রোববার (৭ জানুয়ারি) সারাদেশে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। দলীয় সরকারের অধীনে আয়োজিত এই ভোটকে ঘিরে সারাদেশে ৪৮ ঘণ্টার হরতালের ডাক দিয়েছে বিএনপি-জামায়াতসহ সমমনা দল ও জোটগুলো।
শনিবার (৬ জানুয়ারি) ভোর ৬টা থেকে এই ৪৮ ঘণ্টার হরতাল শুরু হয়েছে।
নির্বাচন ও বিরোধী দলগুলোর ডাকা হরতালকে কেন্দ্র করে রাজধানীর সড়কে দেখা দিয়েছে গণপরিবহন সংকট। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ মানুষ।
এদিন সকাল ৯টা থেকে ১২টা পর্যন্ত রাজধানীর রামপুরা-বাড্ডা, কুড়িল বিশ্বরোড, খিলখেত, মহাখালী, খামারবাড়ি, ফার্মগেট, কারওয়ানবাজার ঘুরে দেখা যায়, অন্যান্য দিনের তুলনায় সড়কে খুব কম সংখ্যক গণপরিবহন চলাচল করছে। তবে ব্যক্তিগত গাড়ির চলাচল একেবারেই নগণ্য। ফলে বিভিন্ন প্রয়োজনে বের হওয়া মানুষ ও অফিসগামী যাত্রীদের বাসের জন্য বিভিন্ন স্থানে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে।
তবে যানবাহন কম হওয়ায় রাস্তা একেবারে ফাঁকা। কোনোপ্রকার যানজটে দাঁড়াতে হচ্ছে না যানবাহনকে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজধানীর বিভিন্ন কোম্পানির বাস নেওয়া হয়েছে রিকুইজিশনে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই গণপরিবহণের সংকট দেখা দিয়েছে। অন্যদিকে বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোর ডাকা হরতালের কারণেও সড়কে বাস বের করছেন না অনেকে। ফলে দুইয়ে মিলে সড়কে নেই বাস।
রাজধানীর খামারবাড়ি মোড়ে লাব্বাইক ও এসএম লাভলী বাসের চেকার জসিম ও সুমন সংবাদমাধ্যমকে জানান, তাদের মোট ১১০টি বাসের মধ্যে ৭৫-৮০টি বাসই রিকুইজিশনে নেওয়া হয়েছে। ফলে রাস্তায় তাদের তেমন গাড়ি নেই। সকাল থেকে এ পর্যন্ত তারা নিজেরাই গাড়ি পেয়েছেন ১৭টি।
ফার্মগেটে শিকড় পরিবহনের হেলপার সাগর আহমেদ জানান, ভোট ও হরতালের কারণে রাস্তায় তেমন যানবাহন নেই। রাস্তা একেবারে ফাঁকা। যাত্রীও তেমন নেই।
এদিকে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে অনেকেই রাজধানী ত্যাগ করেছেন। ফলে সকালে অফিস টাইমে রাস্তায় যাত্রীর সংখ্যাও অনেক কম। তবে যারা রাজধানীতে আছেন বা বিভিন্ন কাজে বাইরে বের হয়েছেন, গণপরিবহন সংকটের কারণে তাদের ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়েও গন্তব্যে যাওয়ার বাস পাচ্ছেন না অনেকে।
খিলক্ষেত যেতে ফার্মগেট বাসের জন্য অপেক্ষা করছিলেন বেসরকারি চাকরিজীবী মো. ইকরাম। তিনি জানান, অন্যান্য দিন পাঁচ মিনিট দাঁড়ালেই বাস পাওয়া যেত। আজ আধাঘণ্টা দাঁড়িয়ে আছি, কিন্তু বাস নেই৷ একে তো দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে পা ব্যথা হয়ে গেছে। তার ওপর আবার দেরিও হচ্ছে। যদিও রাস্তা ফাঁকা। বাস পেলে বেশি সময় লাগবে না।
এদিকে বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলোর ডাকা ৪৮ ঘণ্টার হরতালকে কেন্দ্রে করে বিভিন্ন সড়কে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সতর্ক অবস্থায় থাকতে দেখা গেছে।
বৃহস্পতিবার (৪ জানুয়ারি) ভোট বর্জনের আহ্বানে এবং সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে সারাদেশে টানা ৪৮ ঘণ্টার হরতালের ঘোষণা দেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। শনিবার (৬ জানুয়ারি) ভোর ৬টায় শুরু হওয়া এই হরতাল চলবে সোমবার (৮ জানুয়ারি) ভোর ৬টা পর্যন্ত।
এদিকে, শুক্রবার (৫ জানুয়ারি) রাত ৯টার দিকে কমলাপুর রেলস্টেশনের পাশে গোপীবাগে বেনাপোল এক্সপ্রেস নামের একটি ট্রেনে আগুন দেওয়রে ঘটনা ঘটেছে।
আগুনে ট্রেনটির ৫ বগি পুড়ে গেছে। আগুনে পুড়ে নিহত হয়েছেন ৪ জন। আহত হয়েছেন আরো অনেকে। একে নাশকতা বলে অভিহিত করছে পুলিশ। এই ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে।
নয়া শতাব্দী/এনএস
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ