পুরো এপ্রিল জুড়ে ছিল তাপপ্রবাহ। টানা তাপপ্রবাহের মধ্যে অসস্তিতে কেটেছে নগরবাসীর জীবন। তীব্র গরমে সারাদেশে জনজীবন ছিল বিপর্যস্ত। বিপর্যস্ত ছিল রাজধানীবাসীও। অবশেষে বহুল আকাঙ্ক্ষিত বৃষ্টির দেখা পেয়েছে রাজধানীবাসী।
বৃহস্পতিবার গভীর রাতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় হয়েছে স্বস্তির বৃষ্টি। সেই বৃষ্টির পানিতে ভিজে শরীর-মন শীতল করতে অনেকেই ঘর ছেড়ে বেরিয়ে পড়েছেন রাস্তায়। অনেকে ছাদে উঠে ভিজেছেন বৃষ্টির পানিতে। বৃষ্টি যেন জীবনের গতি আরও ছন্দময় করে দিয়েছে। আকাঙ্খিত বৃষ্টিতে মন-প্রাণ জুড়িয়েছেন নগরবাসী।
বৃহস্পতিবার রাত ১২টার দিকে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় দেখা দেয় ঝুম বৃষ্টি। অনেক এলাকায় মুষলধারে বৃষ্টি হয়। রাজধানীর পুরান ঢাকার লালবাগ, মালিবাগ, মৌচাক, রামপুরা, বনশ্রী, কারওয়ান বাজার, ফার্মগেটসহ রাজধানীর অধিকাংশ এলাকায় বৃষ্টি হয়। বৃষ্টির দেখা পেয়ে গভীর রাতে বৃষ্টিতে ভিজতে ঘর থেকে বেরিয়ে পড়েছেন মালিবাগের শফিকুল ইসলাম।
তিনি বলেন, কয়েকদিনের তীব্র গরমে জীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিলাম। শরীরে ঘামাচি উঠে গেছে। বৃষ্টির নামার পর আর নিজেকে ধরে রাখতে পারলাম না। বৃষ্টির পানিতে ভিজে শরীর ও মন শীতল করে নিলাম। রাজধানীর কারওয়ান বাজারে বৃষ্টিতে ভিজছিলেন কয়েকজন শ্রমিক। ভিজে ভিজে নেচে গেয়ে আনন্দ করছিলেন তারা। তাদের মধ্যে খোকন নামের একজন বলেন, খুব ভাল লাগছে বৃষ্টিতে ভিজে। শরীর-মন দুটোই ঠান্ডা হয়ে গেছে।
এর আগে, বৃহস্পতিবার (২ মে) রাত ৯টার দিকে রাজধানীর পুরান ঢাকার সদরঘাট, ইসলামপুর, সূত্রাপুর, রায় সাহেব বাজার, রায়েরবাগসহ একাধিক এলাকায় বৃষ্টি হয়েছে। সন্ধ্যা থেকে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় মেঘের দেখা মেলে। অবশেষে রাত ৯টার দিকে সদরঘাট, ইসলামপুর, সূত্রাপুর, রায় সাহেব বাজার, রায়েরবাগসহ একাধিক এলাকায় বিদ্যুতও চমকানোর সঙ্গে কাঙ্ক্ষিত বৃষ্টি শুরু হয়।
এরপর ক্রমে বাড়তে থাকে বৃষ্টির তীব্রতা। অবশ্য ১৫ মিনিট পর বৃষ্টি অনেকটা থেমেও যায়। কোথাও কোথাও বৃষ্টির সঙ্গে ছিল ঝোড়ো হাওয়া। এরপর রাত বারোটার পর গভীররাতে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে শুরু হয় মুষলধারে বৃষ্টি। এদিকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক জায়গায় এবং ঢাকা, ময়মনসিংহ, বরিশাল ও সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে।
এছাড়া বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম অঞ্চলে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। বৃষ্টি হচ্ছে রংপুর, ময়মনসিংহ, সিলেটেও। তবে বৃষ্টির প্রবণতা চট্টগ্রাম অঞ্চলে বেশি। সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কুতুবদিয়ায় সবচেয়ে বেশি ২৭ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুক জানান, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক জায়গায় এবং ঢাকা, ময়মনসিংহ, বরিশাল ও সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। একই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
নয়া শতাব্দী/আরজে
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ