ঢাকা, শনিবার, ৫ অক্টোবর ২০২৪, ২০ আশ্বিন ১৪৩১, ১ রবিউস সানি ১৪৪৬

ঈদের ছুটিতে সড়কে ঝরলো ৪০ প্রাণ

প্রকাশনার সময়: ১২ এপ্রিল ২০২৪, ১৫:৫২

ঈদের দিন ও আগে পরের দুইদিন মিলিয়ে ঈদের ছুটিতে এ পর্যন্ত সারাদেশে সড়ক দুর্ঘটনায় অন্তত ৪০ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন আরও অনেকে। এরমধ্যে অধিকাংশই মোটরসাইকেল আরোহী।

গত ৯ এপ্রিল থেকে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত এসব দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবারে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।

গত ২৪ ঘণ্টায় নিহতদের মধ্যে রয়েছেন- পঞ্চগড়ে ৪ জন, খাগড়াছড়িতে ৩ জন, নেত্রকোনায় ৩ জন, নড়াইলের ২ জন, রাজশাহীতে ৩ জন, নরসিংদীতে ২ জন, ঢাকায় একজন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় একজন, যশোরে একজন এবং চুয়াডাঙ্গায় একজন।

পঞ্চগড়

পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরতে বেরিয়ে দুই মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে চারজনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতরা হলেন- উপজেলার দন্ডপাল ইউনিয়নের লোহাগাড়া সুপারিতলা এলাকার বাছের আলীর ছেলে কাউসার আলী (১৬), একই এলাকার ইয়াকুব আলীর ছেলে সাব্বির হোসেন (১৭), দেবীগঞ্জ সদর ইউনিয়নের খাঁ পাড়া এলাকার মজনু রহমানের ছেলে সাব্বির (২২) ও একই এলাকার হজরত আলীর ছেলে বরকত (১৭)।

খাগড়াছড়ি খাগড়াছড়ির গুইমারায় পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতরা হলেন- গুইমারা বাজারের মুরগি ব্যবসায়ী হারুনুর রশীদের ছেলে আলী হোসেন (১৭), বড়পিলাক এলাকার মৃত জামাল হোসেনের ছেলে মেহেদী হাসান পায়েল (২০) এবং মহালছড়ির মুবাছড়ি এলাকার বাসিন্দা দিগন্ত চাকমা (১৮)। তারা তিনজনই মোটরসাইকেল আরোহী।

নেত্রকোনা নেত্রকোনার কলমাকান্দায় মোটরসাইকেলে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে তিন যুবক নিহত হয়েছেন। নিহতরা হলেন উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের কয়রা কুমিল্লাপাড়া গ্রামের কবীর মিয়ার ছেলে হৃদয় মিয়া (২৩), আমতলা গ্রামের মো. জয়নাল মিয়ার ছেলে হালিম হোসেন (১৮) ও হাটশিরা শিবনগর গ্রামের মজিবুর রহমানের ছেলে নবী হোসেন (৩৫)।

নড়াইল নড়াইলের ডৌয়তলায় এলাকায় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় দুজন নিহত হয়েছেন। নিহতরা হলেন ফরিদপুরের সালথা উপজেলার কুমোরপট্টি গ্রামের আসাদ মাতুব্বরের ছেলে আলছাফ মাতুব্বর (২২) এবং অন্যজনের পরিচয় জানা যায়নি।

নরসিংদী নরসিংদীতে বাসের সঙ্গে মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের নরসিংদীর দগরিয়া এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন- নারায়ণগঞ্জ জেলার গাউসিয়া শাওগাট এলাকা শাহিন (২৩) ও সানি (২২)।

ঢাকা রাজধানীর গুলশান-২ গোলচত্বর এলাকায় প্রাইভেটকার ও মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। মমতা শিকদার (২৭) নামে ওই নারী একজন এক নার্স ছিলেন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় মো. শফিকুল ইসলাম (২৫) নামে এক প্রবাসীর মৃত্যু হয়েছে। নিহত শফিকুল ইসলাম বিজয়নগর উপজেলার পাহাড়পুর ইউনিয়নের ভিটিদাউদপুর উত্তর পাড়ার ইদন মিয়ার ছেলে।

যশোর যশোরের মনিরামপুরে ঈদের দিন ঘুরতে বেরিয়ে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় রাকিবুল ইসলাম রাব্বি (২২) নামে এক সেনা সদস্য নিহত হয়েছেন। রাকিবুল ইসলাম রাব্বি মনিরামপুর উপজেলার বাজুয়াডাঙা গ্রামের সোহরাব হোসেনের ছেলে।

চুয়াডাঙ্গা চুয়াডাঙ্গা সদরে মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছের সঙ্গে ধাক্কা লেগে শামিম হোসেন (১৭) নামে এক তরুণের মৃত্যু হয়েছে। নিহত শামিম সদর উপজেলার বোয়ালমারি গ্রামের শাহ জামালের ছেলে।

এছাড়া রাজশাহীতে ঈদের দিন ও দ্বিতীয় দিনে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় তিনজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন। নিহতরা সবাই বয়সে তরুণ। এর মধ্যে দুই বন্ধুও আছে।

নিহতরা হলেন- পবা উপজেলার কয়রা গ্রামের সাধু মিয়ার ছেলে শান্ত হোসেন (২০) ও আক্কাস আলীর ছেলে ফাহিম ইসলাম (২০)। আরেকজন পুঠিয়া উপজেলার বেলপুকুর থানার ভড়ুয়া গ্রামের আকানির ছেলে আজিজুল ইসলাম (১৮)। এর মধ্যে শান্ত ও ফাহিম বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) ও আজিজুল শুক্রবার (১২ এপ্রিল) নিহত হন।

এর আগে, বুধবার (১০ এপ্রিল) নোয়াখালী সদর ও কবিরহাট উপজেলায় পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় এক শিশুসহ তিনজন নিহত হন। নিহতদের মধ্যে দুজন সদর উপজেলায়, আর এক শিশুর মৃত্যু হয় কবিরহাট উপজেলায়।

নিহতরা হলেন- সুবর্ণচরের চর জুবলীর মো. নেসার (৪৫), চর জব্বরের মো. সাবিক (২০)। আর আহত ব্যক্তি হলেন মধ্যম বাগ্গার মো. আলী (৪০)।

বুধবার (১০ এপ্রিল) দুপুর দেড়টা থেকে ৩টার মধ্যে ঘটনা দুটি ঘটে। কবিরহাট উপজেলার ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দারা ক্ষুব্ধ হয়ে একটি পিকআপ ভ্যানে আগুন ধরিয়ে দেন।

এর আগে, ঈদের ছুটির প্রথম দিন মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল) দেশের ৮ জেলায় সড়ক দুর্ঘটনায় ১৬ জন নিহত হন। এসব ঘটনায় আরও অনেকে আহত হন। মঙ্গলবার সকালে থেকে বিকেল পর্যন্ত এসব ঘটনা ঘটে।

নিহতদের মধ্যে- ময়মনসিংহে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত সদর, ত্রিশাল ও তারাকান্দা উপজেলা এলাকায় তিনটি দুর্ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় একই পরিবারের তিনজনসহ ৮ জন নিহত হন।

এছাড়া চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে ট্রাকের ধাক্কায় ২ জন এবং কুড়িগ্রাম, টাঙ্গাইল, হিলি, মুন্সিগঞ্জ, বগুড়া ও গাইবান্ধায় একজন করে নিহত হন। এসব ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও অন্তত ১২ জন।

অন্যদিকে ঈদের দিন (১১ এপ্রিল) রাজধানীর সদরঘাট টার্মিনালে বার্দিং করার সময় তাসরিফ লঞ্চের দড়ি ছিঁড়ে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতরা হলেন- পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া থানার মাটিচোরা গ্রামের মৃত আব্দুল মালেকের ছেলে বিল্লাল (৩০), তার স্ত্রী মুক্তা (২৬), তাদের মেয়ে মাইশা (৩), পটুয়াখালী সদরের জয়নাল আবেদিনের ছেলে রিপন হাওলাদার (৩৮) এবং ঠাকুরগাঁও সদরের নিশ্চিতপুর এলাকার আব্দুল্লাহ কাফীর ছেলে রবিউল (১৯)।

নয়া শতাব্দী/এনএস

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ