বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজ ভবনে অগ্নিকাণ্ডের পর শুরু হয়েছে বহুতল ভবনে থাকা রেস্তোরাঁয় অভিযান। সরকারি বিভিন্ন সংস্থা পৃথক অভিযানে নানা জরিমানাসহ ঝুঁকিপূর্ণ রেস্তোরাঁগুলো সিলগালা করে দিচ্ছে।
এ ঘটনায় গভীর উদ্ধেগ প্রকাশ করে এ অভিযানকে ‘বাড়াবাড়ি’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি। একটি দুর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে রেস্তোরাঁ শিল্পের বিরুদ্ধে ‘গভীর ষড়যন্ত্র’ চলছে এবং কর্তৃপক্ষের ‘ব্যর্থতা ঢাকার জন্য অভিযান’ করা হচ্ছে বলে দাবি তাদের। অন্যদিকে গতকাল মঙ্গলবারও অবৈধ রেস্তোরাঁয় অভিযান চালিয়েছে সরকারি সংস্থাগুলো।
গতকাল বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির মহাসচিব ইমরান হাসান বলেছেন, রেস্টুরেন্টে একাধিক সংস্থা থেকে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়। আইনশৃঙ্খলা কাজে নিয়োজিত বাহিনী যেমন— আনসার, পুলিশ ও এলিট ফোর্স র্যাবও তাদের নিজস্ব ম্যাজিস্ট্রেট নিয়ে নিরাপদ খাদ্য বাস্তবায়নে ভূমিকা রাখতে সচেষ্ট। এটা হয়তো একটু বাড়াবাড়ি। কেননা নিরাপদ খাদ্য বাস্তবায়নে সরকার একটি কর্তৃপক্ষই গঠন করেছে। তাদের কাজটি করতে দিতে হবে। সংগঠনটি মনে করে, ছোট ব্যবসায়ীদের ব্যবসা থেকে সরিয়ে পুঁজিপতিরা পুরো খাতের নিয়ন্ত্রণ নিতে চান। বেইলি রোডে ঘটা দুর্ঘটনার দায় শুধু রেস্তোরাঁ মালিকদের ওপর না চাপিয়ে সবাইকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। সমিতির নেতারা হয়রানি বন্ধ করে সমস্যা সমাধানে আলোচনা করার আহ্বান জানিয়েছেন।
ইমরান হাসান বলেন, বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজের অগ্নিকাণ্ডের দায় কেউ এড়াতে পারেন না। পুরো ভবনটাই ছিল অনিয়মে ভরা, ভবনটির অনুমোদন দিয়েছে রাজউক, রেস্তোরাঁ সেক্টরটি তদারকি করে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ, জাতীয় ভোক্তা অধিকার ও সংরক্ষণ অধিদপ্তর, সিটি করপোরেশন, কলকারখানা পরিদর্শন অধিদপ্তর, সংযুক্ত আছেন জেলা প্রশাসকসহ অনেক অধিদপ্তর ও সংস্থা। ৪৬ জনের প্রাণহানির পর রাজউক ও সিভিল ডিফেন্সের টনক নড়েছে। ঘটনার পর থেকেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ঢাকা শহরের বিভিন্ন রেস্তোরাঁয় অভিযান চালিয়ে সিলিন্ডার গ্যাসের বোতল জব্দ করেছে এবং স্টাফদের গ্রেপ্তার করেছে। এটি সমস্যার সমাধান নয়।
তিনি বলেন, সংবাদ সম্মেলনে সাম্প্রতিক সময়ে সংঘটিত অগ্নিকাণ্ডের জন্য সৃষ্ট সংকট থেকে উত্তোরণ শীর্ষক আলোচনা করে এমন একটি সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে হবে যে, রেস্টুরেন্ট করার আগেই যথাযথ কর্তৃপক্ষ যাচাই-বাছাই করে রেস্টুরেন্টের অনুমোদন দেবেন।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, তিতাস গ্যাসের পর্যাপ্ততা নেই। আবার লাইন সংযোগ থাকলেও লাইনে গ্যাস নেই। এখন বিকল্প ব্যবস্থা গ্যাস সিলেন্ডার ব্যবহার বা লাকড়ি ব্যবহার, লাকড়ি ব্যবহার করলে কিচেনসহ পুরো রেস্টুরেন্ট কালো হয়ে যায়, পরিবেশ ঠিক থাকে না। পুরো বিষয়টি নিয়ে উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন একটি টাস্কফোর্স গঠন করে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত চাচ্ছি এবং ভবিষ্যতের জন্য নির্দিষ্ট একটি গাইডলাইন তৈরি করতে হবে, যাতে ব্যাঙের ছাতার মতো রেস্তোরাঁ গজিয়ে উঠতে না পারে। একই সঙ্গে আসন্ন রমজানে পবিত্রতা বজায় রেখে রেস্তোরাঁ ব্যবসা করতে চান বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
অপরদিকে, অগ্নিকাণ্ডে ৪৬ জনের মৃত্যুর ঘটনায় শোক প্রকাশ করে আজ বুধবার প্রতিটি রেস্তোরাঁয় কালো পতাকা উত্তোলন ও কালো ব্যাজ ধারণ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি।
ঢাকার বেইলি রোডের বিভিন্ন আবাসিক ভবনে গড়ে তোলা রেস্তোরাঁয় অভিযান চালিয়েছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। এ সময় নবাবী ভোজ ও সুলতান’স ডাইন নামে দুটি রেস্তোরাঁ সিলগালা করে দেয় সংস্থাটি। এছাড়া রাজধানীর খিলগাঁওয়ে আবাসিক ভবনে রেস্তোরাঁ করায় একটি সাততলা ভবন সিলগালা করা হয়েছে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ভ্রাম্যমাণ আদালত ভবনটি সিলগালা করে।
নবাবী ভোজ রেস্তোরাঁটি বেইলি রোডের একিউআই শপিং মলের বেইজমেন্টে অবস্থিত। অভিযানের সময় রেস্তোরাঁর কেউ ছিলেন না। এটি আইনের ব্যত্যয় ঘটিয়ে করা হয়েছে বলে জানান রাজউকের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ মনির হোসেন হাওলাদার।
অপরদিকে সুলতান’স ডাইনের বিষয়ে রাজউকের কর্মকর্তারা জানান, রেস্তোরাঁটির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারেননি। তবে তারা দাবি করেছেন, তাদের সব কাগজপত্র আছে। তাই আপাতত রেস্তোরাঁটি সিলগালা করা হয়েছে। কাগজপত্র দেখাতে পারলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মনির হোসেন হাওলাদার সাংবাদিকদের জানান, নিয়মিত কার্যক্রমের অংশ হিসেবে অভিযানে এসেছেন তারা। রেস্তোরাঁগুলোয় আগুন প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা আছে কিনা তা দেখা হচ্ছে।
তিনি বলেন, রেস্তোরাঁয় আগুন জ্বালিয়ে খাবার রান্না করা হয়, গ্যাসের ব্যবহার হয়। সেজন্য আগুন প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা আছে কিনা দেখছি। পাশাপাশি অন্যান্য নিয়ম মানা হচ্ছে কিনা সেটিও দেখা হচ্ছে। নবাবী ভোজ রেস্তোরাঁ আইনের ব্যত্যয় ঘটিয়ে করা হয়েছে। এজন্য সিলগালা করে দিয়েছি।
এদিকে অভিযানে বেইলি রোডের ক্যাপটাল সিরাজ সেন্টার নামের একটি ভবনের অগ্নি সুরক্ষার ছাড়পত্র হালনাগাদ না করায় দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
ক্যাপিটাল সিরাজ সেন্টার ভবনটির পরিচালক সারফুদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, আমাদের সবকিছু ঠিক আছে। শুধু ফায়ারের ছাড়পত্র এখনো পাইনি।
রাজধানীর অনিরাপদ ভবন নিয়ে রাজউকের ঘুম কবে ভাঙবে জানতে চাইলে রাজউকের অঞ্চল-৭-এর পরিচালক মনির হোসেন হাওলাদার বলেন, রাজউক ঘুমিয়ে নেই। এর আগেও রাজউক নিয়মিত অভিযান চালিয়েছে। হয়তো সেটা গণমাধ্যমের চোখে পড়েনি।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১০টার দিকে বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজ ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে এখন পর্যন্ত ৪৬ জনের মৃত্যু হয়। আগুনের ঝুঁকি ও অনুমোদন না থাকার পরও ভবনটিতে আটটি রেস্তোরাঁ চলছিল বছরের পর বছর ধরে। সপ্তাহের শেষ কর্মদিবসে সেখানে খেতে ভিড় করেছিলেন নগরের বাসিন্দারা। এ ঘটনার পর নড়েচড়ে বসে রাজউক। ভবনের নকশা ও অনুমোদনের ব্যত্যয় ঘটিয়ে বাণিজ্যিক কার্যক্রম পরিচালনার বিরুদ্ধে অভিযানে নামে সরকারি প্রতিষ্ঠানটি।
এদিকে বেলা সাড়ে ১১টায় খিলগাঁওয়ে অভিযান শুরু করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ সময় ভবনটি সিলগালা করা হয়। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাহাঙ্গীর আলম এ আদালত পরিচালনা করেন।
অভিযানের শুরুতে খিলগাঁওয়ের শহীদ বাকী সড়কের সি ব্লকের ৫৬৬/এ ভবনের দ্বিতীয় তলায় শর্মা কিং রেস্তোরাঁয় অভিযান চালান ভ্রাম্যমাণ আদালত। তবে এ সময় রেস্তোরাঁর মালিক বা ব্যবস্থাপক ছিলেন না। তাদের মোবাইলে কল দিয়েও পাওয়া যায় না। এছাড়া রেস্তোরাঁর কর্মীরাও কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারেননি।
গত সোমবার দুপুর ১২টায় এ রেস্তোরাঁ থেকে বের হয়ে একই ভবনের তৃতীয় তলায় পাস্তা ক্লাব নামে আরেকটি রেস্তোরাঁয় ঢোকেন অভিযানে অংশগ্রহণকারীরা। এ রেস্তোরাঁয়ও মালিককে পাননি ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ সময় ভবনের সামনে অগ্নিপ্রতিরোধ ও নির্বাপণ আইন ২০০৩ অনুযায়ী ‘এই ভবনটি অগ্নিনিরাপত্তার ক্ষেত্রে অত্যাধিক ঝুঁকিপূর্ণ’ লেখা একটি ব্যানার টানিয়ে দেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের প্রতিনিধিরা। পরে ৭ তলা এ ভবনটি সিলগালা করে দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
ভবনের প্রতিটি তলায় একটি করে রেস্টুরেন্ট দেখা গেছে। নিচতলায় ছিল একটি গার্মেন্টসের শো-রুম। আর পার্কিংয়ের জায়গায় একটি রেস্টুরেন্টে নির্মাণকাজ চলতে দেখা গেছে। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাহাঙ্গীর আলম সাংবাদিকদের বলেন, অগ্নিঝুঁকি থাকায় ভবনটি আপাতত বন্ধ থাকবে। ভবন মালিক এবং সংশ্লিষ্ট রেস্তোরাঁর মালিকরা সঠিক কাগজপত্র দেখাতে পারলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তবে অভিযানের আগাম খবর পেয়ে খিলগাঁও এলাকার অধিকাংশ রেস্তোরাঁ এদিন সকাল থেকেই খোলেনি বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তারা জানান, খিলগাঁওয়ে গড়ে ৯০ শতাংশ রেস্তোরাঁ আবাসিক বাসাবাড়িতে গড়ে উঠেছে। ফলে এলাকাটি আবাসিক এলাকার বৈশিষ্ট্য হারিয়েছে, যা রাজউকের আইন অনুযায়ী অবৈধ।
এদিকে রাজধানীর মোহাম্মদপুরে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা হোটেল-রেস্তোরাঁয় অনিরাপদ সিলিন্ডার ব্যবহারের কারণে বিশেষ অভিযান চালিয়েছে মোহাম্মদপুর থানা-পুলিশ। গত সোমবারের এ অভিযানে রেস্টুরেন্টের মালিক ও ম্যানেজারসহ ৩৫ জনকে আটক করা হয়। মোহাম্মদপুরের জেনেভা ক্যাম্প, রিং রোড, তাজমহল রোডসহ বিভিন্ন এলাকায় এ অভিযান চালানো হয়। পুলিশের সূত্র জানায়, মোহাম্মদপুর এলাকায় গড়ে ওঠা ১১টি হোটেল-রেস্তোরাঁয় বিভিন্ন অনিয়ম, অব্যবস্থাপনাসহ নানা অভিযোগে অভিযান চালানো হচ্ছে। গ্যাসের সিলিন্ডার ব্যবহারে সবাই উদাসীন। অভিযানের মূল উদ্দেশ্য হলো, দাহ্য পদার্থ ব্যবহারে মানুষকে সচেতন করা। কোথাও অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনা দেখা মাত্রই আইনগত ব্যবস্থাসহ তাদের সতর্ক করা হচ্ছে।
কামরাঙ্গীরচর ও মাহাম্মদপুরে আটক ৫৯ : রাজধানীর কামরাঙ্গীরচর থানার রসুলপুর, আশরাফাবাদ, লোহারব্রিজসহ বিভিন্ন এলাকায় অনিয়ম, অব্যবস্থাপনাসহ বিভিন্ন অভিযোগে রেস্টুরেন্টের মালিক ও ম্যানেজারসহ ২৪ জনকে আটক করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। গত সোমবার রাতে প্রায় ২৪টি হোটেল-রেস্তোরাঁয় অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়। লালবাগ জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার মো. ইমরান হোসেন মোল্লা অভিযানের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, অভিযানের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে দাহ্য পদার্থ ব্যবহারে মানুষকে সচেতন করা। কোথাও অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনা দেখামাত্রই আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। পাশাপাশি অনেককে সতর্ক করাও হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, হোটেল-রেস্তোরাঁর যথাযথ অনুমোদন রয়েছে কিনা, নিরাপদ স্থানে গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহার হচ্ছে কিনা, নিরাপত্তা ব্যবস্থা কতটুকু টেকসই, অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র এবং ঝুঁকির বিষয়গুলো যথাযথভাবে চেক করা হচ্ছে। তবে গ্যাসের সিলিন্ডার ব্যবহারে সবাই বেশ উদাসীন। অভিযানে ডিএমপির লালবাগ বিভাগের উপকমিশনার মো. মাহবুব-উজ-জামান, জোনাল অতিরিক্ত উপকমিশনার মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম, লালবাগ জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার মো. ইমরান হোসেন মোল্লা, কামরাঙ্গীরচর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. সাইফুল ইসলাম, পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. ফজলুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে রাজধানীর মোহাম্মদপুরে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা হোটেল-রেস্তোরাঁয় অভিযান চালিয়েছে মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ। এ সময় অনিরাপদ সিলিন্ডার ব্যবহারসহ বিভিন্ন অনিয়মে রেস্তোরাঁর মালিক ও ম্যানেজারসহ ৩৫ জনকে আটক করা হয়েছে। গত সোমবার রাতে মোহাম্মদপুরের জেনেভা ক্যাম্প, রিং রোড, তাজমহল রোডসহ বিভিন্ন এলাকায় এ অভিযান চালানো হয়। পুলিশ জানায়, মোহাম্মদপুর বিভিন্ন এলাকাজুড়ে গড়ে ওঠা ১১টি হোটেল-রেস্তোরাঁয় বিভিন্ন অনিয়ম, অব্যবস্থাপনাসহ নানা অভিযোগে অভিযান চালানো হয়। এ সময় ম্যানেজার ও মালিকসহ ৩৫ জনকে আটক করা হয়েছে। রেস্তোরাঁগুলো গ্যাসের সিলিন্ডার ব্যবহারে বেশ উদাসীন। কোথাও অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনা দেখা মাত্রই আইনগত ব্যবস্থাসহ তাদের সতর্ক করা হচ্ছে। মোহাম্মদপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সবুজ রহমান জানান, বেইলি রোডের মর্মান্তিক দুর্ঘটনার পর মোহাম্মদপুর থানা এলাকায় যেন এমন কোনো দুর্ঘটনা না ঘটে সে লক্ষ্যে বিভিন্ন ভবনে থাকা হোটেল ও রেস্তোরাঁয় অভিযান চালানো হয়েছে। অভিযানে দেখা যায়, হোটেল ও রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ীরা অসতর্ক এবং কোনো দুর্ঘটনায় তারা কীভাবে সামাল দেবেন সেই সম্পর্কে তাদের কোনো ধারণাই নেই। তিনি বলেন, আমরা বেইলি রোডের দুর্ঘটনার পর পুরো এলাকায় পর্যায়ক্রমে অভিযান পরিচালনা শুরু করেছি। বিশেষ করে সিলিন্ডার গ্যাস ব্যবহারে অসতর্কতা ও অবৈধভাবে গড়ে ওঠা হোটেল ও রেস্তোরাঁ মালিকদের আইনের আওতায় নিয়ে আসছি। মোহাম্মদপুর থানার ওসি মাহফুজুল হক ভূঞা জানান, মোহাম্মদপুরের বিভিন্ন এলাকায় হোটেল ও রেস্তোরাঁয় অভিযান চালিয়ে মালিক ও ম্যানেজারসহ মোট ৩৫ জনকে আটক করা হয়েছে। পাশাপাশি এলাকাজুড়ে গড়ে ওঠা হোটেল-রেস্তোরাঁর যথাযথ অনুমোদন রয়েছে কিনা, নিরাপদ স্থানে গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহার হচ্ছে কিনা, নিরাপত্তা ব্যবস্থা কতটুকু টেকসই, অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র ও ঝুঁকির বিষয়গুলো যথাযথভাবে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তিনি বলেন, বড় কোনো দুর্ঘটনা ঘটার আগেই যেন সবাই সচেতন হয় সেই বিষয়ে আমরা বেশি জোর দিচ্ছি। যাদের হোটেল-রেস্তোরাঁ করার অনুমোদন নেই সেগুলোর বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্টদের আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে সহায়তা করছি। হোটেল-রেস্তোরাঁ মালিকরা শৃঙ্খলায় না ফেরা পর্যন্ত আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ