‘তামাক কোম্পানির হস্তক্ষেপ প্রতিহত করি, শিশুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করি’ এ প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করে বিশ্বের অন্যান্য দেশের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আজ শুক্রবার (৩১ মে) দেশেও পালিত হবে বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস। প্রতি বছর ৩১ মে দিবসটি পালন করা হয়। বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।
রাষ্ট্রপতি তাঁর বাণীতে বলেন, ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে তামাক নির্মূলের ঘোষণা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সরকারের পাশাপাশি নাগরিক সমাজ, পেশাজীবী সংগঠন, বেসরকারি সংস্থা ও গণমাধ্যমকে সমন্বিত প্রয়াস চালাতে হবে। তিনি বলেন, সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা একটি তামাকমুক্ত সমাজ গড়ে তুলতে সক্ষম হব।
প্রধানমন্ত্রী তাঁর বাণীতে বলেন, ধূমপান ও তামাকের ভয়াল নেশা প্রাণঘাতী। ধূমপান মাদকসেবনেরও প্রবেশপথ। তামাক ও মাদকের কুফল থেকে শিশু-কিশোরদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে অভিভাবক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে আরও দায়িত্বসচেতন হতে হবে।
তিনি বলেন, ‘দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে সম্পূর্ণভাবে তামাকমুক্ত করা গেলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম তামাক আসক্তি থেকে দূরে থাকবে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ তামাক নিয়ন্ত্রণের এই কৌশল অনুসরণ করে উল্লেখযোগ্য সাফল্য পেয়েছে।’
বর্তমানে পৃথিবীর ১২৫টিরও বেশি দেশের প্রায় চার মিলিয়ন হেক্টর জমিতে তামাক চাষ হয় এবং শীর্ষ তামাক উৎপাদনকারী দেশগুলোর অধিকাংশই নিম্ন ও মধ্যম আয়ভুক্ত দেশ। অন্যদিকে, পৃথিবীব্যাপী উৎকৃষ্ট মানের জমি ক্রমবর্ধমানহারে তামাকচাষে ব্যবহৃত হওয়ায় খাদ্য ফসলের জমি ক্রমশ হ্রাস পাচ্ছে। এসব জমি খাদ্যফসল ফলানোর কাজে ব্যবহার করা গেলে লাখ লাখ মানুষের খাদ্য চাহিদা পূরণের পাশাপাশি খাদ্য নিরাপত্তার সংকট মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা সম্ভব।
এদিকে দিবসটি উপলক্ষে বৃহস্পতিবার তামাকবিরোধী সংগঠনগুলো বিভিন্ন ধরনের দাবি জানিয়েছে। গতকাল ঢাকা আহছানিয়া মিশনের এক সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়, তামাক কোম্পানির কূটকৌশল রোধে, তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন যুগোপযোগী করতে হবে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) সদস্য রাষ্ট্রগুলো ১৯৮৭ সালে বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস চালু করে। তারপর থেকে এর সদস্য রাষ্ট্রগুলো দিবসটি পালন করে আসছে। দিবসটি নিয়ে বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো। তাদের মধ্যে গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক ক্যানসার হাসপাতাল প্রকল্প ও গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালের উদ্যোগে গতকাল ধানমন্ডি ৬ নম্বর রোডে অবস্থিত গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালের সামনে সংক্ষিপ্ত আলোচনা ও প্রতীকী শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়।
গবেষণা ও অ্যাডভোকেসি প্রতিষ্ঠান প্রজ্ঞা’র (প্রগতির জন্য জ্ঞান) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে বর্তমান মোট জনগোষ্ঠীর ৪৮ শতাংশই তরুণ-তরুণী এবং এরাই তামাক কোম্পানির মূল টার্গেট। তামাক আইন শক্তিশালীকরণের মাধ্যমে তামাক কোম্পানির ছোবল থেকে এই প্রজন্মকে সুরক্ষা প্রদান করতে হবে।
নয়াশতাব্দী/জিএস
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ