ঢাকা, বুধবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৪, ১৪ কার্তিক ১৪৩১, ২৬ রবিউস সানি ১৪৪৬

করোনার দ্বিতীয় ডোজ না নিলে কী সমস্যা হতে পারে?

প্রকাশনার সময়: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৫:৫৬ | আপডেট: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৫:৫৮

প্রাণঘাতি করোনাভাইরাসে সংক্রমণ ও মৃত্যু নিম্নমুখীতে বাংলাদেশ। অনেকেই হয়তো এ অবস্থায় ভ্যাকসিন এড়িয়ে যাচ্ছেন। অথবা টিকার দ্বিতীয় ডোজটি এড়িয়ে যাচ্ছেন। মনে করছেন করোনা চলে যাচ্ছে আর সংক্রমণ হবে না। কিন্তু; তারা কি আদৌ জানেন, ঠিক সময়ে ভ্যাকসিনের পরের ডোজটি না নিলে কী কী সমস্যা হতে পারে? কিংবা কেউ যদি দুরকম ভ্যাকসিন নেন দুটি ডোজে? কী ক্ষতি? নাকি কোনো ক্ষতিই নেই?

এ প্রসঙ্গে ভারতীয় চিকিৎসক দীপ্তেন্দ্র সরকার সে দেশের একটি গণমাধ্যমের সঙ্গে বিস্তারিত এক সাক্ষাৎকারে যা বলেন...

ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ডোজ না নিলে কী ক্ষতি?

চিকিৎসক দীপ্তেন্দ্র সরকার জানান, যদি কোভিশিল্ডের প্রসঙ্গে আলোচনা করি, তা হলে দেখা গেছে এই ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজটি নেওয়ার ৩ সপ্তাহ পর আলফা ও বিটা স্ট্রেন থেকে ৫০-৫৫ শতাংশ প্রতিরোধ গড়ে উঠছে। কিন্তু ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের বিরুদ্ধে ৩০ শতাংশ প্রতিরোধ দেখা যাচ্ছে সপ্তাহ তিনেক পর। বর্তমানে আলফা ও বিটা স্ট্রেনের থেকে বেশি মাথা ব্যথা ডেল্টা নিয়েই। কারণ দ্বিতীয় ঢেউয়ে আক্রান্ত হচ্ছেন বেশিরভাগ ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টেই। ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ডোজটি হয়ে গেলে, আলফা ও বিটার বিরুদ্ধে ভ্যাকসিন ৭০ শতাংশ প্রতিরোধ গড়ে তুলবে। ডেল্টার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলবে ৬০ শতাংশ। তাই কোনোভাবেই মিস করা যাবে না পরের ডোজ। তাই ভারত সরকারের পক্ষ থেকে এখন দুটি ডোজই সুলভ করে দেওয়া হচ্ছে।

দ্বিতীয় টিকা না নিলে প্রথমটি কতটা কার্যকর?

দ্বিতীয় ডোজ না নিলে প্রথম ডোজ নিয়েও কোনো লাভ হবে না। দেখা গেছে, প্রথম ডোজটি নেওয়ার ১২ সপ্তাহ পর্যন্ত এর প্রভাব থাকে। তারপর থেকেই টিকার প্রতিক্রিয়া কমতে থাকে। বা আদৌ থাকে কি না তা পরীক্ষা করে দেখা হয়নি।

কিন্তু প্রথম ডোজের প্রভাব সর্বাধিক কতটা সময় থাকে, তার ওপর ভিত্তি করেই সরকার সিদ্ধান্ত নেয়, কোভিশিল্ডের ক্ষেত্রে প্রথম ডোজের ১২ সপ্তাহ পর দ্বিতীয়টি দেওয়ার। এখন কেউ যদি সেই ব্যবধান বাড়িয়ে ১৩২ দিন করে দেয়, তা হলে কোনো প্রটেকশন তো থাকবেই না, উপরন্তু প্রথম ডোজের উপকারিতাও চলে যাবে। শরীর বুঝবেই না, দ্বিতীয় ডোজ যেটি গ্রহীতা বেশি ব্যবধানে নিলেন, তা বুস্টার নাকি নতুন ভ্যাকসিনেশন।

১২ সপ্তাহ পর দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার কি কোনো ক্ষতি আছে?: না। টিকা নেওয়ার প্রথম ডোজের প্রভাব ৩ মাস বা ১২ সপ্তাহ অবধি থাকে, সেই সর্বোচ্চ সময়সীমা দেখেই সরকার ঠিক করে টিকার দ্বিতীয় ডোজের সময়। কারণ প্রথমদিকে দেশে চাহিদা অনুযায়ী টিকার যোগান ছিল না। তাই প্রথমে জনসংখ্যার একটা বড় অংশকে ভ্যাকসিন দিয়ে দেওয়া জরুরি ছিল।

এরপর যদি ভ্যাকসিনের যোগান বাড়ে, তা হলে হয়তো সরকার এই ব্যবধান কমাতে পারে। যুক্তরাজ্যে কিন্তু একই পদ্ধতিতে এগিয়েছে। তাই সরকারি সিদ্ধান্ত ঠিক কি ভুল এই নিয়ে চর্চা না করে মন দেওয়া দরকার, ভ্যাকসিন ঠিক সময়ে নিয়ে ফেলার বিষয়টিকে। তা হলে হয়তো তৃতীয় ঢেউয়ের অভিঘাত কিছুটা এড়ানো যেতে পারে।

নয়া শতাব্দী/এম

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ