বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবর ইস্যুতে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতাদের বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে দলটি।
একই সঙ্গে সরকারকে হুঁশিয়ার করে বলা হয়েছে, চন্দ্রিমা উদ্যান থেকে দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবর সরানোর পরিণতি শুভ হবে না।
বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স আজ মঙ্গলবার রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এমন হুঁশিয়ারি দেন। এ সময় দলটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, শহীদুল ইসলাম বাবুল, মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাত এবং সাধারণ সম্পাদক সাদেক আহমেদ খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, আওয়ামী মন্ত্রী ও নেতারা বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের লাশ নিয়ে যেসব কথা বলছেন, তা রুচিহীন। এসব বক্তব্য প্রদান নিয়ে তারা প্রতিযোগিতায় নেমেছেন। এক্ষেত্রে যার বক্তব্য যত বেশি ঘৃণ্য ও অসত্য হবে, প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে তাকে তত বেশি পুরস্কৃত করা হবে। এসব আওয়ামী প্রযোজিত ও পরিচালিত নষ্ট রাজনীতির উপাদান মাত্র। তাদের এসব বক্তব্যের মাধ্যমে দেশের মানুষের কাছে এটা স্পষ্ট হয়েছে যে, সর্বশেষ মাটিটুকুও সরকারের পায়ের নিচের অবশিষ্ট নেই।
বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, মুক্তিযুদ্ধে সাহসী ও বীরত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য রাষ্ট্রীয় খেতাব ‘বীর উত্তম’, জিয়াউর রহমানের সেই খেতাব কেড়ে নেওয়ার ধৃষ্টতাসহ নতুন করে এখন তার লাশ ও মাজার— এমনকি মহান মুক্তিযুদ্ধে তার অবদান নিয়ে শুরু হয়েছে আপত্তিকর, নির্মম, নিষ্ঠুর ও ঘৃণ্য মিথ্যাচার। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীর মুখ থেকে জিয়ার বিপুল জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে তার লাশ, মাজার ও মুক্তিযুদ্ধে অবদান নিয়ে অশালীন ও ঘৃণিত বক্তব্য এসেছে। তার পর থেকেই অতি উৎসাহে এ বিষয়ে মিথ্যাচার শুরু করেছেন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী ও নেতারা।
তিনি বলেন, কলকাতায় যারা আমোদ-প্রমোদ করেছেন তাদের কাছ থেকে জিয়ার মুক্তিযুদ্ধের সার্টিফিকেট নিতে হবে না। জিয়ার সার্টিফিকেট তিনি নিজেই, বাংলাদেশের আপামর জনগণই তার সার্টিফিকেট। আইনমন্ত্রী, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী, সেতুমন্ত্রী ও তথ্যমন্ত্রীসহ আওয়ামী লীগের বিভিন্ন মন্ত্রী এবং দলটির নেতারা জিয়াউর রহমানের লাশ নিয়ে যে রুচিহীন ও কাণ্ডজ্ঞানহীন মিথ্যাচার করছেন, তার ধিক্কার ও প্রতিবাদ জানাই আমরা।
বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক বলেন, দেশ পরিচালনায় তারা সীমাহীনভাবে ব্যর্থ হয়েছে। গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার এবং মানুষের মৌলিক মানবাধিকার হরণ করা হয়েছে। এ ছাড়া বিচারবহির্ভূত হত্যা, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, আইনশৃঙ্খলার চরম অবনতি, লুটপাটকে আড়াল করা এবং সর্বোপরি করোনার মহামারি মোকাবেলার ব্যর্থতা থেকে মানুষের দৃষ্টি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতেই এই মিথ্যাচার শুরু করেছে তারা। মিথ্যাচার, বিশোদগার, চরিত্র হনন ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি করাই হলো তাদের একমাত্র কাজ।
সরকারের মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের নেতারা মুক্তিযুদ্ধের সময় কে কোন সেক্টরের মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন— এমন প্রশ্নও তুলেছেন এমরান সালেহ প্রিন্স। আমরা দৃঢ়তার সঙ্গে এ কথা বলতে চাই যে, জিয়ার লাশ সরানোর মতো কাজ যদি করা হয়, তাহলে তা হবে নিকৃষ্টতম কাজ। আর এই কাজ যারা করবেন তাদের কালো হাত ভেঙে যাবে, গুঁড়ে যাবে, পুড়ে যাবে, বলেন বিএনপির এই নেতা।
নয়া শতাব্দী/এম
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ