কথায় আছে, বাঁচার জন্য মানুষ নাকি ভাসমান খড়কুটোও আঁকড়ে ধরে। তাহলে কেন আত্মহত্যার মতো একটি কাণ্ড অবলীলায় ঘটিয়ে ফেলে সেই মানুষ? মানুষ কেন আত্মহত্যা করে, এর কোনো সুনির্দিষ্ট উত্তর নেই। যখন কোন কাজে কেউ ব্যর্থ হয়, তখন সে মনে করে আমার পক্ষে মনে হয় আর কোন কিছু করা সম্ভব হয়ে উঠবে না। এখানেই মনে হয় আমার জীবন শেষ।
কখনও কি ভেবে দেখেছেন, আপনার আশপাশে থাকা অসংখ্য বিকলাঙ্গ মানুষ বা গরিব অসহায় দিনমজুর জীবনের প্রতিকূলতার মাঝে থেকেও খুশিমনে কীভাবে জীবন কাটিয়ে দিচ্ছে? অথচ আপনি সামান্য কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার জন্য আত্মহত্যার কথা ভাবছেন! আত্মহত্যা মানেই সবকিছুর সমাধান নয় বরং জীবনযুদ্ধে হার মেনে নেয়া।
আত্মহত্যা কখনোই কোন কিছুর সমাধান হতে পারে না। সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতির মানুষেরাও প্রতিদিন শ্বাস নিতে লড়াই করে বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখে। আপনি হাজারো চেষ্টা করেও অন্য কারোর মতো হতে পারবেন না। তাই সবচেয়ে ভালো, নিজের মতো হয়ে ওঠার চেষ্টা করা। সবাই তো আসলে নিজের মতোই। অন্য কারো মতো হওয়া যায় না এবং হওয়া উচিতও নয়। তবে অন্য সবার ভালোটুকুর ছায়া নিয়ে নিজেকে সুন্দর করে সাজাতে পারেন।
২০০৩ সালের ১০ সেপ্টেম্বর আত্মহত্যা প্রতিরোধের উদ্দেশে বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে বিশ্বের অনেক দেশ দিবসটি পালন করে আসছে। এবারের প্রতিপাদ্য ‘কর্মের মাধ্যমে আশা তৈরি করা।’
এদিকে, ব্রাইটার টুমোরো ফাউন্ডেশন (বিটিএফ) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানান, প্রতি ৪০ সেকেন্ডে সারা বিশ্বে একজন আত্মহত্যায় মৃত্যুবরণ করেন। আর ১৪ থেকে ২৯ বছর বয়সীদের মৃত্যুর দ্বিতীয় বৃহত্তম কারণ আত্মহত্যা। সংগঠনটি প্রতিবছর দিবসটি গুরুত্ব সহকারে পালন করে থাকে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য মতে, ২০২০ সালে ১১ হাজার ২৫৯ জন আত্মহত্যা করে। ব্যুরোর এর আগের বছরের হিসাবে অর্থাৎ ২০১৯ সালে ৯ হাজার ৩১০ জন আত্মহত্যা করে। সরকারের হিসাবে করোনাকালে ১৭ দশমিক ৩১ শতাংশ আত্মহত্যার ঘটনা বেড়েছে ।
দিবসটি উপলক্ষে ঢাকায় সাইকেল র্যালির আয়োজন করেছে হিল বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন। আজ (১০ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টায় রাজধানীর সংসদ ভবন থেকে এই সাইকেল র্যালির যাত্রা শুরু হবে। যা মানিক মিয়া এভিনিউ, সংসদ ভবন এলাকা, আসাদ গেট হয়ে আবার মানিক মিয়া এভিনিউতে এসে শেষ হবে।
অন্যদিকে, বিশ্ব আত্মহত্যা প্রতিরোধ দিবস উপলক্ষে মানববন্ধন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি)। বৃহস্পতিবার (৯ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র চত্বরে ছাত্র-নির্দেশনা ও পরামর্শদান দফতর এবং অ্যাডুকেশনাল অ্যান্ড কাউন্সেলিং সাইকোলজি বিভাগের যৌথ উদ্যোগে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান।
নয়া শতাব্দী/এমআর
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ