সিরাজগঞ্জ-৬ (শাহজাদপুর) আসনের সংসদ সদস্য, উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাবেক শিল্প উপমন্ত্রী হাসিবুর রহমান স্বপনের মৃত্যুতে জাতীয় সংসদে শোকপ্রস্তাব আনা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ অনেকে তাকে নিয়ে সংসদে আলোচনা করেন। একই সঙ্গে সংসদ মুলতবি ঘোষণা করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২ সেপ্টেম্বর) সকালে সংসদের বৈঠকের শুরুতেই স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী শোকপ্রস্তাব পড়ে শোনান।
স্পিকার বলেন, আমি গভীর দুঃখের সাথে জানাচ্ছি যে, একাদশ জাতীয় সংসদের সিরাজগঞ্জ-৬ আসনের সংসদ সদস্য মো, হাসিবুর রহমান স্বপন ভোররাতে (২ সেপ্টেম্বর) তুরস্কে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬৭ বছর ৩ মাস ১৫ দিন।
তিনি বলেন, হাসিবুর রহমান স্বপন ১৯৫৪ সালের ১৬ মে সিরাজগঞ্জ জেলায় এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম আতাউর রহমান ও মাতার নাম হালিমা খাতুন। তিনি ১৯৯৬ সালের সপ্তম, ২০১৪ সালের দশম ও ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়নে তিনবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। সপ্তম জাতীয় সংসদে তিনি শিল্প উপমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করে। একাদশ জাতীয় সংসদে তিনি সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি শাহজাদপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন। তিনি ১৯৬৯ সালে গণঅভ্যুত্থান, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় অংশ নেন।
স্পিকার আরও বলেন, তিনি শাহজাদপুর মহিলা ডিগ্রি কলেজ, মাওলানা সাইফুদ্দিন এহিয়া ডিগ্রি কলেজ, ইব্রাহিম মডেল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি রূপপুর বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি। তিনি শাহজাদপুর মোটর মালিক সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। তিনি শাহজাদপুর রিকশা ও তাঁত শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, শাহজাদপুর খানা কমান্ড, সিরাজগঞ্জের সদস্য ছিলেন।
শিরীন শারমিন এমপিদের উদ্দেশ্যে বলেন, মরহুম হাসিবুর রহমান স্বপনের জীবন-বৃত্তান্ত সম্বলিত শোকপ্রস্তাব আমি এ মহান সংসদে উত্থাপন করছি। শোকপ্রস্তাবের অনুলিপি আপনাদের মাঝে সরবরাহ করা হয়েছে। আমি এখন শোকপ্রস্তাবটি সর্বসম্মতিক্রমে গ্রহণ করার জন্য মহান সংসদের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি।
এরপর শোকপ্রস্তাবের আলোচনার পর সংসদে সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়। এমপিদের নিজ নিজ আসনে এক মিনিট দাঁড়িয়ে নীরবতা শেষে তার রুহের মাগফেরাত ও শান্তি কামনা করে মোনাজাত করা হয়। মোনাজাত পরিচালনা করেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান দুলাল।
পরে সংসদের রীতি অনুযায়ী সংসদের বৈঠক মুলতবি রাখা হয়। সংসদের চলতি কোনো এমপি মারা গেলে সংসদ মুলতবি করার রেওয়াজ রয়েছে। শুক্রবার (৩ সেপ্টেম্বর) বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত সংসদ মুলতবি করা হয়।
নয়া শতাব্দী/এসএম
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ