ঢাকা, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

‘আমার সব শেষ, আমার সব চলে গেলো’

প্রকাশনার সময়: ১৮ জুন ২০২৩, ১৭:৩৬

ভুল চিকিৎসায় মারা যায় নবজাতক। এর ১০ দিন পর আইসিইউতে চিকিৎসা দেওয়া হলেও বাঁচানো যায়নি মা মাহমুদা রহমান আঁখিকে। এই সময়ে তাকে প্রায় ৩৩ ব্যাগ রক্ত দেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন স্বজনরা। তার মৃত্যুর খবরে কেউ করছেন আহাজারি, কেউবা বাকরুদ্ধ। শোকে পাথর হয়ে গেছেন সহপাঠী ও বন্ধুরাও।

রোববার (১৮ জুন) দুপুর ১টা ৪৩ মিনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।

মাহবুবা রহমান আঁখির মৃত্যুর খবরে হাসপাতালজুড়ে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। অন্য রোগীর দর্শনার্থীদেরও তা দেখে চোখ ছল ছল করছে। আঁখির মৃত্যুর খবর শুনে শোকে আহাজারি করছেন তার চাচা। তিনি হাসপাতালের মেঝেতে বসেই বলছেন, ‘আমার সব শেষ, আমার সব চলে গেলো।’ কিছুক্ষণ বিলাপের পর আবার তিনি সান্ত্বনা দিতে আসেন আঁখির স্বামী ইয়াকুবকে। বাকরুদ্ধ হয়ে থাকা ইয়াকুব এ সময় ফুঁপিয়ে কাঁদতে থাকেন।

মৃত্যুর খবর শুনে হাসপাতালে ছুটে আসেন আঁখির বোন খালেদা আকতার জুঁই। হাসপাতালের মেঝেতে বসেই করছেন আহাজারি। তিনি বলছেন, ‘মেরে ফেলছে, আমার বোনকে মেরে ফেলছে।’ জুঁই আরও বলেন, ‘আর কিছু বলবো না, মেরে ফেলছে।’

মেঝেতে বসে আঁখির ভাই শামীম বলছিলেন, ‘বাবাও লাশ হয়ে ঢাকা থেকে ফিরছিলেন। আঁখিও তাই।’

৩৩ ব্যাগ রক্ত দিয়েও বাঁচানো যায়নি আঁখিকে ভুল চিকিৎসায় মারা যাওয়া নবজাতকের ১০ দিন পর আইসিইউতে চিকিৎসাধীন মা মাহমুদা রহমান আঁখিরও মৃত্যু হয়। এই সময়ে তাকে প্রায় ৩৩ ব্যাগ রক্ত দেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন স্বজনরা। তাদের এখন একটাই দাবি বাংলাদেশের বিভিন্ন হাসপাতালগুলোর অনিয়ম যেন আইনের আওতায় আসে।

ডেলিভারির সময় ভুল চিকিৎসায় আঁখির মূত্রনালী কেটে ফেলে রাজধানীর সেন্ট্রাল হাসপাতালের চিকিৎসক। এরপর একে একে আঁখির শরীর অকেজো হতে থাকে, বিকল হয়ে যায় কিডনিসহ শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। পরে তাকে বাঁচাতে ৩৩ ব্যাগ রক্ত দেওয়া হলেও শেষ রক্ষা হয়নি।

এদিকে আঁখিকে কুমিল্লায় দাফন করা হবে বলে জানিয়েছেন তার ভাই। তিনি জানান, অনাগত সন্তানকে ঘিরে আঁখি ও তার স্বামী ইয়াকুব আলীর ছিল হাজারো স্বপ্ন। কিন্তু তা আর বাস্তব হয়ে ওঠেনি। রাজধানীর বেসরকারি সেন্ট্রাল হাসপাতালে ভুল চিকিৎসার শিকার হয়ে পৃথিবী ছাড়তে হলো আঁখি ও তার সন্তানকে। আঁখির মৃত্যুর খবর শুনে হাসপাতালে ছুটে আসেন সহপাঠীরা। এ সময় সেন্ট্রাল হাসপাতাল থেকে আঁখির পরিবারকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ করেন তারা।

আঁখির মৃত্যুর জন্য দায়ী ডা. সংযুক্তা সাহাসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি স্বজন ও সহপাঠীদের। আঁখি রাজধানীর ইডেন মহিলা কলেজের ছাত্রী ছিলেন।

নয়া শতাব্দী/এফআই

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ