ঢাকা, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

পি কে হালদারের নিকট দেশের স্বার্থের চেয়ে নিজের স্বার্থ বড় ছিল : বিচারক

প্রকাশনার সময়: ০৮ অক্টোবর ২০২৩, ১৬:২৮
ফাইল ছবি

অর্থপাচার ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রশান্ত কুমার হালদার ওরফে পি কে হালদারকে ২২ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

রোববার (০৮ অক্টোবর) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১০-এর বিচারক মোহাম্মদ নজরুল ইসলামের আদালত আসামি অবন্তিকা, শঙ্খ, সুকুমার ও অনিন্দিতার উপস্থিতিতে এই রায় ঘোষণা করেন।

৪২৫ কোটি ৭৬ লাখ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন এবং তা পাচারের মামলায় তাকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। তিনি বর্তমানে ভারতের কারাগারে বন্দি রয়েছেন।

রায় পড়ার সময় বিচারক বলেন, কনক্রিট জাস্টিস একমাত্র মহান রাব্বুল আলামিন করতে পারেন। তিনি বলেন, একজন বিচারক শুধু রেকর্ড ও নথি দেখে রায় ঘোষণা করতে পারেন। এতে এক পক্ষ খুশি হবে অপর পক্ষ অখুশি হয়। দুই পক্ষকে কখনো খুশি করা যায় না। আর এটা বিচারকের কাজও না।

বিচারক আরও বলেন, আমাদের রেকর্ডে যা আছে তা দেখেই আমাদের জাজমেন্ট দিতে হয়। রেকর্ডে কিছু তথ্য সত্য থাকে কিছু মিথ্যা থাকে ডকুমেন্টস কিছু ফলস থাকতে পারে। আমাদের পক্ষে যতটুকু সম্ভব বিচার-বিশ্লেষন করে রায় দেওয়ার চেষ্টা করি।

রায়ের সংক্ষিপ্ত পর্যবেক্ষণে বিচারক বলেন, পি কে হালদার মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান ছিলেন। তার মা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষিকা। বুয়েট ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্র আসামি প্রশান্ত কুমার হালদার দেশের উন্নয়নে অবদান রাখার পরিবর্তে সম্পদ গড়ার নেশায় মত্ত হন। তার মা ও ভাইসহ ঘনিষ্ঠজনের সহযোগিতায় অসংখ্য নামি-বেনামি প্রতিষ্ঠান সৃষ্টি করে পাহাড়সম অবৈধ সম্পদ অর্জন করেন।

তিনি আরও বলেন, একজন মেধাবী নাগরিক তার মেধাকে কাজে লাগিয়ে জাতি গঠনের যেরূপ ভূমিকা রাখতে পারে ঠিক তেমনিভাবে অপরাধ চক্রের সঙ্গে জড়িয়ে পড়লে তখন সে জাতির জন্য বিপজ্জনক হয়ে দাঁড়ায়। আসামি পি কে হালদার তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। মানুষ ব্যক্তি স্বার্থের জন্য অন্ধ হয়ে যায়। পি কে হালদারের নিকট দেশের স্বার্থের চেয়ে নিজের স্বার্থ অনেক বড় ছিল। আমরা যেন নিজের সামান্য ব্যক্তি স্বার্থের জন্য মানিলন্ডারদের সহযোগী না হই।

রায়ে পি কে হালদার ছাড়াও অন্য ১৩ আসামিকে দুই মামলায় তিন এবং চার বছর করে মোট সাত বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। দণ্ডিত আসামিদের মধ্যে চারজন কারাগারে আছেন। তারা হলেন- অবন্তিকা বড়াল, শংখ বেপারী, সুকুমার মৃধা ও অনিন্দিতা মৃধা। রায় ঘোষণার জন্য তাদের কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। রায় ঘোষণা শেষে সাজা পরোয়ানা দিয়ে ফের কারাগারে পাঠানো হয়।

এছাড়া পি কে হালদারসহ অন্য ১০ আসামি পলাতক। পলাতক আসামিরা হলেন- পি কে হালদারের মা লিলাবতী হালদার, ভাই প্রিতিশ কুমার হালদার, সহযোগী অমিতাভ অধিকারী, পূর্ণিমা রানী হালদার, উত্তম কুমার মিস্ত্রি, রাজিব সোম, সুব্রত দাস, অনঙ্গ মোহন রায় ও স্বপন কুমার মিস্ত্রি।

আদালতে দুদকের পক্ষে মীর আহমেদ আলী সালাম এবং কারাগারে থাকা আসামিপক্ষে এহসানুল হক সমাজী ও শাহিনুর ইসলাম উপস্থিত ছিলেন। তবে পি কে হালদার পলাতক থাকায় তার পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিল না।

এর আগে গত বুধবার (০৪ অক্টোবর) একই আদালত উভয় পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে রায়ের জন্য আজ (০৮ অক্টোবর) রোববার দিন ধার্য করেন।

নয়া শতাব্দী/এমবি/এফআই

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ