো পরিসংখ্যান নেই। বেসরকারী সংস্থার কাছেও তথ্য নেই। তবে পরিসংখ্যানে উঠে আসা তথ্য বেশ উদ্বেগজনক। কোনো কোনো অপমৃত্যুর ঘটনায় মামলা বা জিডি হলেও জোরালো তদন্ত হয় না। পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) কর্মকর্তারা বলছেন, অপমৃত্যুর ঘটনাকে কোনোভাবে গুরুত্বহীন বা কম গুরুত্বপূর্ণ ভাবা যাবে না।

এতে অপরাধী পার পেয়ে যেতে পারে। একজন নিবেদিত সংবাদকর্মী হিসেবে বলতে পারি যে, প্রতিটি অপমৃত্যু ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে এর নেপথ্য কারণ নিশ্চিত হওয়া প্রয়োজন। পাশাপাশি সতর্ক হলে কিছু অপমৃত্যু এড়ানো সম্ভব। এসব বিষয়ে মানুষকে সচেতন করতে হবে। গলায় ফাঁস দিয়ে কিংবা বিষপানে আত্মহত্যা, পানিতে ডুবে মৃত্যু, মাটি বা পাহাড়চাপা পড়ে মৃত্যু, বজ্রপাতে মৃত্যু, বন্যপ্রাণী বা পশুর আঘাতে মৃত্যু, আগুনে পুড়ে মৃত্যু, মেশিনারিজ চালাতে গিয়ে দুর্ঘটনায় মৃত্যু, ট্রেনে কাটা পড়ে মৃত্যু, বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিটে মৃত্যু, উঁচু গাছ বা ছাদ থেকে পড়ে মৃত্যু অথবা সন্দেহজনক মৃত্যু হলে থানায় অপমৃত্যু হিসেবে লিপিবদ্ধ করা হয়। অভিযোগ, এক্ষেত্রে কোনো তদন্ত হয় না। এসব অপমৃত্যুর নেপথ্য কারণও জানা যায় না। এ সুযোগে পরিকল্পিতভাবে কাউকে মেরে তা অপমৃত্যু হিসেবে চালিয়ে পার পেয়ে যায় অপরাধীরা। যতদূর জেনেছি- ২০০৪ থেকে ২০২৪ সালের ৮ জুন পর্যন্ত দেশে ১ লাখ ৮৭ হাজার ৭৫৮ জনের অপমৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ১ লাখ ৫৪ হাজার ৫২০ জন আত্মহত্যা করেছে। গণমাধ্যমসহ সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দেশে প্রতি বছর ১০ থেকে ১১ হাজার নারী-পুরুষ ও শিশু আত্মহত্যা করে।

এর মধ্যে নারীর সংখ্যা বেশী। এ ছাড়া অগ্নিকাণ্ড, বিদ্যুৎস্পৃষ্টসহ বিভিন্ন কারণে বছরে ১০ লাখের বেশী লোক অগ্নিদগ্ধ হয়। যাদের মধ্যে দুই হাজারের বেশী লোক মারা যায়। পানিতে ডুবে মৃত্যুর ঘটনাও উদ্বেগজনক। এতে প্রায় ১৪ হাজার শিশু মারা যায়। এদের বয়স এক থেকে ১৭ বছর। এ ছাড়া সাপের কামড়ে বছরে ছয় হাজারের বেশী লোক মারা যায়। আর প্রতি বছর বজ্রপাতে দুই থেকে তিন শতাধিক মানুষ মারা যায়। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের একাধিক থানার ওসি গণমাধ্যমকে বলেছেন, মৃত্যু বা খুনের প্রকৃত কারণ আপাততভাবে নির্ণয় করা সম্ভব না হলে অপমৃত্যুর মামলা করা হয়। ফৌজদারী কার্যবিধি আইনের ১৭৪ ধারা এবং পিআরবি নিয়ম ২৯৯ অনুযায়ী আত্মহত্যা কিংবা সন্দেহজনক মৃত্যুর ক্ষেত্রে ফৌজদারী কার্যবিধি আইনের ১৭৪ ধারায় অপমৃত্যুর (ইউডি) মামলা হয়। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর পুলিশ মামলাটি তদন্ত করে আদালতে পাঠায়।

আদালত সব কিছু দেখে যথাযথ নির্দেশ দেন। অপমৃত্যুর মামলা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার কোনো সুযোগ নেই। অপমৃত্যু মামলাকে নিয়মিত মামলার মতো গুরুত্বসহ তদন্ত করা হয়। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে পরিকল্পিত হত্যার প্রমাণ পাওয়া গেলে মামলা সচল করা হয়। নেতিবাচক কিছু না পেলে মামলাটি নিষ্ক্রিয় করা হয়। অপমৃত্যু মামলা নেয়া পর্যন্তই সীমাবদ্ধ থাকে। এরপর আর কারো কোনো গরজ থাকে না। জানা গেছে, বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে প্রাথমিকভাবে করা অপমৃত্যু মামলা ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে পুলিশ। এতে অনেক সময় প্রকৃত ঘটনা আড়াল হয়ে যায়। তবে এমন ধরনের ১০টি ঘটনার পুনঃতদন্ত করেছে পিবিআই। এগুলো প্রথমে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেয়া হলেও পিবিআইর তদন্তে হত্যার প্রমাণ বেরিয়ে আসে। ঘাতকদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হয়। আর এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে অপমৃত্যুর ঘটনাকে গুরুত্বহীন বা কম গুরুত্বপূর্ণ ভাবা হয়। এতে অপরাধী পার পেয়ে যেতে থাকে। ঘাতকদের সংখ্যাও বাড়তে থাকে প্রতিনিয়ত।

আমি মনে করি হত্যাকাণ্ডের ঘটনাগুলো দ্রুত তদন্ত শেষ করে বিচার শেষ করা উচিৎ। তা না হলে বাড়বে খুনী, বাড়বে খুন, বাড়বে অপমৃত্যু। আজ যদি সাংবাদিক সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের বিচার হতো, তাহলে নতুন করে আর সাংবাদিক ফরহাদ খাঁ দম্পতিকে নির্মম মৃত্যুর মুখোমুখি হতে হতো না। অভাব-দারিদ্র্য-দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি- বেকারত্বসহ বিভিন্ন কারণে আত্মহত্যা যেমন বাড়ছে, তেমনই বাড়ছে খুন-গুম। আমি মনে করি- প্রতিটি অপমৃত্যুর ঘটনারও যথাযথ তদন্ত করা উচিৎ। এ ছাড়া কোনো অপমৃত্যুর ঘটনা রহস্যজনক মনে হলে তা ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনের জন্য অপেক্ষা না করে তদন্ত শুরু করা উচিৎ। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন যে সময়ের মধ্যে আসবে সেই সময়ে মামলার গুরুত্ব অনেকটাই কমে যাবে, নষ্ট হয়ে যাবে আলামত। শুধু ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনের দিকে না তাকিয়ে অপমৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত চালিয়ে যাওয়া উচিৎ, বিচারও দৃষ্টান্তমূলক করা উচিৎ।

নয়াশতাব্দী/জিএস

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ