মা করোনায় আক্রান্ত হয়ে জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে আইসিইউতে ভর্তি রয়েছেন। এদিকে ১২ দিন আগে জন্ম নেওয়া তার যমজ দুই সন্তান এখন দুধের জন্য কাঁদছে। মা লড়ছেন করোনার সঙ্গে আর তার দুটি অবুঝ শিশু কাঁদছে মায়ের দুগ্ধ পান করার জন্য। ঘটনাটি সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে।

জানা যায়, নির্মাণশ্রমিক সুফি মিয়ার স্ত্রী সৈয়দ রিনা বেগম ১৫ আগস্ট সিলেটের একটি বেসরকারি হাসপাতালে সিজারিয়ান অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে দুই যমজ ছেলেসন্তানের জন্ম দেন।

একসঙ্গে দুই ছেলেসন্তানের জন্মে পরিবারে দেখা দেয় বাঁধভাঙা আনন্দ-উচ্ছাস। এর মধ্যে রিনা বেগমের দেখা দেয় করোনার উপসর্গ। ২৪ আগস্ট নমুনা পরীক্ষায় রিনা বেগমের করোনা শনাক্ত হয়।

প্রথমে নিজ বাড়িতে আইসোলেশনে রেখে তাকে চিকিৎসা দেওয়া হলেও শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে গত বুধবার রাতে তাকে ভর্তি করা হয় সিলেটের একটি বেসরকারি হাসপাতালে। সেখানকার চিকিৎসকরা তাকে নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে (আইসিইউ) ভর্তি করে চিকিৎসা দিচ্ছেন। ১২ দিন আগে জন্ম নেওয়া তার যমজ দুই সন্তান এখন দুধের জন্য কাঁদছে।

পরিবার ও এলাকাবাসী সূত্র জানায়, উপজেলার সৈয়দপুর শাহারপাড়া ইউনিয়নের সৈয়দপুর গ্রামে ওই দম্পতির বাড়ি। গত বছরের ২ আগস্ট তাদের বিয়ে হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মুঠোফোনে রিনার স্বামী সুফি মিয়া গণমাধ্যমকে বলেন, ‘চিকিৎসকরা বলেছেন আমার স্ত্রীর শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাকে লাইফ সাপোর্টে নিতে হতে পারে। এ জন্য অনেক টাকার দরকার। আমি গরিব মানুষ, কীভাবে স্ত্রী ও যমজ সন্তানকে বাঁচাব, বুঝে উঠতে পারছি না।’

রিনা বেগমের বোন সৈয়দ শাবানা বেগম বলেন, ‘আমরা তার ফুটফুটে দুই যমজ সন্তান নিয়ে বিপদে রয়েছি। মায়ের দুধের জন্য শিশুরা শুধু কাঁদছে। কীভাবে তাদের সামলাব, বুঝতে পারছি না। আমাদের খালা সৈয়দ শাহেনা বেগম ও শামীনা বেগম শিশু দুটির দেখভাল করছেন।’

জগন্নাথপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা সায়েকুল ইসলাম জানান, করোনায় আক্রান্ত মা রিনা বেগমকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনা হয়েছিল। শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় তাকে পাঠানো হয়েছে সিলেটে।

নয়া শতাব্দী/এম