বাংলাদেশের সর্বকনিষ্ঠ সংসদ সদস্য হয়ে রেকর্ড গড়লেন আজিজুল ইসলাম খন্দকার আজিজ। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যশোর-৬ (কেশবপুর) সংসদীয় আসন থেকে বেসরকারিভাবে ৯ হাজার ৫৭৫ ভোটের ব্যবধানে ঈগল প্রতীকে বিজয়ী হয়েছেন তিনি। সার্টিফিকেট অনুযায়ী বর্তমানে তিনি ২৮ বছরের যুবক।
নৌকা প্রতীকে লড়াই করা যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সদ্য সাবেক সংসদ সদস্য শাহীন চকলাদার এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও দুবারের উপজেলা চেয়ারম্যান এইচএম আমির হোসেনের মতো হেভিওয়েট প্রার্থীদের হটিয়ে দিয়ে চমকে দিয়েছেন তিনি।
বয়সে ছোট হওয়ার কারণে ছিলেন না আলোচনায়। কিন্তু গণমানুষের নেতা হয়ে ওঠার চেষ্টাই তাকে জিতিয়ে দিয়েছে বলে দাবি স্থানীয়দের। আগে ছাত্র রাজনীতি করেছেন। ছিলেন জেলা পরিষদ সদস্য।
রোববার (৭ জানুয়ারি) অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আজিজুল ইসলাম খন্দকার আজিজের প্রতীক ছিল ঈগল। তিনি পেয়েছেন ৪৮ হাজার ৯৪৭ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী শাহীন চাকলাদারের ভোট ৩৯ হাজার ২৬৯টি। এইচএম আমির হোসেন পেয়েছেন ১৭ হাজার ২০৯ ভোট।
উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক আজিজুল ইসলাম মাত্র ২৭ বছর বয়সে জেলা পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। ২৮ বছর ৮ মাস ২৩ দিন বয়সে হলেন সংসদ সদস্য। জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী তার জন্ম তারিখ ১৯৯৫ সালের ১৫ এপ্রিল। তার বাড়ি কেশবপুর পৌরসভার ব্রহ্মকাটি গ্রামে। পিতা খন্দকার রফিকুজ্জামান ও মাতা ফরিদা বেগমের ৯ সন্তান। চার ভাই ও পাঁচ বোনের মধ্যে এমপি আজিজ সবার ছোট।
আপনার স্বপ্ন কি জানতে চাইলে আজিজ বলেন, আমার স্বপ্ন আজীবন মানুষের কল্যাণে কাজ করা এবং নিজেকে মানবসেবায় নিয়োজিত রাখা।
অনেকের ধারণা ছিল, স্বতন্ত্র প্রার্থী এইচএম আমির হোসেনের সঙ্গে হাড্ডাহাড্ডি প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে তার। কিন্তু ফলাফলে দেখা যায়, হেভিওয়েট প্রার্থী শাহীন চাকলাদারের সঙ্গে খন্দকার আজিজের প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়েছে।
হেভিওয়েট প্রার্থীকে হেরে যাওয়ার কারণ জানতে চাইলে এলাকাবাসী জানান, শাহীন চাকলাদার বহিরাগত এবং তাদের চাহিদা পূরণে ব্যর্থ হওয়ায় এবার তারা নতুন মুখ বেছে নিয়েছেন। কেশবপুরবাসীর পাশে থাকার আশ্বাস দিয়ে আজিজুল ইসলাম জানান, তিনি এলাকবাসীর এমন ভালোবাসায় অভিভূত।
সর্বকনিষ্ঠ এমপি হওয়ার অনুভূতি জানতে চাইলে তিনি বলেন, নিজেকে ধন্য মনে করছি। এটা খুবই আনন্দের। জয়ের ব্যাপারে আমার শতভাগ বিশ্বাস ছিল। তবে ফলাফল ঘোষণার পরে বুঝতে পেরেছি মানুষ আমাকে কত বড় সম্মান দিলেন। আমি সারাজীবন কেশবপুরবাসীর কাছে কৃতজ্ঞ থাকব। তাদের পাশে থাকতে চাই। বিশেষ করে কৃষক, ভ্যানচালক থেকে শুরু করে খেটে খাওয়া মানুষের কাছে আমি ঋণী। তাদের প্রতি সীমাহীন কৃতজ্ঞতা। আমি যত বড়ই হই না কেন তাদের যেন ভুলে না যাই। সে জন্য দোয়া করবেন।
এ ছাড়া তিনি আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও নির্বাচনি এলাকার ভোটার, নির্বাচনি দায়িত্বে নিয়োজিত সব কর্মকর্তাদের ও গণমাধ্যমের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। সবশেষে কেশবপুরবাসী যে তার ওপর আস্থা রেখেছেন সে জন্য আরেকবার ধন্যবাদ জানান।
নয়া শতাব্দী/এসএ
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ