আলোচিত কলেজ ছাত্রী মোসারাত জাহান মুনিয়া মৃত্যুর সময় দুই থেকে তিন সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন বলে তার ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। এই বিষয়টি সামনে রেখেই বসুন্ধরার গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবাহান আনভীরসহ আট জনের বিরুদ্ধে হত্যা ও ধর্ষণের মামলা করেছেন মুনিয়ার বড় বোন নুসরাত জাহান তানিয়া।
তবে, বসুন্ধরা গ্রুপের গ্রুপের গণমাধ্যম বিষয়ক উপদেষ্টা মোহাম্মদ আবু তৈয়ব এই মামলাকে ‘অসৎ উদ্দেশ্য প্রণোদিত’ বলে আখ্যায়িত করেছেন।
বিবিসি বাংলাকে তিনি বলেন, ‘এটা বসুন্ধরা গ্রুপের বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র, একটি বিশেষ মহল পরিকল্পিতভাবে বসুন্ধরা গ্রুপের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে, তারই অংশ এটা।আবু তৈয়ব আরো বলেন, ‘এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং বানোয়াট এবং বসুন্ধরাকে ব্ল্যাকমেইল করার উদ্দেশ্যে এই মামলা’।
গত সোমবার (৬ সেপ্টেম্বর) ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-আটে দায়ের করা মামলার এজাহারে মুনিয়ার ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনের সূত্রে তার অন্তঃসত্ত্বার বিষয়টি তুলে ধরেন বড় বোন তানিয়া।
আদালতের দাখিল করা হত্যা ও ধর্ষণের মামলা এজাহারের পূর্ণাঙ্গ কপির ছবি তুলে ধরা হলো।
মামলার নথি হিসাবে আদালতে জমা দেওয়া মুনিয়ার ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনের ষষ্ঠ পাতায় বলা হয়েছে, ‘Uterus found enlarged (3” X 2.5”) Contain Product of conception (about 2 to 3 wks)’ অর্থাৎ জরায়ু স্বাভাবিকের চেয়ে বড়, যার ভেতরে দুই থেকে তিন সপ্তাহের ভ্রূন আছে’। এখানে সেই প্রতিবদন ছবি আকারে তুলে ধরা হলো।
এর আগে মুনিয়ার বড় বোন বাদী হয়ে গুলশান থানায় সায়েম সোবহানের বিরুদ্ধে আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলা করেছিলেন।
সেই মামলায় বিষয়টিকে আত্মহত্যা বলে জানিয়ে, সায়েম সোবহানকে অব্যহতি দেয় পুলিশ। তবে পুলিশের চুড়ান্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, মুনিয়ার দেহে যৌন মিলনের চিহ্ন ছিলো।
তবে, তা ধর্ষণ কিনা তা নিশ্চিত নন। পুলিশ মুনিয়ার বাসা থেকে সংগৃহিত ২১টি আলামতের ফরেনসিক করতে দিয়েছিল।
মুনিয়ার ব্যবহৃত কাপড়ে পুরুষের ডিএনএ পাওয়া যাবার কথা পুলিশ মামলার চুড়ান্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছিলো।
সেই সাথে তদন্ত কর্মকর্তা লিখেছেন, ‘যেহেতু অত্র মামলার এজাহারভুক্ত আসামী (সায়েম সোবাহান) সাম্প্রতিক নিকটবর্তী সময়ে ভিকটিমের বাসায় আসা যাওয়াসহ ভিকটিমের সহিত তাহার শারিরিক সম্পর্কের সুনির্দিষ্ট স্বাক্ষ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি, ফলে অনুমিত যে পরীক্ষায় প্রাপ্ত ডিএনএ ফলাফলের সাথে ভিকটিমের কোনো যোগসূত্র নাই। কোনো প্রকার সমর্থিত স্বাক্ষ্য প্রমাণ ব্যতিরেকে কেবলমাত্র বাদিনীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে একজন সন্দিগ্ধ ব্যক্তির ডিএনএ স্যাম্পল কালেকশন ও পরীক্ষা করানোর বিষয়টি যুক্তিযুক্ত নয়’।
এই বিষয়ে মুনিয়ার বড় বোনের আইনজীবী আবদুল গোফরান ভুইয়া জানিয়েছেন, ‘মুনিয়ার পরিধেয় পোশাক ও অন্যান্য আলামত থেকে নমুনা সংগ্রহ করে ডিএনএ করার উদ্দেশ্যই ছিল তাতে অন্য কারো ডিএনএ পাওয়া যায় কিনা যা খুঁজে দেখা। সেটি পাবার পরও আসামীর ডিএনএ পরীক্ষা না করার মানেই হলো পুলিশের খামখেয়ালীপনা ও তদন্ত অন্যদিকে ধাবিত করা’।
নয়া শতাব্দী/এসএম
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ