ঢাকা, বুধবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৪, ১৪ কার্তিক ১৪৩১, ২৬ রবিউস সানি ১৪৪৬

অক্টোবরের শেষে চুক্তি অনুযায়ী টিকা দেবে ভারত

প্রকাশনার সময়: ১০ সেপ্টেম্বর ২০২১, ২৩:৪২

ভারতের সেরাম ইনিস্টিটিউট উৎপাদন বাড়াতে না পারায় বাংলাদেশ চুক্তি অনুযায়ী অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা পায়নি মন্তব্য করে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, আসছে অক্টোবরের শেষ দিকে এ প্রতিবন্ধকতা কেটে যেতে পারে। তখন আমাদের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী টিকা পাওয়ার সম্ভবপর হবে।

শুক্রবার রাজধানীতে এক সংবাদ সম্মেলনে ভারত সফরের অভিজ্ঞতা সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন তথ্যমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে কাক্সিক্ষত সময়ে চুক্তি অনুযায়ী টিকা না পাওয়া এবং নতুন চালানের সম্ভবপর সময় জানান তিনি।

হাছান মাহমুদ বলেন, ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, টিকা উৎপাদনে তারা যেটি আশা করেছিলেন, সে অনুযায়ী হয়নি। তবে চলতি বছরের অক্টোবরের দিকে টিকা উৎপাদন আরো জোরদার হবে। যেটা তারা আশা করছিলেন, সে অনুযায়ী উৎপাদন করতে পারেননি। টিকার ম্যাটেরিয়াল (কাঁচামাল) বিদেশে থেকে আসে, সেগুলো না আসার কারণে তারা টিকা উৎপাদনে যেতে পারছে না। আশা করি এই বছরের শেষের দিকে এই প্রতিবন্ধকতা কেটে যাবে। তখন আমাদের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী সেই টিকা সরবরাহ করার সম্ভবপর হবে।

সেরাম ইনস্টিটিউটের কাছ থেকে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার তিন কোটি ডোজ করোনাভাইরাসের টিকা ‘কোভিশিল্ড’ কিনতে গত বছরের নভেম্বরে ত্রিপক্ষীয় চুক্তি করে বাংলাদেশ। এরপর জানুয়ারিতে ৬০০ কোটি টাকার বেশি অগ্রিম হিসেবে দেয় সরকার, যা টিকার মোট দামের অর্ধেক।

চুক্তি অনুযায়ী প্রতিমাসে ৫০ লাখ ডোজ টিকা আসার কথা ছিল। গত ২৫ জানুয়ারি প্রথম চালানে ৫০ লাখ ডোজ এবং ২৩ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় চালানে ২০ লাখ ডোজ টিকা আসে বাংলাদেশে। পাশাপাশি ভারত সরকারের উপহার হিসেবে ২১ জানুয়ারি আরো ২০ লাখ ডোজ এবং ২৬ মার্চ ১২ লাখ ডোজ কোভিশিল্ড পেয়েছে বাংলাদেশ।

মার্চে ভারতে করোনাভাইরাস মহামারি চরম আকার ধারণ করলে সেদেশের সরকার টিকা রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা দেয়। ফলে সংকটে পড়ে বাংলাদেশ। পর্যাপ্ত টিকা না থাকায় ২৫ এপ্রিল দেশে প্রথম ডোজ দেয়া বন্ধ করে দিতে হয়। এক পর্যায়ে দ্বিতীয় ডোজ দেয়াও বন্ধ হয়ে যায়।

শেষ পর্যন্ত চীন থেকে সিনোফার্মের টিকা কেনার জন্য সরকার চুক্তি করে। সেই টিকার পাশাপাশি টিকার আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্ম কোভ্যাক্স থেকেও টিকা আসছে এখন। সেই টিকা দিয়েই এখন আবার সারাদেশে টিকাদান কর্মসূচি চলছে।

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ সংবাদ সম্মেলনে জানান, গত ৫ থেকে ৮ সেপ্টেম্বর ভারত সফরে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শংকর, তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর এবং পররাষ্ট্র সচিব হর্ষ বর্ধন শ্রিংলার সঙ্গে তার বৈঠক হয়েছে। গত সোমবার তিনি দিল্লিতে প্রেসক্লাব অব ইন্ডিয়ায় বঙ্গবন্ধু কর্নারের উদ্বোধন করেন। প্রেসক্লাব অব ইন্ডিয়ার নেতৃবৃন্দের পাশাপাশি বাংলাদেশের হাই কমিশনার মোহাম্মদ ইমরানও সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

পরদিন ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব ওয়ার্ল্ড অ্যাফেয়ার্স আয়োজিত একটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে যোগ দেন তথ্যমন্ত্রী। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ওপর ‘বাংলাদেশ ওয়ার কমেন্ট্রি’ নামে বইটি লিখেছেন ইউ এল বড়ুয়া।

এই সফরে ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশন ‘দূরদর্শনে’ একটি সাক্ষাৎকারও দেন হাছান মাহমুদ। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক জোনে বিনিয়োগের জন্য ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও সচিবের সঙ্গে বৈঠক করার কথা জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ভ্যাকসিন নিয়েও আলোচনা হয়েছে। ইনফরমেশন ও ব্রডকাস্ট মন্ত্রীর সঙ্গে সার্বিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আলোচনায় বঙ্গবন্ধুর বায়োপিক দ্রুত সম্পাদন করে যাতে মুক্তি দেয়া যায় এবং আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ওপর একটি ছবি নির্মাণের চুক্তি আছে, সেটি যাতে দ্রুত শুরু করতে পারি।

আগামী ৭ ডিসেম্বর ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রীর ৫০ বছর কীভাবে উদযাপন করা হবে, সেই বিষয়টিও আলোচনায় ছিল জানিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, যৌথভাবে কিছু করার পরিকল্পনা দুই দেশের রয়েছে। ভারতে এই সফরের মধ্য দিয়ে দুই দেশের সম্পর্ক আরো জোরদার হবে বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন।

নয়া শতাব্দী/এম

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ