দেশের প্রথম সারির ই-কমার্স ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রাসেল ও তার স্ত্রী শামীমা নাসরিণ গ্রাহকদের সঙ্গে প্রতারণা অভিযোগে গতকাল বৃহস্পতিবার র্যাবের হাতে তার নিজ বাসা মোহাম্মদপুর থেকে গ্রেফতার হন।
পরে তাদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর আজ শুক্রবার আনুষ্ঠানিক ব্রিফিংয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন র্যাব।
সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
খন্দকার আল মঈন ব্রিফিংয়ে বলেন, গ্রাহককে ধোঁকায় ফেলতে ব্যবসার নেতিবাচক স্ট্র্যাটেজি গ্রহণ করেন ইভ্যালির চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিন এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী মোহাম্মদ রাসেল। তারা দুজন প্রতিষ্ঠানটি থেকে ৫ লাখ করে ১০ লাখ টাকা বেতন নিতেন। চড়তেন দামি গাড়িতে। গত কয়েক বছরে সাভারে কোটি কোটি টাকার সম্পদ গড়েছেন রাসেল।
আরও পড়ুন: ৩ দিনের রিমান্ডে রাসেল ও শামীমা
জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এই র্যাব সদস্য আরও জানান, ইভ্যালির কয়েকটি অ্যাকাউন্টে এখন মাত্র ৩৫ লাখ টাকার মতো রয়েছে। এছাড়া কয়েকটি গেটওয়েতে আটকে আছে ৩০-৩৫ কোটি টাকা। কোম্পানিটিতে এক পর্যায়ে প্রায় ২ হাজার স্টাফ এবং অস্থায়ী ভিত্তিতে ১ হাজার ৭০০ কর্মচারী ছিল। এখন সেটা কমে প্রায় অর্ধেকে নেমেছে। গত জুন মাস থেকে অনেক কর্মচারীর বেতন বকেয়া।
ইভ্যালির বিরুদ্ধে গত প্রায় দুই মাস ধরে একের পর এক প্রতারণার অভিযোগ আসতে থাকে। সেই ধারাবাহিকতায় গত বুধবার রাতে গুলশান থানায় একটি মামলা দায়ের করেন আরিফ বাকের নামে এক ভুক্তভোগী। তিনি বলেন, আমরা তিন বন্ধু মিলে ইভ্যালিতে ২০ লাখ টাকার পণ্য অর্ডার করেছি। পণ্য না দিয়ে উল্টো তারা এখন হুমকি-ধমকি দিচ্ছে।
ভুক্তভোগী আরিফ বাকের বলেন, ইভ্যালির চমকপ্রদ বিজ্ঞাপনে আকৃষ্ট হয়ে আমরা তিন বন্ধু কিছু পণ্য অর্ডার করেছিলাম গত মে মাসে। একজন ৩ লাখ ১০ হাজার, একজন ৯ লাখ এবং আরেকজন ৭ লাখ ৯৮ হাজার টাকার পণ্য অর্ডার করি। অর্ডারের সব টাকা বিকাশ, নগদ ও সিটি ব্যাংকের মাধ্যমে পরিশোধ করা হয়। নিয়মানুযায়ী পণ্যগুলো ৭ থেকে ৪৫ দিনের মধ্যে পরিশোধ করার কথা।
আরও পড়ুন: দেনা পরিশোধের সক্ষমতা ছিল না ইভ্যালির
মামলার অভিযোগে বলা হয়, গত ৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পণ্যের জন্য নানাভাবে যোগাযোগ করেও ব্যর্থ হই। ৯ সেপ্টেম্বর সশরীরে ইভ্যালির ধানমন্ডির অফিসে উপস্থিত হয়ে পণ্য ডেলিভারির ব্যাপারে জানতে চাইলে তারা আমাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে। একপর্যায়ে ইভ্যালির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ রাসেল আমাদেরকে হুমকি-ধমকি দেন। পণ্য বা টাকা-কোনোটিই দেওয়া হবে না বলে চিৎকার করতে থাকেন।
নয়া শতাব্দী/এম
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ