ঢাকা, শনিবার, ৬ জুলাই ২০২৪, ২২ আষাঢ় ১৪৩১, ২৯ জিলহজ ১৪৪৫

শেষ হলো হজ নিবন্ধন, ফাঁকা ৭৪ হাজার কোটা

প্রকাশনার সময়: ১৮ জানুয়ারি ২০২৪, ২২:২৮

দুই দফা সময় বাড়ানোর পর বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) শেষ হলো হজের নিবন্ধন। তবে প্রায় ৭৪ হাজার ৮৩ জন বা ৫৮ শতাংশ কোটা এখনো খালি রয়ে গেছে।

বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) হজ নিবন্ধনের শেষে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বিশ্বের অধিকাংশ দেশ তাদের হজযাত্রীর সংখ্যা জানিয়ে দিয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশ এখনো জানাতে পারেনি। হজযাত্রীর সংখ্যা চূড়ান্ত না হওয়ায় বাংলাদেশের নামে মিনায় তাবু বরাদ্দ হয়নি। সংখ্যা জানাতে আরও দেরি করলে মিনায় অনেক দূরে তাবু নিতে হবে, যা হজযাত্রীদের ভোগান্তির কারণ হবে। তাই নিবন্ধনের সময় আরও বাড়ানো সম্ভব নয়।

একই সঙ্গে, কোটার বড় অংশ খালি থাকায় পরবর্তী বছরগুলোতে কোটা পাওয়ার ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে বলেও জানিয়েছেন ধর্ম মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।

চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী বছরের ১৬ জুন (১৪৪৫ হিজরি সনের ৯ জিলহজ) পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে। গত বছরের মতো এবারও বাংলাদেশ থেকে এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজ করতে পারবেন। এরমধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ১০ হাজার ১৯৮ জন ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় এজেন্সির মাধ্যমে এক লাখ ১৭ হাজার জন হজ পালন করতে পারবেন। চলতি বছর হজ পালনে সৌদি সরকারের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি হয় গত ৮ জানুয়ারি।

গত বছরের ১৫ নভেম্বর থেকে হজযাত্রী নিবন্ধন শুরু হয়। প্রথমে নিবন্ধনের সময় ছিল ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত। পরে নিবন্ধনের সময় ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়। হজযাত্রীদের সাড়া না পাওয়ায় সর্বশেষ নিবন্ধনের সময় বাড়িয়ে ১৮ জানুয়ারি করা হয়।

সর্বশেষ বৃহস্পতিবার রাত ৮টার হজ পোর্টালের তথ্য অনুযায়ী, মোট ৫৩ হাজার ১১৫ জন হজযাত্রী নিবন্ধন সম্পন্ন করেছেন। এরমধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৩ হাজার ৮০২ জন ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৪৯ হাজার ৩১৩ জন।

সেই অনুযায়ী কোটার ৪২ শতাংশ হজযাত্রী নিবন্ধন করেছেন। এখনো ৭৪ হাজার ৮৩ জন নিবন্ধন করেননি। অর্থাৎ কোটার ৫৮ শতাংশ খালি রয়েছে।

এ বিষয়ে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মু. আ. হামিদ জমাদ্দার বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় বলেন, হজের নিবন্ধন আজকেই শেষ। সিদ্ধান্ত হয়েছে নিবন্ধনের আর সময় দেবো না। আমরা কোটা সারেন্ডার করে দেবো।

তিনি বলেন, সৌদি আরবে আমরা ডিফল্টার। তারা সব দেশকে বলেছে, তোমরা হজযাত্রীর সংখ্যা জানাও। আমরা হজযাত্রীর সংখ্যা জানাতেই পারছি না। নিবন্ধনের সময় বাড়ালে আমি মিনায় আর জায়গাই পাবো না। পরে সবাই গালাগালি করবে, সরকার আমাদের দূরে রেখেছে, কষ্ট দিয়েছে।

সচিব বলেন, ‘ভারত, পাকিস্তান, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া মিনায় জায়গা বুক করে ফেলেছে। আমরাই একমাত্র দেশ যারা এখনো হজযাত্রীদের সংখ্যা জানাতে পারিনি।’

তিনি বলেন, ১৮ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় দিয়েছি। আর না। যা হয় হবে। আমরা আগামী সপ্তাহে সৌদি আরবকে হজযাত্রীর সংখ্যা জানিয়ে দেবো।

কোটার চেয়ে এত কম হজযাত্রী পাঠালে পরবর্তী সময়ে কোটা পেতে সমস্যা হবে কি না, জানতে চাইলে মু. আ. হামিদ জমাদ্দার বলেন, আগামী বছর একটু প্রভাব পড়বে। আমরা তাদের সঙ্গে আলোচনা করবো। সরকার-তো টাকা দিয়ে হজযাত্রী পাঠাতে পারবে না। এটি ধর্মীয় বিষয়।

‘আমরা নভেম্বর থেকে নিবন্ধন শুরু করেছি। সময় দু-বার বাড়িয়েছি। রেডিও, টেলিভিশন, পত্রিকায় আমরা নিবন্ধন করার জন্য বলেছি। আমরা হজের খরচও গতবছরের চেয়ে এবার কমিয়ে দিয়েছি’ বলেন হামিদ জমাদ্দার।

ধর্ম মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আনুষ্ঠানিকভাবে না হলেও অনানুষ্ঠানিকভাবে আরও কিছু হজযাত্রীর নিবন্ধন হতে পারে। অনেকে হয়তো টাকা জমা দিয়েছে। পোস্টিং হতে সময় লাগছে। নিবন্ধনকারী হজযাত্রীর সংখ্যা আরও কিছুটা বাড়বে।

এবার সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজে যাওয়ার দুটি প্যাকেজ নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে সর্বনিম্ন প্যাকেজের মূল্য ৫ লাখ ৭৮ হাজার ৮৪০ টাকা। আর বিশেষ প্যাকেজের মূল্য ৯ লাখ ৩৬ হাজার ৩২০ টাকা।

অপরদিকে, বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় দুটি প্যাকেজের মূল্য যথাক্রমে ৫ লাখ ৮৯ হাজার ৮০০ টাকা এবং ৮ লাখ ২৮ হাজার ৮১৮ টাকা। যদিও গত বছরের চেয়ে এ বছর সর্বনিম্ন প্যাকেজের মূল্য ১ লাখ ৪ হাজার ১৬০ টাকা কমানো হয়েছে, তবুও বর্তমান হজ প্যাকেজের মূল্যকে অনেক বেশি মনে করছেন হজে যেতে আগ্রহীরা।

সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনার সব হজযাত্রীকে কুরবানির খরচ আলাদা করে নিতে হবে।

নয়া শতাব্দী/এসআর

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ