ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের সিনিয়র ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট খন্দকার হাফিজুর রহমান বিপ্লব বর্বোরচিত হামলার শিকার হয়েছেন। অতর্কিত এ হামলার নেতৃত্ব দেন জি এম রাশেদুল হাসান। তিনি নিজেকে ঢাকা ক্যান্টনমেন্টের অধীনে এলপিআরে থাকা মেজর বলে দাবি করেছেন।

ঘটনাটি গত রোববার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানীর মিরপুর-১০ নম্বর গোলচত্বরের পাশের সেনপাড়া সড়কে ঘটেছে।

জানা যায়, রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পণ্য পছন্দ না হওয়ায় ডেলিভারিম্যান এক কিশোরকে বেধড়ক পিটাচ্ছিলেন জি এম রাশেদুল হাসান। এসময় ডেলিভারিম্যানের সাইকেলে থাকা তিনটি ব্যাগ ও মালামাল ফেলে দেন এবং টেনে-হিঁচড়ে তাকে পাশের ভবনের নিচে নিয়ে মারতে থাকেন এবং উচ্চ স্বরে গালিগালাজ করেন হাসান। রাস্তা দিয়ে চলার সময় দূর থেকে সবকিছু দেখে আতঙ্কিত ও ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে বিপ্লব কাছে গিয়ে এর কারণ জানতে চান। তখন হাসানের সাথে থাকা একজন বিপ্লবকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে চলে যেতে বলেলে, বিপ্লব এমন আচরণের প্রতিবাদ জানান। তখন জি এম রাশেদুল হাসান ক্ষিপ্ত হয়ে বিপ্লবের শার্টের কলার চেপে ধরে ভবনের নিচে টেনে নিয়ে মারধর শুরু করে। অনাকাঙ্ক্ষিত এ ঘটনায় বাধা দিয়ে নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দিলেও রক্ষা হয়নি তার। বরং, উল্টো তারা তার উপর চড়াও হয়।

কিছুক্ষণ পর হাসানের হাত থেকে কৌশলে পালিয়ে বিপ্লব প্রাণে রক্ষা পেলেও আটকে রাখা হয় ডেলিভারিম্যানকে। ঘটনার পর, ডেলিভারিম্যানকে উদ্ধার ও ঘটনাতদন্তে ৯৯৯ নম্বরে ফোন দিয়ে পুলিশ ডাকেন বিপ্লব। সাড়ে ১২টার দিকে পুলিশ এলে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায় অপরাধীরা। তখন খুঁজে পাওয়া যায়নি ডেলিভারিম্যানকে। বন্ধ করে দেয়া হয় সিসিটিভি ফুটেজ। এখানে এমন ঘটনা ঘটেছে তাও অস্বীকার করা হয়। পরে সাংবাদিক ও পুলিশের কর্তব্যরত কর্মকর্তার চাপে অপরাধী হাসান পুলিশের সঙ্গে সাক্ষৎ করতে বাধ্য হন এবং পুরো বিষয়টি অস্বীকার করেন। তবে বিপ্লবের অনড় অবস্থান ও দৃঢ়তার কারণে হাসান ঘটনা স্বীকার করেন এবং বিষয়টি নিয়ে বাড়াবাড়ি না করতে ভয়ভীতি দেখান।

পুলিশের উপস্থিতিতেও তথাকথিত মেজরের এমন হুঙ্কারে পরিস্থিতি অনকূল মনে না করায় সেখান থেকে সরে আসেন বিপ্লব ও তার শুভাকাঙ্ক্ষীরা। এরপর, শারীরিকভাবে অসুস্থ বিপ্লবকে রাজধানীর শহিদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান তাদের কয়েকজন। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে বিপ্লব ওইদিন বিকালে কাফরুল থানায় জিডি করেন, জিডি নম্বর-১৫৯৫ এবং স্মারক নম্বর- ১২৫০। মামলার প্রয়োজনে জিডির কপিটি বর্তমানে ঢাকা জজ কোর্টে পাঠানো হয়েছে।

নয়া শতাব্দী/এসএ