রাজধানী বাড্ডার একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে খৎনা করাতে এসে প্রাণ হারালো পাঁচ বছরের শিশু আয়ানকে।
টানা ৭ দিন লাইফ সাপোর্টে থেকে রোববার (৭ জানুয়ারি) রাত ১১টা ৫০ মিনিটে রাজধানীর গুলশান-২ ইউনাইটেড হাসপাতালে শিশুটির মৃত্যু হয়।
সোমবার (৮ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ১২টায় আয়ানের বাবা শামীম আহমেদ ও চাচা জামিল খান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
জামিল খান বলেন, এখনো কোনো কিছু ঠিকভাবে জানায়নি হাসপাতাল থেকে। শুধু জানিয়েছে সে মারা গেছে। আমরা হাসপাতালের বিরুদ্ধে মামলা করব।
ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জনসংযোগ কর্মকর্তা আরিফুল হক বলেন, আয়ানের মৃত্যু হয়েছে বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। এ বিষয়ে মঙ্গলবার (২ জানুয়ারি) একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি এখনও কোনো প্রতিবেদন দেয়নি।
এর আগে গত ৫ জানুয়ারি শিশুটির বাবা শামীম আহমেদ জানিয়েছিলেন, আয়ান তাদের পরিবারের বড় ছেলে। তার ৬ মাসের ছোট একটা বোন আছে। আয়ানের মা কান্নাকাটি করতে করতে নিজেও অসুস্থ প্রায়। এই ঘটনায় পুরো পরিবারে অন্ধকার নেমে এসেছে।
জানা গেছে, গত ৩১ ডিসেম্বর সুন্নতে খৎনা করানোর জন্য শিশু আয়ানকে আনা হয় রাজধানীর ভাটারায় মাদানী এভিনিউতে অবস্থিত ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানকার চিকিৎসক তাকে অস্ত্রোপচারের আগে চেতনানাশক ওষুধ (অ্যানেসথিসিয়া) দেন। কিন্তু এরপর আয়ানের আর জ্ঞান ফেরেনি। যার ফলে আয়ান বেঁচে আছে, না কি মারা গেছে, তার কোনোটাই শিশুটির অভিভাবককে স্পষ্ট করে বলেনি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এতদিন তাকে হাসপাতালের লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়।
শিশু আয়ান জলসিঁড়ি ক্যান্টনমেন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজের নার্সারিতে পড়ত। তার বাবা শামীম আহমেদ কনকর্ড গ্রুপের সেলস বিভাগের একজন কর্মকর্তা।
আয়ানের চাচা জামিল খান জানান, গত ৩১ ডিসেম্বর সকালে মাদানী এভিনিউতে অবস্থিত ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল আয়ানকে সুন্নতে খৎনা করাতে নিয়ে যায় তার পরিবার। ওইদিনই সকালে ডাক্তারদের পরামর্শে আয়ানকে অ্যানেসথিসিয়া দিয়ে খৎনা করা হয়। ওইদিন সকাল ৯টা থেকে ১২টা পর্যন্ত আয়ানের জ্ঞান না ফেরায়, তার বাবা জোর করে অপারেশন রুমে ঢুকে দেখেন আয়ানকে সিপিআর (কৃত্তিম শ্বাস দেওয়ার প্রক্রিয়া) দেওয়া হচ্ছে। আর বুকের দুই পাশে দুইটা ছিদ্র করা এবং বুকের ভেতরে পাইপ ঢুকানো। এরপর আয়ানের অবস্থা আরও গুরুতর হয়। তাৎক্ষণিক ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গাড়িতে করেই গুলশান-২ এ ইউনাইটেড হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়।
এ বিষয় হাসপাতালের জনসংযোগ কর্মকর্তা আরিফুল হক বলেন, আমরা নিজেদের তত্ত্বাবধানে আয়ানকে গুলশানে ইউনাইটেড হাসপাতলে নিয়ে এসেছি। আনার পর বাচ্চাটির অবস্থা খারাপ হতে থাকে। এরপর আয়ানকে পিআইসিউতে ভর্তি করানো হয়। সেখানে বিশেষজ্ঞ মেডিকেল বোর্ডের অধীনে তার চিকিৎসা চলে।
নয়া শতাব্দী/এনএস
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ