আলজাজিরার প্রতিবেদনে যেভাবে মিথ্যা নাটক সাজানো হয়েছিল, ঠিক তেমনি যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞাতেও অসত্য অভিযোগ তোলা হয়েছে বলে দাবি করেছেন সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল (অব.) আজিজ আহমেদ। দুটি অভিযোগেই তার কোনও সংশ্লিষ্টতা নেই বলেও দাবি করেন তিনি।
তাকেসহ পরিবারের সদস্যদের ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে এর প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন সাবেক সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল (অব.) আজিজ আহমেদ। বলেছেন, শাস্তি পাওয়ার মতো কোনো অপরাধ করিনি। আমি মনে করি এটা (মার্কিন নিষেধাজ্ঞা) সম্পূর্ণভাবে আমার জন্য প্রযোজ্য নয়।
মঙ্গলবার (২১ মে) দুপুরে রাজধানীতে নিজের বাসভবনে গণমাধ্যমের সাথে আলাপকালে আজিজ আহমেদ এসব কথা বলেন।
তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে আন্তর্জাতিক গণমাধম্যে প্রচারিত ডকুমেন্টারির প্রসঙ্গ টেনে আজিজ আহমেদ বলেন, ‘আল জাজিরাতে অল দ্য প্রাইম মিনিস্টারস ম্যান দেখানো হলো। আমার ভাইকে মিলিটারি কন্ট্রাক্ট দিয়ে করাপশন করেছি, এই অভিযোগ আনা হয়। তখন ইউএন থেকে বক্তব্য দিয়েছিল। যখন আল জাজিরা এটা প্রচার করে, তখন আমি আমেরিকাতে। আমি তখন জাতিসংঘ হেডকোয়ার্টারে গিয়ে প্রশ্ন করেছিলাম, তোমরা যা আমাদের কাছে চেয়েছিলে, সেটার সব ডকুমেন্ট আমার কাছে আছে। তোমাদের কর্মকর্তা কেন বলল, এমন কিছু হয়নি। তখন তারা বলেছিল, যে এটা সঠিক হয়নি।’
তার দায়িত্বকালে ‘ইক্যুপমেন্ট’ কেনা হয়নি দাবি করে আজিজ আহমেদ বলেন, ‘এটা (নজরদারির প্রযুক্তি) মিশন এলাকায় দেওয়ার জন্য পারচেজ করা হয়েছিল। আমি চার বছর বিজিবির ডিজি, তিন বছর সেনাপ্রধান ছিলাম। সাত বছরে আমার কোনো ভাইকে আমি একটা কন্ট্রাক্ট দিইনি। কেউ যদি প্রমাণ করতে পারে, আমি পরিণতি মেনে নিতে প্রস্তুত।’
সাবেক সেনাপ্রধান বলেন, ‘স্পাইওয়্যার, যে সিগন্যাল ইকুইপমেন্টের কথা বলা হয়েছে; জাতিসংঘ জানতে চায়, ডি আর কঙ্গোর সিগন্যাল কোরের জন্য এই ইকুইপমেন্ট আমরা দিতে পারবো কি না। আমি ২৫ তারিখে দায়িত্ব নিলাম, ২৬ তারিখে কন্ট্যাক্ট সাইন হয়েছে।’
তার দাবি, দুটি বিষয় কাকতালীয়, ‘তারা লিংক করেছে ইম্যাচিওরড ওয়েতে। কেনা হয়েছে হাঙ্গেরিতে, আমার ভাইটা হাঙ্গেরি ছিল।’
সাবেক এই সেনাপ্রধান বলেন, ‘বাহিনীর ভাবমূর্তির ব্যাপারে একটা কথাই বলব, সবসময় একটা বিষয় আমি অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে থাকি। বিজিবি, আর্মি প্রেস্টিজিয়াস ইনস্টিটিউশন। সবসময় সতর্ক ছিলাম, আমার কোনো কর্মকাণ্ডে যেন এই দুটি বাহিনীর সুনাম ক্ষুণ্ন না হয়।’
আজিজ আহমেদ বলেন, ‘আমার কাছে মনে হয়, যেহেতু বর্তমান সরকারের সময় আমি সেনাপ্রধান ছিলাম, সরকারকেও হয়ত কিছুটা বিব্রত বা হেয় করার জন্য এই রেস্ট্রিকশনটা হতে পারে।’
এর আগে দুর্নীতিতে সম্পৃক্ততার অভিযোগে আজিজ আহমেদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
সোমবার (২০ মে) স্থানীয় সময় মধ্যরাতের পর মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে আজিজ আহমেদ ও তার পরিবারের সদস্যদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে অযোগ্য ঘোষণার কথা জানানো হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলারের বিবৃতিতে বলা হয়, উল্লেখযোগ্য দুর্নীতিতে সম্পৃক্ততার কারণে আজিজ আহমেদকে ডিপার্টমেন্ট অব স্টেট, ফরেন অপারেশন অ্যান্ড রিলেটেড প্রোগ্রামস অ্যাপ্রোপ্রিয়েশনস অ্যাক্টের ৭০৩১ (সি) ধারার আওতায় অন্তর্ভুক্ত করার ঘোষণা দিয়েছে পররাষ্ট্র দফতর। ফলে আজিজ আহমেদ ও তার পরিবারের সদস্যরা যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের জন্য অযোগ্য হবেন।
নয়াশতাব্দী/টিএ
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ