ঢাকা, বুধবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৪, ১৪ কার্তিক ১৪৩১, ২৬ রবিউস সানি ১৪৪৬

চাল-চিনি ও তেলের দাম ঠিক রাখতে বসছে মোবাইল কোর্ট

প্রকাশনার সময়: ২৫ আগস্ট ২০২১, ২১:১০

কয়েক দিন ধরে বেসামাল চাল, চিনি ও ভোজ্য তেলের বাজার। কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না সরকার। এ অবস্থায় নিত্যপণ্যের দাম বাড়া নিয়ে সরকারের অবস্থান পরিষ্কার করতে বুধবার সংবাদ সম্মেলনে আসেন বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ।

তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে তিনটি নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বাড়ায় বাংলাদেশে এর প্রভাব পড়েছে। তবে এ সুযোগ নিয়ে কোনো অসৎ ব্যবসায়ী মুনাফা করার জন্য অতিরিক্ত মজুদ করলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বাণিজ্য সচিব বলেন, বাজারে জিনিসপত্রের সরবরাহের কোনো ঘাটতি নেই। কিন্তু যেসব জিনিস আমদানিনির্ভর, সেসব জিনিসের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। আমদানিতে দাম বেড়েছে বলে তারাও দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। এখন থেকে আমদানি করতে যেটুকু দাম বাড়ছে স্থানীয় বাজারে আনুপাতিক হারে যাতে সেটুকু বাড়ে তার জন্য মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা এ ব্যাপারে কঠোর মনিটর করবেন। কিন্তু এ সুযোগ নিয়ে যারা জিনিসপত্রের দাম বাড়িয়ে দেবে তাদের আইনের আওতায় আনার জন্য মোবাইল কোর্ট চালানো হবে।

সচিব বলেন, আমদানি মূল্য বেড়েছে শুধু ভোজ্য তেল এবং চিনির। কিন্তু ব্যবসায়ীরা এ সুযোগে অনেক পণ্যের দামই বাড়িয়েছেন। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কঠোরভাবে বাজার মনিটর করছে। সাপ্লাই চেইন ঠিক থাকলে জিনিসপত্রের দাম বাড়বে না বলেও জানান বাণিজ্য সচিব।

এ বিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সফিকুজ্জামান বলেন, চিনির খুচরা মূল্য আপাতত ৭৫ টাকা থেকে ৮০ টাকার মধ্যেই থাকবে বলে আলোচনা হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের আমদানি ও অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য (আইআইটি) অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব এএইচএম সফিকুজ্জামান বলেন, ভোজ্য তেলের দাম আগে যেটা নির্ধারণ করা হয়েছিল সেটাই থাকবে। আগস্ট মাস শোকের মাস বিবেচনায় নতুন করে দাম বাড়ানোর কোনো সুযোগ নেই। আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়লেও সেটা পরে বিবেচনা করা হবে।

বাণিজ্য সচিব বলেন, আমরা জেলা ও উপজেলা কমিটির ক্ষেত্র বিস্তৃত করব। প্রান্তিক জনগোষ্ঠী বা স্বল্প আয়ের মানুষের কষ্ট লাঘবে আমরা টিসিবির অপারেশন গত বছরের তুলনায় আড়াই গুণ বাড়িয়েছি এবং টিসিবি আরো কয়েকটি পণ্য বিক্রয় করছে। আগামী মাস থেকে পেঁয়াজসহ আরো পণ্য বিক্রি শুরু হবে। আমরা সেখানেও আমদানি করছি।

চালের বিষয়টি খাদ্য মন্ত্রণালয় দেখছে জানিয়ে সচিব বলেন, ইতোমধ্যে চাল আমদানির অনুমতি ও ২৫ শতাংশ ট্যাক্স কমানো হয়েছে। ৭ লাখ টানের বেশি আমরা অনুমতি দিয়েছি, আশা করি চালের বাজারে দাম কমে আসবে। ভোজ্য তেল এবং চিনির বিষয়ে আলোচনা করেছি। এই দুটি পণ্যের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে, বাকিগুলো কমে গেছে। আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে, সেটার রিফ্লেকশন হবে, তবে সেটা বাজারের নিয়মেই হবে। তার বেশি যাতে না হয় ব্যবসায়ীরা সে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বৃদ্ধির সুযোগ নিয়ে কেউ যদি অন্যায়ভাবে ভোক্তাদের কষ্ট দেন বা অতি মুনাফা করেন, মজুদ করে রাখেন, সে ক্ষেত্রে আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, মোবাইল কোর্ট, ভোক্তা অধিকার প্রতিযোগিতা কমিশনসহ যারা আছেন তারাও সর্বত্র সতর্ক থাকবেন।

এ কোভিডকালীন মানুষের প্রশান্তির জন্য যা যা করা দরকার সে ব্যবস্থা নেয়া হবে। সরকার এবং ব্যবসায়ীদের সমন্বয়ে আমরা যদি সাপ্লাই চেইন ঠিক রাখতে পারি তাহলে আমাদের যেহেতু সরবরাহে ঘাটতি নেই, প্রয়োজনের তুলনায় বেশি আছে তাই দ্রব্যমূল্য অবশ্যই স্থিতিশীল থাকবে।

নয়া শতাব্দী/এম

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ