ঢাকা, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা শুরু রোববার, উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশনার সময়: ১৯ জানুয়ারি ২০২৪, ১৮:১০ | আপডেট: ২০ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:০৩

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কারণে কিছুটা বিলম্ব হওয়ায়, রোববার (২১ জানুয়ারি) শুরু হতে যাচ্ছে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার ২৮তম আসর। এদিন সকাল ১০টার দিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বশরীরে এসে মাসব্যাপী এ মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন।

এদিকে শেষ মুহূর্তে স্টল নির্মাণ সম্পন্ন করতে সকাল থেকে রাত অবধি কর্মব্যস্ত সময় পার করছেন স্টল তৈরির কারিগররা। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে স্টল তৈরির কাজ শেষ করতে পারবেন বলে আশা করছেন দোকান মালিকরা।

এদিকে প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষ্যে সর্বাত্মক নিরাপত্তার সব ধরণের প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে জন্য কাজ করে যাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ও মেলা কর্তৃপক্ষ। মেলা চলাকালীন যাতে কোনো প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে, সেজন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি প্রস্তুত বিপুল সংখ্যক সেচ্ছাসেবক।

সরেজমিনে ঘুরে জানা যায়, রাজধানীর উপকণ্ঠ নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের পূর্বাচলে স্থায়ী ভেন্যু বঙ্গবন্ধু চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে রোববার থেকে তৃতীয়বারের বসতে যাচ্ছে মাসব্যাপী ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা। এদিন সকাল ১০টার দিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিকভাবে ২৮তম এই মেলার উদ্বোধন ঘোষণা করবেন। এজন্য সব ধরণের প্রস্তুতি নিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো।

এবারের মেলায় সরকারের উন্নয়নমূলক চিত্র তুলে ধরতে বঙ্গবন্ধু টানেলের আদলে নির্মাণ করা হয়েছে প্রধান প্রবেশদ্বার। পাশাপাশি তুলে ধরা হয়েছে রূপপুর পারমাণবিক বিদুৎকেন্দ্র, মেট্রোরেল, পদ্মা সেতু, শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ৩য় টার্মিনালসহ বিভিন্ন উন্নয়ন চিত্র।

মেলায় এবার বঙ্গবন্ধু কর্ণারটি নির্মাণ করা হয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের স্মৃতি বিজড়িত ধানমন্ডি ৩২ নম্বর বাড়ির আদলে। সেখানে থাকবে বঙ্গবন্ধুর জীবনীসহ দেশের স্বাধীনতার ইতিহাস ও ঐতিহ্য নিয়ে লেখা বিভিন্ন বই। এবারের মেলায় ১০ ক্যাটাগরিতে থাকছে ৩৫০টি স্টল। থাকছে ভারত, তুরস্কসহ ১২টি দেশের অংশগ্রহণে বিভিন্ন ধরনের স্টল।

স্টল নির্মাণ দ্রুত শেষ করতে সকাল থেকে গভীর রাত অবধি ব্যস্ত সময় পার করছে কারিগররা। কিছু কিছু স্টলে চলছে রং দেয়ার কাজ। কোনো কোনো স্টল সাজানো হচ্ছে পণ্যসামগ্রী দিয়ে। বেশিরভাগ স্টল নির্মাণের কাজ শেষ পর্যায়ে। মেলার উদ্বোধনের আগেই মালিকপক্ষকে পুরোপুরি নির্মিত স্টল হস্তান্তর করতে পারবেন বলে জানিয়েছেন নির্মাণ কাজের ঠিকাদার ও কারিগররা।

এদিকে মেলায় আগত শিশুদের জন্য থাকছে একটি অত্যাধুনিক শিশু পার্ক। মেলায় যেন কোনো প্রকার সমস্যার সৃষ্টি না হয়, সেজন্য সিসি ক্যামেরার পাশাপাশি থাকছে ৫টি ওয়াচ টাওয়ার। রাজধানী প্রবেশদ্বার কুড়িল থেকে বাণিজ্য মেলায় আসা-যাওয়ার জন্য শেখ হাসিনা সরণি সড়কটি পুরোপুরি খুলে দেওয়ায় রাজধানীসহ আশেপাশের দর্শনার্থীরা নির্বিঘ্নে যাতায়াত করতে পারবেন এবারের মেলায়।

এবছর মেলায় বড়দের প্রবেশের টিকেটের মূল্যে নির্ধারণ করা হয়েছে ৫০ টাকা ও শিশুদের জন্য টিকেটের মূল্যে ২০-২৫ টাকা। মেলা প্রতিদিন খোলা রাখা হবে সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত। ছুটির দিন খোলা থাকবে সকাল ৯টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবারের মেলায় দর্শনার্থীর সংখ্যাও বেশি হবে বলে ধারণা করছেন মেলা কর্তৃপক্ষ।

রূপগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও মেলার গেইট ইজারাদার প্রতিষ্ঠান আব্দুল্যাহ এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী ছালাউদ্দিন ভূইয়া বলেন, বাণিজ্যমেলা রূপগঞ্জে হওয়ায় এ এলাকার মানুষ অনেকদিক দিয়ে বেশ উপকৃত হয়। মেলার কারণে এলাকার বেকার মানুষ কিছুদিন হলেও একটা কর্মসংস্থানের সুযোগ পায়। এলাকার বাজারগুলোতে বেচাকেনা বেশ বাড়ে। বিশেষকরে অর্থনৈতিক দিক দিয়ে সামগ্রিকভাবে অত্র এলাকা বেশ সুবিধা ভোগ করে। অন্যান্য বছরের ন্যায় এবারও মেলায় দর্শনার্থীদের যেন কোনো প্রকার সমস্যার সম্মুখীন না হতে হয়, সেজন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি থাকছে বিপুল সংখ্যক সেচ্ছাসেবক।

নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবির হোসেন বলেন, মেলায় যাতে আইনশৃঙ্খলার কোনোপ্রকার অবনতি না ঘটে, সেজন্য মোতায়েন থাকবে বিপুল সংখ্যক পুলিশসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য। তারা সার্বক্ষণিক মেলায় আগত দর্শনার্থী ও ব্যবসায়ীরা যাতে কোনো সমস্যা বা হয়রানীর শিকার না হয়, সেদিকে বিশেষ নজর রাখবেন।

মেলার আয়োজক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর সচিব বিবেক সরকার বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কারণে মেলা কিছুটা বিলম্বে শুরু হলেও অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার মেলায় দর্শনার্থীর উপস্থিতি বেশি হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোববার সকাল ১০টায় এ মেলার উদ্বোধন করবেন। রাজধানী থেকে মেলায় যাতে দর্শনার্থীরা আসতে পারে, সেজন্য প্রতিদিন ৫০টি বিআরটিসি শাটল বাস সার্ভিস চলাচল করবে।

কোনো প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই ভালোভাবে মেলা সম্পন্ন করতে পারবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

নয়া শতাব্দী/এনএস

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ