বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ‘গ্রহণযোগ্যতা’ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ বেশ কয়েকটি পশ্চিমা দেশ। অথচ সেই দেশগুলোই দেখা যাচ্ছে এখন নতুন সরকারকে অভিনন্দন জানাচ্ছে। তাদের এই 'অভিনন্দন' ঠিক কী বার্তা বহন করছে?
বিশ্লেষকদের অনেকেই একে নিছক 'কূটনৈতিক শিষ্টাচারের অংশ' হিসেবেই দেখছেন। সরকারকে অভিনন্দন জানানোর ফলে নির্বাচন নিয়ে দেশগুলোর পর্যবেক্ষণ বা অবস্থানে কোনও পরিবর্তন আসবে বলেও মনে করছেন না তারা। ফলে তারা মনে করছেন, যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসা এবং শ্রমনীতিকে ঘিরে তৈরি হওয়া উদ্বেগ থেকেই যাচ্ছে।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও নির্বাচন নিয়ে গত বছরের মাঝামাঝি সময় থেকেই বেশ সরব দেখা যাচ্ছিলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নকে। সব দলের অংশগ্রহণে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের তাগিদ দিয়ে আসছিল তারা।
কিন্তু তাদের এই দাবি উপেক্ষা করে বিএনপি ও তাদের সমমনা দলগুলোকে বাদ দিয়েই চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। বিএনপি-বিহীন এই নির্বাচনে নিরঙ্কুশ বিজয় অর্জন করে টানা চতুর্থ মেয়াদে ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ। নির্বাচনের পর দিনই চীন, রাশিয়া, ভারত-সহ অনেক দেশ আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানায়। কিন্তু পশ্চিমা দেশগুলোকে তখন ভিন্ন অবস্থানে দেখা যায়। অভিনন্দন জানানোর বদলে তারা আলাদা বিবৃতি দিয়ে জানায় যে, নির্বাচন “অবাধ ও সুষ্ঠু হয়নি”।
কিন্তু এর সপ্তাহখানেক পরেই দৃশ্যপটে হঠাৎ পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। দেখা যায়, সমালোচনাকারী পশ্চিমা দেশগুলো, এমনকি জাতিসংঘও বাংলাদেশের নতুন সরকারকে অভিনন্দন জানাচ্ছে।
বাংলাদেশের গত ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের দিকে বেশ ভালোভাবেই নজর রেখেছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। নির্বাচনের পর দিন, অর্থাৎ ৮ জানুয়ারি প্রকাশিত এক বিবৃতিতে সদ্য সমাপ্ত নির্বাচন নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানায় দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ওই বিবৃতিতে বলা হয়, “যুক্তরাষ্ট্র লক্ষ্য করেছে, ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সর্বোচ্চ সংখ্যক আসন নিয়ে জয়ী হয়েছে। তবে হাজারো বিরোধী রাজনৈতিক কর্মীর গ্রেফতার এবং নির্বাচনের দিনে বিভিন্ন জায়গায় নানা ধরণের অনিয়মের খবরে যুক্তরাষ্ট্র উদ্বিগ্ন।”
সেই সঙ্গে , বাংলাদেশের এই নির্বাচন “অবাধ ও সুষ্ঠু ছিল না” বলে অন্য পর্যবেক্ষকদের প্রতিক্রিয়ার সাথে যুক্তরাষ্ট্র একমত বলে বিবৃতিতে জানানো হয়। এছাড়া নির্বাচনে সব দল অংশগ্রহণ না করায় হতাশা প্রকাশ করে যুক্তরাষ্ট্র।
নয়া শতাব্দী/আরজে
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ