আওয়ামী লীগ সরকারের নজর শুধু আজকের প্রয়োজন নয়। ভবিষ্যতে কী দরকার হবে সেদিকে আওয়ামী লীগের নজর। সেটা ঘিরেই আওয়ামী লীগের প্রস্তুতি। আমরা আজকে কাজ করছি- ভবিষ্যতের প্রয়োজনে। আমরা ভাবছি না বাংলাদেশ এখন কোথায়। আমাদের সব সময়ের ভাবনা ও পরিকল্পনা- বাংলাদেশকে আমরা কোথায় নিয়ে যেতে চাই সেটা নিয়ে। আজ থেকে ১০ বছর পরে কী হবে, সেটাই হচ্ছে আওয়ামী লীগ সরকারের ভিশন। সেটাই ডিজিটাল বাংলাদেশের ভিশন। বললেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়।
বাংলাদেশ সময় মঙ্গলবার রাত ৮টায় ‘ব্লেজ’ সার্ভিসের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে যোগ দিয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বক্তব্যের শুরুতে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের শহীদ এবং ২১ আগস্টে নিহতদের স্মরণ করেন সজীব ওয়াজেদ জয়।
সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশের উদ্দেশ্য বাংলাদেশের মানুষের জীবনকে আরও সহজ ও উন্নত করা। এর সব থেকে বড় লাভ আমরা পেয়েছি এই কোভিড মহামারির সময়। অনেক ধনী ধনী দেশ সমস্যায় পড়েছে। অনেকের পক্ষে সরকার পরিচালনা করা সম্ভব হয়নি। তাদের স্কুল-কলেজ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল, কারণ তাদের ডিজিটাল সিস্টেম ছিল না। কিন্তু বাংলাদেশে আমরা এই ডিজিটাল প্রদ্ধতির প্রস্ততি অনেক আগেই নিয়েছিলাম।
তিনি বলেন, এই ভিডিও কনফারেন্সিং কিন্তু আমরা অনেক আগে থেকেই শুরু করেছিলাম। আমরা ইউনিয়ন পর্যন্ত ফাইবার অপটিক বসানোর কাজ শুরু করি। ই-নথি বাস্তবায়ন শুরু করি। তবে সিস্টেম থাকার পরও কোভিড আসার আগে অনেকেই এগুলোর ব্যবহার করতো না। কিন্তু আমাদের প্রতিটি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের হাতে এই সুবিধাগুলো ছিল। এজন্য কোভিড আসার পরে তারা দ্রুত এগুলোতে চলে যেতে পারে।
সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, আমরা স্কুল-কলেজে ডিজিটাল ল্যাব করে দিয়েছিলাম। প্রতিটি হেলথ ক্লিনিকে আমরা চিকিৎসকের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের ব্যবস্থা করেছি। যেজন্য এই মহামারির সময় দ্রুত আমরা ডিজিটাল ব্যবস্থায় চলে যেতে পেরেছি। সে কারণে আমাদের সরকারে ও দেশের অর্থনীতিতে সে রকমভাবে কোভিডের প্রভাব পড়েনি। কারণ আমরা এই প্রস্তুতি অনেক আগে থেকেই নিয়ে রেখেছিলাম।
জয় বলেন, আমাদের এখন স্বপ্ন হচ্ছে- আমরা চলে যাব একটি ক্যাশলেস (নগদ অর্থে লেনদেন হবে না) সোসাইটিতে। আমার ডিজিটাল বাংলাদেশের এখন নেক্সট (পরবর্তী) স্বপ্ন যে বাংলাদেশের সব ফাইন্যান্সিয়াল ট্রানজেকশন ক্যাশলেস হয়ে যাবে।
সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণ কীভাবে হবে, তা তুলে ধরে তিনি বলেন, তারা তাদের মোবাইল ফোনে টাকা পাবে। যে টাকাটা তারা একটা দোকানে গিয়ে খরচ করবে, সেটাও তারা মোবাইলে পেমেন্ট করে দেবে। তাদের হাতে আর ক্যাশ রাখার প্রয়োজন হবে না। তাদের কষ্ট করে আয় করা টাকাটা তাদের থেকে কেউ চুরি করে নেবে না।
জয় বলেন, আজকে আমাদের ৫ কোটি মানুষের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নেই। তারা সম্পূর্ণ ক্যাশের ওপর নির্ভরশীল। ক্যাশলেসে চলে গেলে দুর্নীতির সুযোগ অনেক কমে যাবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক। অনুষ্ঠানে জানানো হয়- প্রবাসীদের কষ্টার্জিত অর্থ বিশ্বের যে কোনো প্রান্ত থেকে ব্যাংকিং চ্যানেলে ডিজিটাল পদ্ধতিতে মাত্র ৫ সেকেন্ডে সপ্তাহে সাত দিন ২৪ ঘণ্টা সোনালী ব্যাংক, Homepay ও ITCL এর যৌথ উদ্যোগে ‘ব্লেজ’ সার্ভিসের মাধ্যমে রেমিটেন্স গ্রাহকদের হিসেবে জমা হবে। বাংলাদেশে ৩৫টির মতো ব্যাংক ‘ব্লেজ’ সেবাটি দিতে পারবে এবং সপ্তাহে ৭ দিন ২৪ ঘণ্টা এই সেবা পাওয়া যাবে।
নয়া শতাব্দী/এসইউ
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ