ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডবে হাসপাতালে নেই বিদ্যুৎ। পরে মোবাইলে টর্চলাইট জ্বালিয়ে দুই নবজাতক প্রসব করান ডা. সুমাইয়া বিনতে ফরহাদ।
সোমবার (২৭ মে) রাতে নোয়াখালীর হাতিয়ায় পৃথকভাবে এই দুই নবজাতককে প্রসব করানো হয়।
জানা যায়, ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডবের সময় প্রসব বেদনা ওঠে নোয়াখালীর বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার গৃহবধূ ফেন্সি বেগমের (৩০)। সোমবার রাতে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। তবে বিদ্যুৎ না থাকায় কোনো ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছিল না। পরে মোবাইলে টর্চলাইট জ্বালিয়ে ফুটফুটে কন্যাসন্তান প্রসব করান ডা. সুমাইয়া বিনতে ফরহাদ।
ঘূর্ণিঝড়ের রাতে দুই নবজাতক প্রসব করানো হয়েছে জানিয়ে ডা. সুমাইয়া বিনতে ফরহাদ বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের কারণে আগের রাত থেকে হাতিয়ায় বিদ্যুৎ ছিল না। ওদিকে প্রসূতির প্রসব যন্ত্রণা বেড়েই চলছিল। এমন পরিস্থিতিতে আমার মোবাইলের টর্চলাইট (ফ্ল্যাশ) জ্বালিয়ে মিডওয়াইফ মিম ও সাবরিনার সহযোগিতায় ওই মায়েদের স্বাভাবিক প্রসব করানো হয়।
‘প্রসূতি দুজনের অবস্থাই খারাপ ছিল জানিয়ে তিনি বলেন, সবকিছু মিলিয়ে যে কী অবস্থা পার করেছি, আল্লাহ ভালো জানেন। দ্বিতীয় রোগী হাতিয়া উপজেলায় নিজ বাসায় ডেলিভারির চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে অবস্ট্রাক্টেড লেবার নিয়ে হাতিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসেন। রোগীর হিমোগ্লোবিন ৬.৫ শতাংশ থাকায় জরুরি ভিত্তিতে সিজার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হয়নি। পরবর্তী সময়ে ওই রোগীরও স্বাভাবিক প্রসব করানো সম্ভব হয়। কিন্তু প্রসব পরবর্তীতে তার রক্তক্ষরণ শুরু হলে জরুরি চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করা হয়। বর্তমানে দুই মা ও দুই শিশু সুস্থ আছে।’
হাতিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মাহবুব মোর্শেদ লিটন বলেন, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বিদ্যুৎ না থাকা সত্ত্বেও মোবাইলের আলোয় নরমালে দুই নবজাতকের জন্ম হয়েছে। যেটি দ্বীপের মানুষের জন্য আশার আলো দেখাচ্ছে।
এদিকে ঘূর্ণিঝড় রেমালের আঘাতে নোয়াখালীর উপকূলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এর মধ্যে দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ায় ৩৩ হাজার পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পাঁচ হাজার কাঁচা ঘরবাড়ি বিধ্বস্তসহ দুই হাজারের বেশি গবাদিপশু ভেসে গেছে। হাতিয়ার বিভিন্ন এলাকার ৩৩ হাজার পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আট হাজার হেক্টর জমির ফসল সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে।
নয়াশতাব্দী/টিএ
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ