ঢাকা, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

প্রশাসনে নারী কর্মকর্তাদের অবস্থান সুদৃঢ়

মাঠ প্রশাসনে ৭ ডিসি ও ১৫৫০ কর্মকর্তা
প্রকাশনার সময়: ০৮ মার্চ ২০২৪, ১১:০৭

আজ ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস। ‘নারীর সম-অধিকার, সমসুযোগ এগিয়ে নিতে হোক বিনিয়োগ’এই প্রতিপাদ্য নিয়ে এবার আন্তর্জাতিক নারী দিবস উদযাপন করা হচ্ছে। মাঠ প্রশাসন থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ সচিব পদ। সরকারি চাকরির সব ক্ষেত্রেই এখন নারীর জয়োগান। প্রশাসনে এক হাজার ৫৫০ জন নারী কর্মকর্তা কর্মরত রয়েছেন।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বর্তমানে সারা দেশে সরকারি চাকরিজীবী আছেন ১৫ লাখ ৫৪ হাজার ৯২৭ জন। এরমধ্যে চার লাখ চার হাজার ৫৯১ নারী। প্রথম শ্রেণিতে মোট চাকরিজীবী আছেন এক লাখ ৯৫ হাজার ৬৭৯ জন। এরমধ্যে নারী ৩৯ হাজার ৭৮৭ জন। সব মিলে প্রশাসনে এক হাজার ৫৫০ জন নারী কর্মকর্তা কর্মরত রয়েছেন।

বর্তমানে প্রশাসনের সর্বোচ্চ পদ সচিব কিংবা সিনিয়র হিসেবে রয়েছেন মোট ৮৬ জন। এরমধ্যে সচিব ও সচিব পদমর্যাদায় আছেন ১০ জন নারী। শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব জাকিয়া সুলতানা, কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব ওয়াহিদা আক্তার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের সিনিয়র সচিব মোসাম্মৎ হামিদা বেগম, পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব শাহনাজ আরেফিন, পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব ফারহিনা আহমেদ, জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সচিব নাসরীন আফরোজ, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব নাজমা মোবারেক, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব ইসরাত চৌধুরী, পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য (সচিব) রেহানা পারভীন এবং দুর্নীতি দমন কমিশনের সচিব খোরশেদা ইয়াসমিন দায়িত্ব পালন করছেন।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নিয়োগ, পদোন্নতি ও প্রেষণ (এপিডি) শাখার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে ৩২৭ অতিরিক্ত সচিবের মধ্যে ৫৫ জন নারী, ৮৫৮ যুগ্মসচিবের মধ্যে ১৮৬ নারী, এক হাজার ৭০৪ উপসচিবের মধ্যে ৩৯৫ নারী, এক হাজার ৮৬৭ সিনিয়র সহকারী সচিব ও সিনিয়র সহকারী কমিশনারের মধ্যে নারী রয়েছেন ৬৪১ জন। এছাড়া এক হাজার ৪৪২ সহকারী কমিশনার বা সহকারী সচিবের মধ্যে নারী ২৫০ জন কর্মরত।

বর্তমানে মাঠ প্রশাসন সামলাচ্ছেন সাত জন নারী জেলা প্রশাসক (ডিসি)। দেশের ৬৪ জেলা প্রশাসকের মধ্যে সাত জন নারী। এরমধ্যে গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন কাজী নাহিদ রসুল, মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট রেহেনা আকতার, মৌলভীবাজারে জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট উর্মি বিনতে সালাম, হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোছা. জিলুফা সুলতানা, ঝালকাঠি জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ফারাহ্ গুল নিঝুম, ফেনী জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মুছাম্মৎ শাহীনা আক্তার এবং লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সুরাইয়া জাহান দক্ষতার সাথে মাঠ প্রশাসন চালাচ্ছেন।

উপজেলা প্রশাসনে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) পদই সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তারাই উপজেলায় সরাসরি সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেন। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এপিডি শাখার তথ্য মতে, এখন সারা দেশে ৪৯২ ইউএনওর মধ্যে ১৬০ জন নারী। দায়িত্বরত ইউএনওর মধ্যে এই হার প্রায় ৩৫ শতাংশ। এছাড়া সারা দেশে ভূমিসংক্রান্ত দপ্তরের দায়িত্বে সহকারী কমিশনার (ভূমি) আছেন ১৩৬ নারী।

আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে শুক্রবার সকাল ১০টায় অনুষ্ঠানে বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানের জন্য জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ পাঁচজন জয়িতাকে সম্মাননা জানাবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

দিবসটি নিয়ে বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে তথ্য অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী সিমিন হোসেন (রিমি) বলেন, আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানের জন্য জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ পাঁচজন জয়িতাকে সম্মাননা দেওয়া হবে। অর্থনৈতিকভাবে সাফল্য অর্জন করায় ময়মনসিংহের আনার কলি, রাজশাহীর কল্যাণী মিনজি, সিলেটের চা শ্রমিক কমলী রবিদাশ, বরগুনার জাহানারা বেগম ও খুলনার পাখি দত্ত হিজরাকে এ সম্মাননা দেওয়া হবে। শ্রেষ্ঠ জয়িতারা প্রত্যেককে এক লাখ টাকার চেক, ক্রেস্ট, উত্তরীয় এবং সনদ পাবেন।

মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে নারী সমাজের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন, নারী অধিকার রক্ষা, নারীর ক্ষমতায়ন ও সমতা সৃষ্টির জন্য দিবসটির গুরুত্ব অপরিসীম। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশনা ও নেতৃত্বে দেশে নারীর ক্ষমতায়ন শুরু হয়। বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশে নারীর উন্নয়ন, ক্ষমতায়ন ও সম-অধিকার প্রতিষ্ঠায় সময়োপযোগী বিভিন্ন কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন। শিক্ষা, চাকরি, ব্যবসা ও আত্মকর্মসংস্থান সকল ক্ষেত্রে নারীরা আজ সফল হয়েছে।

নারীরা দেশের উন্নয়ন ও অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। যে কারণে সমতাভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠায় ১৪৬টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ ৫৯তম এবং দক্ষিণ এশিয়ায় শীর্ষে রয়েছে।

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ