ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৯ জানুয়ারি ২০২৫, ২৫ পৌষ ১৪৩১, ৮ রজব ১৪৪৬

খেজুরের বিকল্প বরই নিয়ে যা বলছেন ইসলামি চিন্তাবিদরা

প্রকাশনার সময়: ০৭ মার্চ ২০২৪, ১৬:৫৬

রমজান না আসতেই দেশের বাজারে বাড়তি খেজুরের দাম। সরকার ১০ শতাংশ শুল্ক ছাড় দেওয়ার পরও নানান অজুহাতে আমদানি মূল্যের চেয়ে দ্বিগুণ দামে বিক্রি হচ্ছে পণ্যটি। এরই প্রেক্ষিতে খেজুরের পরিবর্তে বরই দিয়ে ইফতার করার পরামর্শ দিয়ে বসেন শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন। তার এই বিস্ফোরক পরামর্শে রীতিমতো নড়ে-চড়ে বসেন দেশবাসী। সামাজিক মাধ্যম ও রাজনৈতিক অঙ্গনে অনেকে এ নিয়ে বিভিন্ন ধরনের প্রতিক্রিয়াও জানান।

সোমবার (৪ মার্চ) রাজধানীর ওসমানী মিলনায়তনে জেলা প্রশাসক সম্মেলন শেষে ওই পরামর্শে শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূনের ভাষ্য ছিল, ‘খেজুর নিয়ে আমাদের অভাব অভিযোগ আছে। বরই দিয়ে ইফতার করেন। খেজুর-আঙ্গুর কেন লাগবে?’

ওই দিন বিকেলেই সাবেক তথ্যমন্ত্রী ও জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু রাজশাহীর এক সমাবেশে এই বক্তব্যের জোরালো প্রতিবাদ জানান। সেখানে তিনি শিল্পমন্ত্রীর উদ্দেশে বলেন, ‘গরিব মানুষ বরই খাবে, আর তুমি আঙ্গুর আর খেজুর খাবা, তা হবে না, তা হবে না।’

এমন অবস্থায় ইফতারিতে বরই কি খেজুরের বিকল্প হতে পারে কি না, সেটি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই। ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে নানা গুরুত্বের কথা বলছেন ইসলামিক চিন্তাবিদরাও।

রমজান মাসে খেজুর কেন খাওয়া হয়? কিংবা খেজুর খেলে কী কী ধরনের উপকার পাওয়া যায় তা নিয়ে বিভিন্ন ব্যাখ্যা পাওয়া যায় ইসলামিক চিন্তাবিদ ও পুষ্টিবিদদের কাছ থেকে।

তারা বলছেন, ইফতারিতে খেজুর খাওয়া একটি সুন্নত আমল। তাই খেজুর দিয়ে ইফতার করলে আলাদা সওয়াব পাওয়া যায়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ ইব্রাহিম বিবিসি বাংলাকে বলেন, ‘ইসলামের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) খেজুর খেতেন। এবং তার খেজুরের প্রতি বেশি আকর্ষণের ফলে এটা তখন সবার মাঝখানে বরকতের বিষয় হিসেবে গণ্য হতো। কালের ধারাবাহিকতায় এখনও এটা প্রচলিত রয়েছে। এটা রাসুলের সাথে আমাদের আবেগ ও ভালোবাসার একটা সম্পর্ক।’

সুন্নত কিংবা ইসলামিক ঐতিহ্যগতভাবে খেজুরের গুরুত্ব তো আছেই। সেই সাথে খেজুরের পুষ্টিগুণ নিয়েও নানা তথ্য দিচ্ছেন পুষ্টিবিদরা।

তারা বলছেন, সারাদিন রোজা রাখার পর ইফতারিতে খেজুর সবচেয়ে উপকারী। ফল কিংবা খাদ্য হিসেবে বরই কখনও খেজুরের বিকল্প হতে পারে না। খেজুরে প্রচুর পরিমাণ ক্যালরি থাকায় রোজা শেষে ইফতারিতে খেজুর খেলে দ্রুত ক্ষুধা নিবারণ করা যায়। সেই সাথে দ্রুত দুর্বলতাও কেটে যায়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের খাদ্য ও পুষ্টিবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক নাজমা শাহীন বিবিসি বাংলাকে বলেন, ‘সারাদিন রোজা রাখার পর সুগার লেভেলটা কমে যায়। সেটার জন্য ইমিডিয়েট সুগার সোর্স হিসেবে খেজুরটা তাৎক্ষণিকভাবে খুব কাজে দেয়।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মোহাম্মদ ইব্রাহিম বলেন, ‘ইফতারিতে খেজুর খাওয়া মানুষের একটা আধ্যাত্মিক আকাঙ্ক্ষা। কিন্তু এই জিনিসটা এখন আমাদের আয়ত্তের বাইরে চলে যাচ্ছে। ফলে ভোক্তাদের মধ্যে এ নিয়ে অতৃপ্তি, অসন্তোষ ও অস্বস্তির একটা জায়গা তৈরি হয়ে যায়।’

সূত্র: বিবিসি

নয়াশতাব্দী/ডিএ

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ