ঢাকা, রোববার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১, ৪ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

এনএসআই কর্মকর্তার স্ত্রীর অ্যাকাউন্টে ১২৬ কোটি টাকা লেনদেন!

প্রকাশনার সময়: ২৯ মে ২০২৪, ১৫:০৬ | আপডেট: ২৯ মে ২০২৪, ১৫:০৯

জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দার (এনএসআই) সহকারী পরিচালক মো. আকরাম হোসেনের স্ত্রী সুরাইয়া পারভীনের অ্যাকাউন্টে ১২৬ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। এ নিয়ে তাদের দুজনের বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

মঙ্গলবার (২৬ মে) উপ-পরিচালক মো. মশিউর রহমান বাদী হয়ে এ মামলা করেন।

এজাহারে উল্লেখ করা হয়, সুরাইয়া পারভীনের ২৫টি ব্যাংক হিসাবে ২০০৯ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত সব মিলিয়ে ১২৬ কোটি ৩৩ লাখ ১৫ হাজার টাকা জমা হয়। আর উত্তোলন করা হয় ১২৫ কোটি ২৫ লাখ ৭৪ হাজার টাকা; যা অস্বাভাবিক। হিসাবধারী সুরাইয়া পারভীন হলেও লেনদেন করেছেন আকরাম হোসেন নিজেই।

এনএসআইয়ের মতো একটি রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা সংস্থায় চাকরি করে স্ত্রী সুরাইয়া পারভীনের নামে ব্যবসা দেখিয়ে নিজেই ব্যবসার সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন আকরাম হোসেন। ব্যবসা স্ত্রীর নামে হলেও ফ্যাক্টরি এবং সম্পদ তার নিজ নামে। তবে, ব্যবসা সংক্রান্ত এনএসআই কর্তৃপক্ষের কোনো অনুমোদনপত্র নেই। বিভিন্ন ব্যাংক হিসাব বিবরণী পর্যালোচনায় দেখা গেছে, হিসাবধারী স্ত্রী সুরাইয়া পারভীন হলেও লেনদেন করছেনে আকরাম নিজে।

সুরাইয়া পারভীনের নামে থাকা ‘স্টার ইলেকট্টো ওয়ার্ল্ড’ ও ‘লিরা ট্যুর্স অ্যান্ড ট্রাভেলস’ প্রকৃতপক্ষে আকরাম হোসেনের বেনামি প্রতিষ্ঠান। সুরাইয়া পারভীন ২০০৯-২০১০ করর্বষে ৮ লাখ টাকা বিনিয়োগ দেখিয়ে ২ লাখ ১৬ হাজার টাকা ব্যবসা থেকে আয় দেখান। যদিও ওই সময় তার কোনো আয়ের উৎস ছিল না। প্রকৃতপক্ষে আকরাম হোসেন স্ত্রীকে ব্যবসায়ী হিসেবে দেখিয়ে তার অবৈধ সম্পদকে বৈধ করার প্রয়াস চালিয়েছেন।

দুদকের দুই মামলায় একটিতে মো. আকরাম হোসেন ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে ১ কোটি ৬১ লাখ ৭৯ হাজার ৫২০ টাকার সম্পদ অর্জনের তথ্য গোপন এবং মিথ্যা ও ভিত্তিহীন ঘোষণা দিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে যোগসাজশে ৬ কোটি ৭০ লাখ ৩৯ হাজার ৩৬২ টাকার স্থাবর এবং অস্থাবর সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়। অন্য মামলায় মেসার্স স্টার ইলেক্ট্রো ওয়ার্ল্ডের মালিক সুরাইয়া পারভীনের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ ২০ লাখ ৯৩ হাজার ৫৫১ টাকার সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়।

মো. আকরাম হোসেনের বাড়ি নাটোরের নওপাড়ায়। তিনি ১৯৮৯ সালে নিম্নমান সহকারী হিসেবে এনএসআইয়ে যোগ দেন। আট বছর পর বিভাগীয় প্রার্থী হিসেবে পরীক্ষা দিয়ে মাঠ কর্মকর্তা (জুনিয়ার ফিল্ড অফিসার) হন। এরপর ২০১৬ সালে পদোন্নতি পেয়ে সহকারী পরিচালক হন।

২০২০ সালে আকরাম এবং তার স্ত্রীর সম্পদের বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। দুদকের অনুসন্ধান প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, আকরাম ২০০২ সালে প্রথম নিজ জেলায় ২৪ শতাংশ জমি কেনেন। এরপর বিভিন্ন সময় স্ত্রী সুরাইয়া পারভীন এবং নিজের নামে ঢাকার দক্ষিণখানে আড়াই শতাংশ, সেন্ট মার্টিন দ্বীপে ২০ শতাংশসহ মোট প্রায় ২০৮ শতাংশ জমি কিনেছেন আকরাম। ২০১৪ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে সবচেয়ে বেশি জমি কিনেছেন।

নয়াশতাব্দী/টিএ

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ