একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি খান রোকনুজ্জামানকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের এলিট ফোর্স র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)।

শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে ঢাকার সাভার থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব-২ এর একটি দল।

রোববার (১ অক্টোবর) দুপুরে র‌্যাব-২ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) সিনিয়র এএসপি শিহাব করিম এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

সিনিয়র এএসপি শিহাব করিম জানান, ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সহযোগী হিসেবে যুদ্ধাপরাধী খান রোকনুজ্জামানসহ রাজাকার বাহিনীর অন্যরা সাতক্ষীরা এলাকায় মুক্তিকামী মানুষের ওপর নির্যাতন, অপহরণ, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগ, ধর্ষণ, হত্যা-গণহত্যাসহ বিভিন্ন মানবতাবিরোধী কাজ করে।

র‌্যাব-২ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক বলেন, রাজাকার বাহিনীর সক্রিয় সদস্য হিসেবে রোকনুজ্জামান মানবতাবিরোধী কাজে সরাসরি অভিযুক্ত। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীদের সাথে নিয়ে তিনি সাতক্ষীরা জেলায় পাঁচ ব্যক্তিকে গলা কেটে ও একজনকে বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা, দুই জনকে ধর্ষণ ও ১৪ জনকে আটক করে নির্যাতনের মতো অপরাধে জড়িত ছিলেন।

এই ঘটনায় ২০১৫ সালে সাতক্ষীরায় রোকনুজ্জামানের বিরুদ্ধে অবৈধ আটক, নির্যাতন, ধর্ষণ, হত্যা-গণহত্যাসহ বিভিন্ন মানবতাবিরোধী কাজে জড়িত থাকার অপরাধে একটি মামলা হয়। পরে আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে পাঠানোর আদেশ দেন।

ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার কার্যক্রম ২০১৫ সালের ৭ আগস্ট থেকে শুরু করে ২০১৭ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলে। ২০১৭ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি খান রোকনুজ্জামানের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা প্রতিবেদন দাখিল করে। তদন্ত শেষে ১৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যের পরিপ্রেক্ষিতে আসামি খান রোকনুজ্জামানের বিরুদ্ধে ছয় জনকে হত্যা, দুই জনকে ধর্ষণ, ১৪ জনকে আটক ও নির্যাতনের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধের মোট ছয়টি অভিযোগ আনা হয়।

দীর্ঘ বিচারিক কার্যক্রম শেষে আসামির বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ২০২২ সালের মার্চ মাসে রোকনুজ্জামানকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়ে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন ট্রাইব্যুনাল।

মানবতাবিরোধী অপরাধে দণ্ডিত পলাতক এ আসামিকে শনিবার রাতে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব-২। তার বিরুদ্ধে আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিনিয়র এএসপি শিহাব করিম।

নয়া শতাব্দী/এমবি