ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১, ১৫ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

পণ্য ডেলিভারির পর টাকা পাবে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান

প্রকাশনার সময়: ২৪ জুন ২০২১, ১৭:৪০ | আপডেট: ২৪ জুন ২০২১, ১৭:৪৭
প্রতীকী ছবি

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (মহাপরিচালক, ডাব্লিউটিও সেল) হাফিজুর রহমান বলেছেন, ইভ্যালিসহ ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলো এখন থেকে ক্রেতাদের কাছে পণ্য ডেলিভারির পরই টাকা পাবে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষের সভাপতিত্বে ‘ডিজিটাল কমার্স পরিচালনা’ বিষয়ে সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা শেষে মহাপরিচালক হাফিজুর রহমান এসব তথ্য জানান।

তিনি বলেন, শিগগিরই বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে একটি এসওপি সার্ভিস ডেভেলপ করা হবে। যাতে পণ্য ডেলিভারির আগে পেমেন্ট নেয়া না হয়। ব্যাংক বা ক্রেডিট কার্ড যাদের আছে, তারা পেমেন্ট কন্ট্রোল করবে।

সচিব আরো বলেন, পেমেন্ট দেয়ার পর পণ্য ডেলিভারি হলে তারা যদি মেসেজ পায়, তারপর সেই পেমেন্ট কনফার্ম করবে।

উল্লেখ্য, সম্প্রতি ইভ্যালি, আলেশা মার্ট, ই-অরেঞ্জ, ধামাকা শপিং, সিরাজগঞ্জ শপিং, আলাদিনের প্রদীপ, বুম বুম, কিউকম, আদিয়ান মার্ট ও নিডস ডট কম বিডি ই-কমার্সের সঙ্গে ক্রেডিট, ডেবিট ও প্রি-পেইড কার্ডের লেনদেন বন্ধ করে দেশের তিনটি ব্যাংক।

ব্যাংকগুলো হলো- ব্যাংক এশিয়া, ঢাকা ব্যাংক ও ব্র্যাক ব্যাংক। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ব্যাংক এশিয়া ও ঢাকা ব্যাংকের কার্ড বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, এটি সাময়িক পদক্ষেপ।

এর আগে এই ১০টি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান থেকে পণ্য ক্রয় ও টাকা লগ্নির ক্ষেত্রে সবাইকে সতর্ক থাকতে বলেছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।

ব্যারিস্টার সুমন বলেন, লোভে পাপ, পাপে মৃত্যু। আমি আজ ই-কমার্স নিয়ে কথা বলতে চাই। ইভ্যালি, ধামাকার মতো ই-কমার্স কোম্পানি আছে, তাদের বিষয়ে কথা বলব। আমরা অনলাইনে তাদের কাছ থেকে পণ্য কিনি, কম টাকায়। তারা কম টাকায় বেশি দামের পণ্য দিচ্ছে। আমি বলতে চাই, এদের নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের একটা তদন্ত রিপোর্ট এসেছে।

যেখানে দেখা যাচ্ছে, ইভ্যালির মোট সম্পদের চেয়ে সাড়ে ৬ গুণ বেশি দেনা আছে মার্কেটে। মানে ইভ্যালির যে সম্পদ আছে তার থেকে ঋণ আছে সাড়ে ৬ গুণ বেশি। প্রায় ৪০০ কোটি টাকার মতো ঋণ আছে তাদের। অথচ মাত্র ৬০-৬৪ কোটি টাকার মতো সম্পদ আছে কোম্পানিটির। আর ব্যাংক অ্যাকাউন্টে মাত্র আড়াই কোটি টাকার মতো আছে।

তিনি বলেন, ব্র্যাক ব্যাংক দেখলাম ইভ্যালি, ধামাকাসহ ১০টা কোম্পানির নাম বলে দিয়েছে। সেসব ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান থেকে পণ্য কেনার ক্ষেত্রে ব্র্যাক ব্যাংক তাদের কোনো ক্রেডিট কার্ডই ব্যবহার করতে দেবে না। এর মানে ব্যাংকিং কোম্পানি যারা আছে তারা বুঝে গেছে, এসব ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান বেশিদিন টিকে থাকবে না। ওইসব প্রতিষ্ঠানের মাইর খাওয়ার সম্ভাবনা বেশি। যারাই এসব প্রতিষ্ঠানে টাকা ইনভেস্ট করবেন, তাদের বিপদে পড়ার সম্ভাবনা বেশি।

সুমন বলেন, আমি বলছি না এখনই বিপদে পড়বেন। যারা ইভ্যালিসহ এইসব প্রতিষ্ঠান থেকে পণ্য কিনছেন তাদের প্রতি আহ্বান জানাব, যেখানে বাংলাদেশ ব্যাংক শঙ্কিত, ব্র্যাক ব্যাংকের মতো ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড বন্ধ করে দিয়েছে। এখানে আপনারা কতটুকু ইনভেস্ট করবেন তা সতর্কভাবে করা উচিত। সরকারের উচিত এসব ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান নিয়ন্ত্রণ করা। আজকে যখন এদের ৪০০ কোটি টাকা ঋণ হয়ে গেছে, এখন যতই তদন্ত রিপোর্ট দেন, খুব বেশি লোককে বাঁচাতে পারবেন বলে মনে করি না। এখনই সবাই সতর্ক হোন।

পরিশেষে একটি কথা বলতে চাই, আপনার টাকাটা অনেক কষ্টে অর্জিত। এই টাকা এভাবে নষ্ট করা ঠিক হবে না। এসব প্রতিষ্ঠান থেকে পণ্য ক্রয়ে আরেকটু সতর্ক হোন।

আরআই

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ