মমতাময়ী মা হিসেবে বাংলাদেশের মানুষের কাছে পরিচিত পেয়েছে নাকানো এরিকো। তিনি জাপানি চিকিৎসক।
সন্তানকে পাওয়ার জন্য নিজের জীবনকে তুচ্ছ করে চলে এসেছেন ঢাকায়। বাংলাদেশি স্বামীর সঙ্গে এ নিয়ে চলছে আইনি লড়াই।
এবার নাকানো এরিকোকে নিয়ে অপপ্রচার চালানো সব কনটেন্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে সরানোর নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
আজ বুধবার (৮ সেপ্টেম্বর) এমন নির্দেশনা দিয়েছেন বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ। এর আগে গতকাল হাইকোর্টে এ সংক্রান্ত আবেদন করা হয়েছিল। আজ অনুষ্ঠিত শুনানিতে নাকানো এরিকোর পক্ষে ছিলেন তার আইনজীবী শিশির মনির, এরিকোর স্বামীর পক্ষে ছিলেন ফাওজিয়া করিম এবং রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুর্টি এটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার।
শুনানি শেষে আদালত এরিকোকে নিয়ে অপপ্রচার সংক্রান্ত সকল কনটেন্ট অতি দ্রুত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে সরানোর নির্দেশ দিয়েছে। নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে বিটিআরসির চেয়ারম্যান ও পুলিশের সাইবার টিমকে।
২০০৮ সালে জাপানি চিকিৎসক নাকানো এরিকোর সঙ্গে বিয়ে হয় বাংলাদেশি শরীফ ইমরানের। ২০২১ সালের ১৮ জানুয়ারি তাদের বিচ্ছেদ ঘটে। তাদের ৩ সন্তান কার কাছে থাকবে এ নিয়ে জাপানে আইনি লড়াই চলাকালে দুই সন্তান জেসমিন মালিকা ও লাইলা লিনাকে নিয়ে বাংলাদেশে চলে আসেন ইমরান। কিছুদিন পর তাদের মা নাকানো এরিকোও ঢাকায় পৌঁছান।
বাংলাদেশে এসে দুই সন্তানকে নিজের জিম্মায় নেওয়ার অনেক চেষ্টা করে ব্যর্থ হওয়ার পর হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন এরিকো। ১৯ আগস্ট তিনি এ ব্যাপারে একটি রিট করেন। সেই রিটের প্রেক্ষিতে গত ৩১ আগস্ট আদালত আদেশ দিয়েছে, ১৫ দিন বাবা-মাসহ দুই শিশু গুলশানের একটি বাসায় থাকবে। এরপর পরিস্থিতি অনুযায়ী পরবর্তী আদেশ দেবেন হাইকোর্ট।
দুই শিশুর সঙ্গে একান্তে কথা বলার পর আদালত এই আদেশ দিয়েছেন। আদেশে আরো বলা হয়েছে, গুলশানের ওই বাসায় থাকার সময় তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। এছাড়া সমাজসেবা অধিদপ্তর ঢাকার ডেপুটি ডিরেক্টর বিষয়টির তত্ত্বাবধান করবেন।
হাইকোর্টে রিট হওয়ার পর আদালত উভয়পক্ষের আইনজীবীকে ৩১ আগস্টের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টির সমাধান করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। সে অনুযায়ী ৩০ আগস্ট রাত পর্যন্ত আইনজীবীরা দফায় দফায় বৈঠক করেছেন নাকানো এরিকো ও শরীফ ইমরানের সঙ্গে। কিন্তু কোনো সমঝোতায় পৌঁছাতে ব্যর্থ হন তারা।
জাপানে এ নিয়ে আইনি লড়াইয়ের মাঝপথেই মিথ্যা তথ্যের ভিত্তিতে গত ২১ ফেব্রুয়ারি দুই মেয়েকে নিয়ে বাংলাদেশে চলে আসেন শরীফ ইমরান। ৩১ মে টোকিওর আদালত সন্তানদেরকে মা এরিকোর কাছে হস্তান্তর করার আদেশ দেন। সেই আদেশ পাওয়ার কিছুদিন পর ১৮ জুলাই বাংলাদেশে আসেন এরিকো। এবার দেখা যাক, বাংলাদেশের আদালত শেষ পর্যন্ত কী নির্দেশনা দেয়।
নয়া শতাব্দী/এম
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ