এবার রোহিঙ্গা নারী ও শিশু পাচারের জনপ্রিয় রুট হিসেবে আলোচনায় এসেছে লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম-আঙ্গরপোতা সীমান্ত। এক সপ্তাহের ব্যবধানে ৩ নারী-শিশু ও এক যুবক বিজিবির হাতে আটকের পর, এই চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসতে শুরু করেছে।
দহগ্রাম-আঙ্গরপোতা সীমান্ত মানবপাচারের রুট হিসেবে আলোচনায় আসে ২১ সালের ৩ সেপ্টেম্বর। ওইদিন অবৈধ পথে নেপাল যাওয়ার সময় ভারতে গ্রেপ্তার হন ইভ্যালির মালিক মেহজাবিনের ভাই বাংলাদেশ পুলিশের ইন্সপেক্টর সোহেল রানা।
সে সময় রানা ভারতীয় পুলিশকে জানান, বাংলাদেশের দহগ্রাম সীমান্ত দিয়ে ভারতে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশ করেন তিনি।
এরপর থেকে দহগ্রাম সীমান্ত দেশে বিদেশে ব্যাপক আলোচনায় আসে। দুই দেশের পুলিশ ব্যাপক ধরপাকড় করে শুরু করে। পরে রহস্যজনক কারণে সবকিছু থেমে যায়।
এবার সেই মানবপাচারের রুট আবার আলোচনায় এসেছে নারী ও শিশু পাচারের নিরাপদ রুট হিসেবে। গত ৯ ফেব্রুয়ারি পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম-আঙ্গরপোতা ছিটমহল সীমান্তে রোহিঙ্গা দুই নারী, এক শিশু ও এক যুবক আটক হয়। ভারতে পাচার হওয়ার পথে বিজিবি তাদের আটক করে।
আটক রোহিঙ্গারা হলেন- টেকনাফ সেকমারকুল ২১ রিফুজি রোহিঙ্গা ক্যাম্পের মৃত ইউনুস আলীর ছেলে মো. আব্দুল্লাহ (২৪), আব্দুল্লাহর স্ত্রী মোছা. শরিফা বেগম (১৯), একই ক্যাম্পের শামছুল হকের মেয়ে মোছা. আমেনা বেগম (১৫) ও আব্দুল্লাহ-শরিফা দম্পত্তির শিশুকন্যা মোছা. রিনাস বিবি (২৭ মাস)।
এর আগে গত ৬ ফেব্রুয়ারি দহগ্রাম-আঙ্গরপোতা সীমান্তে মোছা. রমিদা (২৩) নামের এক তরুণীকে বিজিবি আটক করে। ওই তরুণী কক্সবাজারের উখিয়ার বালুখালি রোহিঙ্গা ক্যাম্প ১৬-এর ব্লক সি-১২ বাসিন্দা।
হঠাৎ করে দহগ্রাম সীমান্তে নারী ও শিশু আটক বেড়ে যাওয়ায় সাধারণ মানুষের মাঝে প্রশ্ন উঠেছে, দহগ্রাম সীমান্ত কি মানবপাচারের নিরাপদ রুটে পরিণত হয়েছে?
নারী ও শিশু পাচার প্রতিরোধ নিয়ে কাজ করা একটি সামাজিক সংগঠনের কর্মকর্তা নামপ্রকাশ না করার শর্তে জানান, নারী ও শিশু পাচারকারীদের প্রধান টার্গেট এখন রোহিঙ্গা নারী ও শিশুরা। কাজ দেওয়ার লোভনীয় প্রস্তাব দিয়ে তাদের ভারতে পাচার করা হয়। পরে সেখানে পতিতাপল্লীতে বিক্রি করে দেওয়া হয়। অনেককে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতেও পাচার করা হয়। রোহিঙ্গা নারী ও শিশুদের পাচারে ঝুঁকি কম। তাদের স্বজনরা তেমন খোঁজখবর করে না। তাদের কোনো দেশ নেই, পরিচয়ও নেই।
এ বিষয়ে পাটগ্রাম থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জয়ন্ত কুমার সাহা জানান, হঠাৎ সীমান্তে রোহিঙ্গা নারী, পুরুষ ও শিশু আটকের ঘটনা বেড়ে গেছে। সীমান্ত রক্ষা, পাচাররোধের দায়িত্ব বিজিবির। পুলিশ শুধু তারা সহায়তা চাইলে পুলিশিং ও আইনগত সহায়তা করে থাকে।
নয়াশতাব্দী/এনএস
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ