দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির উত্তরণে দলের করণীয় সম্পর্কে জ্যেষ্ঠ নেতাদের মতামত নিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
দলের ভাইস চেয়ারম্যান ও উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্যদের সাথে রুদ্ধদ্বার বৈঠকের পর মঙ্গলবার রাতে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর একথা জানান।
এর আগে মঙ্গলবার বিকেল ৪টায় শুরু হওয়া বৈঠক চলে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সেখানে দলের ভাইস চেয়ারম্যান এবং চেয়ারপারসনের উপদেষ্টাদের পাশাপাশি স্থায়ী কমিটির সদস্যরাও অংশ নেন।
বৈঠকে অধিকাংশ নেতা কোনও অবস্থাতেই দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে না যাওয়ার পক্ষে মত দিয়েছেন। দলের কৌশল নির্ধারণের আগে আগামী দিনে আন্দোলনের নেতৃত্ব গড়ে তোলার পরামর্শ দেন। কার্যকর নেতৃত্ব গড়ে তুলতে প্রয়োজনে রাজপথে সক্রিয় নেতাদের সমন্বয়ে তালিকা করার পক্ষে মত দেন তারা।
উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আতাউর রহমান ঢালী বলেন, আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে আন্দোলন গড়ে তোলা, শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচনে না যাওয়ার মত দিয়েছেন নেতারা। দলের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা করেছেন সবাই।
রাত আটটার দিকে বৈঠক থেকে বিরতি নিয়ে বাইরে আসেন উপদেষ্টা কবি আবদুল হাই শিকদার। জানতে চাইলে তিনি বলেন, খুব সিরিয়াস আলোচনা হয়েছে।
দলের একজন উপদেষ্টা বলেন, রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক নানা ব্যর্থতার কথা তুলে ধরে দলের জ্যেষ্ঠনেতাদের উদ্দেশ্য করে অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। খালেদা জিয়ার মুক্তি নিশ্চিত না করা, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠন, দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশগ্রহণসহ কয়েকটি ইস্যুতে বিএনপির কৌশল ভুল ছিলো, বলে জানান তারা। আর এই ভুলের পেছনে শীর্ষনেতাদের ভূমিকাই বড় কারণ বলে জানান তারা।
দলের কয়েকজন উপদেষ্টা ও ভাইস চেয়ারম্যান জানান, আলোচনায় কয়েকটি বিষয় এসেছে। দলের কাউন্সিল প্রসঙ্গ, নেতৃত্ব নবায়ন, ছাত্ররাজনীতি, শ্রমিক রাজনীতিসহ সামগ্রিক রাজনৈতিক সচেতনতা নির্ভর নেতৃত্ব গঠন, অর্থনৈতিক সংকট, বিচার বিভাগ ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উল্লেখযোগ্য। এক্ষেত্রে আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে জাতির সামনে দলীয়ভাবে যে আহ্বান রাখা হবে, সেই বিষয়টিকে মূলকেন্দ্রে রেখেই শীর্ষনেতারা আলোচনা এগিয়ে নেন।
ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী বলেন, হাসিনার অধীনে নির্বাচনে যাওয়া যাবে না। আমাদের বহির্বিশ্বে বন্ধু ও শত্রু চিহ্নিত করতে হবে। তিনি বলেন, আন্দোলনের মূল শক্তি ছাত্র, শ্রমিক ও কৃষক। দলের রণকৌশল তৈরি করতে হবে।
ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, জোটের দরকার নেই। আমরা রাজপথে দাঁড়াতে পারলে সবাই আমাদের সঙ্গে আসবে। শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচনে যাওয়ার আগে রাজপথে আমাদের জিততে হবে।
আজ বুধবার দ্বিতীয় দিনে হবে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব, যুগ্ম মহাসচিব, সাংগঠনিক সম্পাদক, সম্পাদক ও সহ সম্পাদকবৃন্দের সঙ্গে এবং পরদিন বৃহস্পতিবার হবে দলের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতাদের বৈঠক।
উল্লেখ্য, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কারাবন্দি হওয়ার আগে ২০১৮ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সর্বশেষ বৈঠক হযেছিলো।
নয়া শতাব্দী/এমআর
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ