ঢাকা, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

সফর শেষে বাংলাদেশ নিয়ে আইএমএফের ইতিবাচক বার্তা

প্রকাশনার সময়: ১৯ অক্টোবর ২০২৩, ১৮:০৪
ফাইল ছবি

দুই সপ্তাহের সফর শেষে বাংলাদেশ নিয়ে ইতিবাচক বার্তা দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। সংস্থাটির শর্ত মেনে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক খাতে উন্নতি এবং প্রবৃদ্ধি এসেছে বলেও জানিয়েছে আইএমএফ। এর পাশাপাশি ঋণের দ্বিতীয় কিস্তি নিয়েও দিয়েছে সুখবর।

বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর) আইএমএফের অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানিয়েছে সংস্থাটি।

এতে বলা হয়, ৪ অক্টোবর থেকে আইএমএফের এশিয়া প্যাসিফিক বিভাগের প্রধান রাহুল আনন্দের নেতৃত্বে আইএমএফের একটি প্রতিনিধিদল বর্তমানে বাংলাদেশে অবস্থান করছে।

ঋণের শর্ত এবং দ্বিতীয় কিস্তি ছাড়ের প্রসঙ্গে দেশের অর্থনৈতিক খাত সংশ্লিষ্ট নানা কর্তাব্যক্তির সঙ্গে আলোচনা শেষে সফরের শেষ দিন রাহুল আনন্দ জানান, শিগগিরই বাংলাদেশকে দ্বিতীয় কিস্তির ঋণের বিষয়ে নিশ্চয়তা দেয়া হবে। আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে আইএমএফ থেকে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা আসবে।

রাহুল আনন্দ বলেন, ‘আইএমএফের শর্তানুযায়ী কাজ করে ইতিবাচক ফল দেখাতে সক্ষম হয়েছে বাংলাদেশ। তবে এখনও বড় কয়েকটি চ্যালেঞ্জ আছে। যার মধ্যে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ টাকার অবমূল্যায়ন ঠেকানো এবং রিজার্ভ স্বাভাবিক রাখা। মূলত বিশ্ব অর্থনীতির টানাপোড়েনের ফলে দেশের সামষ্টিক অর্থনীতিতে এর প্রভাব পড়েছে।’

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, বাংলাদেশের উচিত এমন কিছু উদ্যোগ নেয়া, যাতে বাজারে চলমান মূল্যস্ফীতি কমে আসে এবং অর্থনৈতিক প্রবাহ বাধা কাটিয়ে স্বাভাবিক ধারায় চলতে পারে। সম্প্রতি বাংলাদেশ তাদের পলিসি রেট ৭৫ বেসিস পয়েন্ট (বিপিএস) বাড়িয়েছে, যা খুবই ভালো উদ্যোগ।

একটি কঠোর মুদ্রানীতি এবং সহজ মুদ্রা বিনিময় রীতির মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিতে স্বাভাবিক ধারা ফিরিয়ে আনা সম্ভব বলে মনে করে আইএমএফ।

দেশের রিজার্ভ এবং রাজস্ব নিয়ে রাহুল বলেন, বাংলাদেশ জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ধরেছে ৬ শতাংশ এবং মূল্যস্ফীতির হার সাড়ে ৭ শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। যদিও ঝুঁকির অনেক কারণ রয়েছে। সেই সঙ্গে রয়েছে অনিশ্চয়তা, তবে সামনের দিনগুলোতে রিজার্ভের পরিমাণ বাড়বে বলে আইএমএফকে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর বাইরে করনীতিতে শক্ত অবস্থান নিতে হবে বাংলাদেশকে। জিডিপির অনুপাতের সঙ্গে রাজস্ব আদায়ের যে বিশাল ফারাক, সেটি কমিয়ে আনতে হবে।

ব্যাংকিং খাতকে আরও শক্তিশালী করার দিকে জোর দিয়ে রাহুল বলেন, ‘বাংলাদেশ অর্থনৈতিক উন্নতির পশ্চাৎপদতার একটি বড় কারণ দুর্বল ব্যাংকিং খাত। এ খাতকে সবল করতে হলে খেলাপি ঋণের পরিমাণ উল্লেখযোগ্য হারে কমিয়ে আনতে হবে। খেলাপি ঋণের পরিমাণ কমিয়ে আনতে সক্ষম হলে রাষ্ট্রায়ত্ত এবং বাণিজ্যিক সব ক্যাটাগরির ব্যাংক সুবিধা পাবে।’

এ ছাড়া দেশের পুঁজিবাজারের ওপর আলাদা করে গুরুত্বারোপ করার দিকে জোর দিয়েছে আইএমএফ।

এ ছাড়া দেশের সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনায় বারবার বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ লক্ষ্যের কথা উঠে এসেছে জানিয়ে রাহুল আনন্দ বলেন, ‘২০৩১ সালের মধ্যে কীভাবে বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে রূপ দেয়া যায়, সেটি আলোচনায় বারবার উঠে এসেছে। বিশেষ করে ব্যবসার পরিসর বৃদ্ধি, বহুমুখী বিনিয়োগে আকৃষ্ট করা, জলবায়ু সংকট সামাল দেয়া এবং নারীদের অর্থনৈতিক খাতের সঙ্গে আরও সংশ্লিষ্ট করার বিষয়টি আলোচনায় গুরুত্ব পেয়েছে।’

আইএমএফ জানিয়েছে, দ্বিতীয় কিস্তির ঋণ নিয়ে তাদের এবারের বাংলাদেশ সফর ফলপ্রসূ হয়েছে। বিশেষ করে অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক, দাতা সংস্থা, উন্নয়নমূলক সংস্থা ও প্রাইভেট খাতের সঙ্গে হওয়া আলোচনাকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছে সংস্থাটি।

নয়াশতাব্দী/এমটি

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ