দ্রব্যমূল্যের ওপর যাতে কোনো চাপ না পড়ে সে জন্য বাজেটের আকার কমিয়ে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। তিনি বলেছেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সরকারের পক্ষ থেকে যে সব উদ্যোগ নেয়া হয়েছে, তার ফল পেতে আরো ছয় মাস অপেক্ষা করতে হবে। চলতি বছরের শেষের দিকে মূল্যস্ফীতি কমতে শুরু করবে। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে অর্থ মন্ত্রণালয় আয়োজিত বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
সংবাদ সম্মেলনে অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে আরো উপস্থিত ছিলেন, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন, পরিকল্পনামন্ত্রী মেজর জেনারেল (অব.) আব্দুস সালাম, গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী, প্রধানমন্ত্রীর অর্থবিষয়ক উপদেষ্টা মসিউর রহমান, কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুস শহীদ, শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু, অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান, মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন, বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম।
গত বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে নিজের প্রথম বাজেট পেশ করা অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেন, আপনারা নিশ্চয়ই লক্ষ্য করেছেন বাজেটের আকার আমরা কমিয়ে রেখেছি। যাতে করে মূল্যস্ফীতির ওপর কোনো চাপ না পড়ে। ২০২৫ সালের পর সরকারি চাকরিতে নিয়োগ পাওয়া কর্মকর্তাদের সর্বজনীন পেনশন স্কিমে যুক্ত হতে হবে বলেও জানান অর্থমন্ত্রী। ব্যাংকে তারল্য সংকটের সময় বাজেটে ব্যাংক থেকে ঋণ নেয়ার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে, এতে ব্যাংকে তারল্য সংকট হবে কিনা—এমন প্রশ্নের উত্তরে অর্থমন্ত্রী বলেন, ব্যাংক থেকে ঋণ নেয়া এটা সব বাজেটেই সব অর্থমন্ত্রী করে থাকেন। সব সরকার করে থাকে। উন্নত দেশগুলো আরও অনেক বেশি নিয়ে থাকে, আমরা তো মাত্র ৫ শতাংশের মধ্যে এটা ধরে রেখেছি। কাজেই এটা এত গুরুত্বপূর্ণ কিছু নয়। এটা নিয়ে চিন্তার কোনো কারণ নেই। মূল্যস্ফীতির এ সময়ে বাজেটে করমুক্ত আয়সীমা একই রেখেছেন—এ বিষয়ে ব্যাখ্যা চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ে আমি বাজেট বক্তব্যে বলেছি। তিনি বলেন, আমরা আশা করছি, এ বছরের শেষের দিকে মূল্যস্ফীতি কমে আসবে। দেখা যাক চেষ্টা তো করতে হবে।
এবার আপনারা লক্ষ্য করেছেন যে বাজেটের আকার আমরা কমিয়ে রেখেছি। যাতে দ্রব্যমূল্যের ওপর কোনো চাপ না পড়ে। অর্থমন্ত্রী বলেন, বৈশ্বিক কারণে বাড়তে থাকা মূল্যস্ফীতি কমাতে আমরা নানা ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছিলাম। তার মধ্যে অন্যতম ছিল অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে সংকোচনমূলক নীতিকৌশল। এর ফলে আমাদের মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশের মধ্যে ছিল। এটাকে কমাতে আরও কিছু দিন সংকোচনমূলক নীতিকৌশল চলমান থাকবে।
যেহেতু সংকোচনমূলক নীতিকৌশল আরও কিছু দিন চলমান থাকবে, সেহেতু মূল্যস্ফীতি কমে আসবে। বাজেটে আমরা (মূল্যস্ফীতি) ৬ দশমিক ৫ শতাংশে নামিয়ে আনার যে লক্ষ্য ধরেছি, সেটা সম্ভব হবে। একই সঙ্গে সংকোচনমূলক নীতির কারণে জিডিপি প্রবৃদ্ধি যাতে বাধাগ্রস্ত না হয়, সেদিকে আমরা লক্ষ্য রাখছি।
অর্থমন্ত্রী বলেন, বাজেটে আমরা মূল্যস্ফীতি কমানোকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছি। আর এ জন্য যা কিছু করা দরকার আমরা করব। আর এ কারণে মূল্যস্ফীতি কমে আসবে—এটা আমি দৃঢ়ভাবে বলতে চাই। সংকোচনমূলক নীতিকৌশলের পরও বিদায়ী ২০২৩-২৪ অর্থবছরে আমাদের ৫ দশমিক ৮২ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে। সংকোচনমূলক এই নীতিকৌশল সত্ত্বেও আগামী অর্থবছরে ৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে সক্ষম হব।
অর্থমন্ত্রী বলেন, মূল্যস্ফীতি এখনো ৯ শতাংশের ঘরে রয়েছে। বৈশ্বিক কারণে মুদ্রার ওপর চাপ বাড়ায় টাকার মান কমেছে। মূল্যস্ফীতি বাড়ার জন্য এটা কারণ। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে যে পদক্ষেপ নেয়া দরকার নিয়েছি। আরও যেসব পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন নেব। তিনি বলেন, আমাদের কৃষি, শিল্প এবং সেবাখাত যেন তাদের স্বাভাবিক কার্যক্রম বজায় রাখতে পারে, সে জন্য প্রয়োজনীয় সব সহায়তা অব্যাহত রাখা হয়েছে। এর ফলে সংকোচনমূলক নীতি অনুসরণ সত্ত্বেও চলতি অর্থবছরে ৫.৮২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে। আগামী অর্থবছরে আমরা ৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জনে সক্ষম হব।
সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান বলেছেন, কোনো ব্যাংক বন্ধ করে সংস্কার করা হবে না। প্রতিটা ব্যাংক চালু রেখেই ব্যাংকগুলো সংস্কার করা হবে। ব্যাংকে মানুষ টাকা জমা রাখছে। ব্যাংক সে জন্য সুদ দেয়।
ব্যাংক যদি সেই টাকাটা কোথাও বিনিয়োগ করতে না পারে, তাহলে ব্যাংক তো বন্ধ হবে। ব্যাংক বন্ধ করা কোনো সরকারের পক্ষে গ্রহণযোগ্য নয়। ব্যাংকের পারফরমেন্স ও নন-পারফরমেন্স লোনের অংকটা এক দিনের নয় এবং এগুলো বিভিন্ন কারণে হয়ে থাকে। মূলত অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সচল রাখা এবং ব্যাংকের সুস্থ পরিচালনা করা। এই দুটোর ভারসাম্য রক্ষা করা অত্যন্ত জরুরি। তিনি উল্লেখ করেন, সরকার এ বিষয়ে সচেতন।
পদ্মা সেতুতে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়ন বন্ধের বিষয়ে ড. মসিউর রহমান বলেন, বিশ্বব্যাংকের কল্পিত দুষ্ট ব্যক্তি আমি ছিলাম। প্রধানমন্ত্রী পাশে না থাকলে এখানে কথা বলতে পারতাম না। তবে এটা কানাডার আদালতে মিথ্যা প্রমাণ হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নিজের টাকায় পদ্মা সেতু বাস্তবায়ন করে বিশ্বকে দেখিয়ে দিয়েছেন।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ব্যাংক থেকে ঋণ নেয়া নৈমিত্তিক কাজ। ব্যাংকে টাকা রাখলে তো সুদ বাড়ে। ব্যাংক এসব সুদ কীভাবে দেবে? এ জন্য ব্যাংক টাকা বিনিয়োগ করছে। এই পদ্ধতি বিশ্বব্যাপী চলমান। ব্যাংকের ব্যবসা বন্ধ না করে চালু রাখতে হবে। ঋণ খেলাপি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ঋণ খেলাপি এক দিনের নয়, দীর্ঘদিনের। সরকারের অন্যতম টার্গেট খেলাপি ঋণ কমানো। এমপিদের বিনাশুল্কে গাড়ি কেন দেয়া হচ্ছে—এ প্রসঙ্গে মসিউর রহমান বলেন, এটা আমরা নই, এরশাদ সাহেব চালু করেছিলেন। একটা বিষয় চালু হলে সেটা বন্ধ করা কঠিন।
বেনজীর আহমেদের বিষয়ে আরেক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রীর অর্থ উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান বলেন, সাবেক কর্মকর্তা নিয়ে আপনারা প্রশ্ন করেছেন, উনার বিচার হবে না এটা কেউ বলেননি। দুদক তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে। তার বিরুদ্ধে তথ্য সংগ্রহ না করে তাকে জেল বা ফাঁসি দেব বিষয়টি এমন নয়, কারণ উনি তো এ দেশের মানুষ। বেনজীর বিদেশে আছেন, দুদকের কাছে সময় চেয়েছেন।
এনবিআরের জনবল বৃদ্ধির কোনো উদ্যোগ নেয়া হবে কিনা—এমন প্রশ্নের উত্তরে অর্থসচিব ড. মো. খায়েরুজ্জামান মজুমদার বলেন, জনবল নিয়োগের বিষয়ে এনবিআর থেকে চিঠি এসেছিল। আমরা জনবল বৃদ্ধি করেছি। আশা করছি সামনে আরও বৃদ্ধি করা হবে।
তবে ঘাটতি মেটাতে ব্যাংক থেকে ঋণ নেয়া হলেও ব্যাংক খাতে এর প্রভাব পড়বে না বলে জানিয়েছেন অর্থসচিব ড. মো. খায়েরুজ্জামান মজুমদার। তিনি বলেছেন, ব্যাংকের তারল্যের সঙ্গে সরকারের ঋণ নেয়ার লক্ষ্যের কোনো সম্পর্ক নেই।
অর্থসচিব বলেন, আমরা এনবিআরের সক্ষমতা বাড়াচ্ছি। রাজস্ব বাড়লে ব্যাংক ঋণের ওপরে চাপ পড়বে না। তাছাড়া এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন-পরবর্তী বৈদেশিক ঋণের চাপ কমাতে আমরা অভ্যন্তরীণ উৎসের দিকে আছি। আবার সঞ্চয়পত্রে সুদহার বেশি হওয়ায় সেখান থেকেও আমরা কম অর্থ নেয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছি।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম বলেন, সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য অটোমেশনের বিষয়টি শুরু হয়েছে। অর্থবিভাগ থেকে আমরা জনবল নিয়োগের বিষয়ে অনুমোদন পেয়েছি।
পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদের অপ্রদর্শিত অর্থ সাদা করা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এই টাকা কেইসে (মামলায়) পড়ে গেছে, এটা কীভাবে সাদা হবে। এখন ফৌজদারি মামলা চলছে।
বাজেটে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, কালো টাকা যারা তৈরি করেন তারা এটা বাইরে নিয়ে ভোগবিলাস করেন। এই অপ্রদর্শিত আয় দেশে রাখার জন্য বাজেটে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, আমাদের কাছে তথ্য ছিল যে কয়েকজন ব্যবসায়ী অডিট সংক্রান্ত সমস্যার কারণে তাদের সব সম্পদ প্রদর্শন করতে পারেননি। সে জন্য আমরা এ প্রস্তাব দিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, কালো টাকা যারা তৈরি করেন তারা ইকোনমিকে ব্যবহার করার জন্য তৈরি করেন না। কালো টাকা দেশের বাইরে চলে যায়। কালো টাকাটা ভোগ বিলাসের জন্য তৈরি করা হয়। জমি ক্রয়-বিক্রয় করার সময় কিছু টাকা কালো হয়ে যাচ্ছে। এ কারণে যারা রিটার্নে যেসব সম্পদ দেখাতে পারেননি, সেই সম্পদ দেখানোর জন্য এ সুযোগ দেয়া হয়েছে। যা অনেক দেশেও দেয়া হয়ে থাকে।
এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, আপনারা সব সময় মনে করছেন যে, শুধু বুঝি কর ছাড়ই ক্যাপিটাল মার্কেট গ্রো (ভালো) করার জন্য একটি ভালো জায়গা। ক্যাপিটাল মার্কেটে কর ছাড়ের এই চর্চা দীর্ঘ সময় ছিল। এখন যেটি হয়েছে, আমাকে রেভিনিউ জেনারেট করতে হবে।
কর ছাড়ের যে জায়গাটি রয়েছে, সেটা ধীরে ধীরে আমাদের কমিয়ে আনার প্রচেষ্টার মধ্যে আছে। অনেকেই নিজ খরচে পদ্মা সেতু করার কথা বলেছেন। আমরা আরো পদ্মা সেতু করতে চাই। সেটার জন্য আমাদের রেভিনিউ জেনারেট (রাজস্ব আহরণ) করতে হবে। সেটারই একটি প্রক্রিয়া হলো কর ছাড়ের জায়গাটা কমিয়ে আনা।
তিনি বলেন, এখানে ৫ শতাংশ যে ব্যবধান দেয়া হয়েছে, এর ফলে কর্পোরেট ট্যাক্স ২০ শতাংশ রয়েছে। ২০ শতাংশের নিচে যদি করপোরেট ট্যাক্স করা হয়, তাহলে আমাদের রেভিনিউ জেনারেট করবে না। ১৫ শতাংশ করপোরেট ট্যাক্স করার পর্যায়ে আমাদের দেশ এখনো আসেনি। পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ও অতালিকাভুক্ত এ দুই ধরনের কোম্পানির কর কমিয়ে আনা সম্ভব হচ্ছে না।
এটা করা হলে এনবিআরের রেভিনিউ কালেকশনের (রাজস্ব আদায়) ওপর বিরাট হুমকি হয়ে যাবে। সমুদ্র অর্থনীতি বিষয়ে বাজেটে কোনো উদ্যোগ আছে কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে সুনীল অর্থনীতির গবেষণা ও অন্যান্য বিষয়ের জন্য ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
চড়া মূল্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে এনে মূল্যস্ফীতি সাড়ে ৩ শতাংশ পয়েন্ট কমানোর যে লক্ষ্য অর্থমন্ত্রী বাজেট বক্তৃতায় রেখেছেন, তার পক্ষে ব্যাখ্যা দিয়েছেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু।
তিনি বলেন, বাজেটে নতুন বছরে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণকে একটা চ্যালেঞ্জ হিসেবে নেয়া হয়েছে। ধান, চাল, গম, ছোলা, মসুর ডালসহ অন্যান্য কিছু নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যে বিদ্যমান ২ শতাংশ কর কমিয়ে ১ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়েছে। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষাণ অধিদপ্তরের মাধ্যমে বাজার মনিটরিং করি। বাজার মনিটরিং একটা চলমান প্রক্রিয়া। বাজেটের পর বাজার অস্থির হয়ে গেছে এমন কোনো তথ্য নেই। জিনিসপত্রের দাম কমাতে সরকারের উদ্যোগ তুলে ধরে তিনি বলেন, আমরা এখন টিসিবির মাধ্যমে এক কোটি পরিবারকে ভর্তুকিতে খাদ্য সহায়তা দিচ্ছি। আগামীতে এর আকার বাড়ানোর জন্য প্রস্তাব তৈরি করছি। টিসিবির স্থায়ী ডিলারদের দোকান করার চেষ্টা করছি।
ভর্তুকি মূল্যের সঙ্গে সঙ্গে ন্যায্যমূল্যের কিছু পণ্য সরবরাহ করার চেষ্টাও করছি। বিশেষ করে বলতে গেলে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বৃদ্ধির মতো কোনো ঘোষণা এ বাজেটে নেই। উল্টো কমার মতো ঘোষণা আছে। কয়েকটি পণ্যের উৎসে কর ২ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১ শতাংশ করা হয়েছে। গুঁড়োদুধের আমদানিতে কর যৌক্তিক করা হয়েছে। সময়ে সময়ে পণ্যের কর কমিয়ে আনা হবে। তিনি বলেন, ১০টি পণ্যের ওপর আরোপিত ন্যূনতম ভ্যালু প্রত্যাহার করা হয়েছে। ১০টি পণ্যের শুল্ক হ্রাস করা হয়েছে। ১৯টি পণ্যে সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহার করা হয়েছে। ১৭২টি পণ্যে সম্পূরক শুল্ক হ্রাস করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে এসব শুল্ক হ্রাস করা হয়েছে। অন্যান্য শুল্ক যেগুলো আছে, সেগুলো এনবিআর যথাযথ সময়ে যৌক্তিক পর্যায়ে নিয়ে আসবে।
মূল্যস্ফীতির জন্য ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ ও বহির্বিশ্বে জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধিকে ‘কারণ’ হিসেবে সামনে এনে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমাদের বাজেটেও বলা হয়েছে। আমরাও বলছি যে, মূল্যস্ফীতি, বিশেষ করে ফুড ইনফ্লেশনটা তুলনামূলক বেশি। স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত চালের দাম বাড়ল কেন? এমন প্রশ্নও পাওয়া যায়। যে চাল বিক্রি করে সে কিন্তু চড়া দামের সয়াবিন তেল কেনার চিন্তা করে। তেলের দাম যখন বেড়ে যায়, চাল বিক্রেতা তখন চিন্তা করে তার চালটা সেভাবেই বিক্রি করতে হবে। এভাবে আন্তর্জাতিক পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি দেশীয় পণ্যের দামও বাড়িয়ে দেয়।
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ