মুন্সীগঞ্জ লঞ্চঘাটের কাছে ঢাকাগামী একটি লঞ্চ থেকে চার শিশুকে ছুঁড়ে মেঘনা নদীতে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
এদের মধ্যে দুই শিশুকে নদী থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। পরে তাদেরকে তাদের অভিভাবকের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তাদের সাথে থাকা আরো দুই শিশুও উদ্ধার হয়েছে বলে জানতে পেরেছে পুলিশ।
নৌপুলিশ জানান, তারা লঞ্চটির ক্রুদের আটকের জন্য অভিযান চালাচ্ছে।
এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত অবশ্য পুলিশ লঞ্চটির কোন হদিস পায়নি।
গজারিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রইছ উদ্দিন বলেন, শনিবার মুন্সীগঞ্জ লঞ্চ টার্মিনাল থেকে কিছু দূরে মেঘনা নদীর মাঝখান থেকে ভাসমান অবস্থায় দুই শিশুকে উদ্ধার করেন তিনি ও তার সহকর্মীরা।
উদ্ধার হওয়া ওই শিশু দুই জনের বক্তব্যের বরাত দিয়ে রইছ উদ্দিন জানান, তাদেরকে একটি লঞ্চ থেকে ছুঁড়ে পানিতে ফেলে দেওয়া হয়েছে।
কী ঘটেছিল?
গজারিয়া থানার ওসি রইছ উদ্দিন জানান, শনিবার সকাল ১১ টার দিকে সরকারি একটি স্পিডবোটে গজারিয়া থেকে মুন্সীগঞ্জের দিকে যাচ্ছিলেন তিনি।
মুন্সীগঞ্জ লঞ্চ টার্মিনাল থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে ঢাকার দিকে দুটি শিশুকে সাঁতার কাটতে দেখেন তিনি। সেসময় তারা উদ্ধারের জন্য চিৎকারও করছিল।
এমন অবস্থায় রইছ উদ্দিন স্পিডবোট নিয়ে গিয়ে তাদের উদ্ধার করেন। তবে উদ্ধারের আগে শিশু দুইজন কতক্ষণ পানিতে ছিলেন সে বিষয়ে জানাতে পারেননি।
ওই শিশু দুজনের বয়স ১২-১৩ বছর হবে বলে জানান তিনি।
উদ্ধার করার পর শিশু দুজন ওই পুলিশ কর্মকর্তাকে জানায়, তারা ফেরিতে পানি বিক্রি করে। তারা পরিবারের সাথে ঢাকাতেই থাকে। মুন্সীগঞ্জ থেকে ঢাকাতে ফেরার জন্য তারা একটি লঞ্চে ওঠে। তবে তাদের কাছে ভাড়ার জন্য কোন টাকা না থাকায় লঞ্চের কর্মীরা তাদের পানিতে ফেলে দেয়।
ওসি বলেন, শিশু দুজনার এই বক্তব্য খতিয়ে দেখা সম্ভব হয়নি।। এজন্য লঞ্চটির ক্রুদের জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন।
নৌপুলিশের সহায়তায় লঞ্চটিকে আটক করতে তারা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানান তিনি।
যে দুই শিশুকে পুলিশ উদ্ধার করেছে, তারা পুলিশকে জানিয়েছে, তাদেরকে যখন লঞ্চের ছাদ থেকে ফেলে দেওয়া হয় তখন তাদের সাথে আরো দুই শিশু ছিল।
ওই দুই শিশুর বিষয়ে পুলিশ জানায় যে, তাদেরকে গজারিয়া থানার পুলিশ উদ্ধার করেনি।
রইছ উদ্দিন জানান, তারা জানতে পেরেছেন যে, চার শিশুই শেষমেষ জীবিত উদ্ধার হয়েছে। তবে কারা, কীভাবে বাকি দুই শিশুকে উদ্ধার করেছে তা তারা জানতে পারেননি।
উদ্ধারের পর পুলিশ শিশুদেরকে ঢাকাগামী আরেকটি লঞ্চে তুলে দেয়। বর্তমানে তারা ঢাকাতে তাদের পরিবারের সাথে রয়েছে বলে জানানো হয়।
গজারিয়া থানার ওসি আরও বলেন, ভাড়া না থাকায় কোন যাত্রী বা শিশুদের মাঝ নদীতে ফেলে দেওয়ার ঘটনা এর আগে আর কখনো শোনেননি তিনি।
এ বিষয়ে নৌপুলিশ একটি সাধারণ ডায়েরি করেছে। গজারিয়া থানায়ও পৃথক একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন ওসি রইছ উদ্দিন। সূত্র: বিবিসি বাংলা
নয়া শতাব্দী/এম
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ