ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৪, ১৫ কার্তিক ১৪৩১, ২৭ রবিউস সানি ১৪৪৬

চিঠিতে ‘আশা’ রাখার বার্তা লিখে নুবায়শার বিশ্বজয়

প্রকাশনার সময়: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৫:৫৩

বিশ্বে করোনা নামক মহামারি চলছে। শুরুতে মহামারিতে অনেকটা স্তব্ধতা বিরাজ করে। চারপাশে ভয়, মানুষের মাঝে ছিলো আতঙ্ক। আর এই ভয় ও আতঙ্কের মাঝে আশা রাখার বার্তা দিলো ইংরেজিতে লেখা একটি চিঠি। এ চিঠি লিখে বিশ্বের বুকে সেরা হওয়ার গৌরব অর্জন করল অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী নুবায়শা ইসলাম।

বিশ্ব ডাক সংস্থার (ইউপিইউ) ৫০তম চিঠি লেখা প্রতিযোগিতায় ১ দশমিক ২ মিলিয়ন প্রতিযোগীর মাঝে প্রথম হওয়া নুবায়শা ইসলাম সিলেট নগরীর শাহী ঈদগাহ এলাকার বাসিন্দা। তার গ্রামের বাড়ি হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার ধর্মগড় ইউপির আমবাড়িয়া এলাকায়।

নুবায়শা বাংলাদেশ ব্যাংক সিলেটের যুগ্ম পরিচালক মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম এবং সিলেট গ্রামার স্কুলের শিক্ষিকা জেসমিন আক্তার দম্পতির মেয়ে। বর্তমানে সে পড়ালেখা করছে আনন্দনিকেতন স্কুলে।

তবে নুবায়শার চিঠি লেখা প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করা এটিই প্রথম না। গেলো বছরও সে একই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে ভালো করতে পারেনি।

মুঠোফোনে নুবায়শা নয়া শতাব্দীকে জানায়, তার এ অর্জন সে উৎসর্গ করতে চায় সিলেটের গ্রামার স্কুলের প্রয়াত প্রধান শিক্ষক শিরাজুল ইসলাম ফারুককে।

নুবায়শা বলে, আমি আগে যখন গ্রামার স্কুলে পড়তাম তখন স্যার আমাকে দিয়ে অনেক ভালো ভালো বিষয় লেখাতেন। সেখান থেকেই আমার লেখার প্রতি আগ্রহ তৈরি। এখন আমি আনন্দনিকেতন স্কুলের ছাত্রী। স্যার দুই বছর আগে মারা গেছেন। কিন্তু কৃতিত্ব স্যারের।

চিঠি লিখায় আগ্রহ কি করে জানতে চাইলে সে বলে, ২০১৬ সালের আমার স্কুলের এক আপু ওই প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিলেন। তখন উনি শান্তনা পুরস্কার পান। উনাকে দেখেই আমার আগ্রহটা হয়। এর পর আমি গেলো বছর অংশগ্রহণ করেছিলাম। এবার আমি বিশ্বের সেরা হই।

চিঠিতে কি লিখেছিলা জানতে চাইলে নুবায়শা বলে, ‘লেখার বিষয় ছিল কোভিড-১৯। আর লিখতে হবে পরিবারের কোন সদস্যের উদ্দেশ্যে। তাই আমি আমার অনাগত কাল্পনিক বোনকে আশা রাখার কথা বলেছিলাম। বলেছিলাম এখন চারপাশে ভয় কাজ করছে। কিন্তু আমাদের আশা ছাড়লে হবে না।’

এর আগে গত ২৭ আগস্ট আইভরি কোস্টের আবিদজানে অনুষ্ঠিত কংগ্রেসে বিশ্বের মাঝে প্রথম স্থান অর্জনকারী হিসেবে তার নাম ঘোষণা করেন ইউপিইউ’র মহাপরিচালক বিশার এ হোসেইন। তাই ১৪ বছর বয়সী নুবায়শা ইসলাম সুইজারল্যান্ডে গিয়ে পুরস্কার গ্রহণ করবে।

নুবায়শার এমন অর্জনে গর্বিত তার পরিবার। তার বাবা মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমার একমাত্র মেয়ে নুবায়শা। তার এ অর্জনে বিশ্বের বুকে বাংলাদেশের সুনাম হয়েছে এতে আমি আনন্দিত।’

তবে একসময় চিঠি যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম ছিলো জানিয়ে এটিকে বর্তমান প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দিতে এমন আয়োজনের ব্যাপক প্রচার প্রয়োজন বলে মনে করেন নুবায়শার বাবা শফিকুল ইসলাম।

তিনি বলেন, গত ২৭ আগস্ট ঘোষণা হয়েছে। কয়েকদিন আগে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তফা জব্বার মহোদয় তাকে অভিনন্দন জানিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন। এটা সকলের নজরে এসেছে অনেক পর। কিন্তু কাজটি মূলত পোস্ট অফিসের। এটা তাদের অনেক বড় অর্জন। তাই তাদের উচিত ছিলো এটা গণমাধ্যমকে জানানো। তাছাড়া প্রতি বছরই এই আয়োজন হয়। কিন্তু কেউ তেমন জানে না। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ব্যাপক প্রচার হলেও আমাদের দেশে প্রচার হয় না। ব্যাপক প্রচার হলে প্রতিযোগি আরও বাড়বে। এতে দেশের জন্য ভালো।

নয়া শতাব্দী/জেআই

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ