করোনার কারণে সরকারি চাকরিতে আবেদন করার বয়সসীমা যাদের শেষ হয়ে গেছে বা শেষ হতে যাচ্ছে তাদের জন্য ২১ মাস ছাড় দিয়েছে সরকার।বৃহস্পতিবার (১৯ আগস্ট) সকল মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সচিব বরাবর এ সংক্রান্ত চিঠি পাঠিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
চিঠিতে, করোনা মহামারির কারণে সরকারি চাকরিতে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিতে না পারা সরকারের সকল প্রতিষ্ঠানকে এ বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সকল বিজ্ঞপ্তিতে প্রার্থীদের সর্বোচ্চ বয়সসীমা ২৫ মার্চ ২০২০ নির্ধারণ করার নির্দেশ দেয়া হয়।
প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে আছে সকল মন্ত্রণালয় বা বিভাগ ও এর অধীনস্থ অধিদপ্তর, পরিদপ্তর, দপ্তরগুলো। এ ছাড়াও আছে সংবিধিবদ্ধ, স্বায়ত্বশাসিত, জাতীয়করণ করা প্রতিষ্ঠানগুলো।
তবে বিসিএস এ সিদ্ধান্তের আওতা বহির্ভূত।
করোনা মহামারির কারণে গত বছরের মার্চ থেকে সরকারি চাকরিতে সব ধরনের নিয়োগ স্থগিত ছিল। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন চাকরিপ্রত্যাশীরা। তাদের ক্ষতি পুষিয়ে দিতে এই ছাড় দিল সরকার।
এ সিদ্ধান্তের ফলে গত বছরের ২৫ মার্চের পর থেকে চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে যাদের সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩০ ছাড়িয়ে গেছে বা যাচ্ছে, তারা এই ছাড়ের সুবিধা পাবেন।
বর্তমানে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩০ বছর, মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের ক্ষেত্রে ৩২ বছর। প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির চাকরিতে সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) মাধ্যমে নিয়োগ দেয়া হয়। তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির পদগুলোতে নিয়োগের দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তরের।
করোনা মাহামারির প্রথম দফায় সাধারণ ছুটির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত চাকরি প্রার্থীদের বয়সের ক্ষেত্রে ছাড় দেয় সরকার। তখন গত ২৫ মার্চ যাদের বয়স ৩০ বছর পূর্ণ হয়েছিল তাদের পরবর্তী ৫ মাস, অর্থাৎ আগস্ট পর্যন্ত সরকারি চাকরিতে আবেদনের সুযোগ দেয়া হয়।
করোনাভাইরাস সংক্রমণ হঠাৎ করে আবার বেড়ে গেলে এপ্রিল থেকে শুরু হতে ১০ আগস্ট পর্যন্ত চলে বিধিনিষেধ। ফলে এ সময়ের মধ্যে মন্ত্রণালয়, বিভাগ কিংবা সংস্থাগুলো চাকরির জন্য বিজ্ঞপ্তি দিতে পারেনি।
করোনার কারণে অন্য সবকিছুর মতো প্রভাব পড়েছে নিয়োগ পরীক্ষাগুলোতেও। এই সময়ে সরকারি চাকরির তেমন কোনো নতুন সার্কুলার নেই। ফলে চাকরিতে প্রবেশে যাদের বয়স প্রান্তিকসীমায় ঠেকেছে তারা পড়েছেন দুশ্চিন্তায়।
করোনা মহামারি পরিস্থিতিতে প্রণোদনা হিসেবে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩২ করার দাবি জানিয়ে আসছিলেন চাকরি প্রত্যাশীরা। এ দাবিতে রাজধানীতে সমাবেশও হয়েছে।
চাকরি প্রত্যাশীরা বলছেন, সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩০ হওয়ায় করোনার কারণে দেড় লাখ তরুণ-তরুণী (করোনার শুরুর সময়ে যারা ২৮+ বয়সের ছিল) চাকরির পরীক্ষায় অবতীর্ণ হওয়ার সুযোগই পাচ্ছেন না। আর যেসব শিক্ষার্থী ২৬ বছর বয়সে শিক্ষাজীবন শেষ করে সেই করোনা শুরুর সময় থেকে আশায় বসে আছে চাকরির পরীক্ষায় অবতীর্ণ হবেন, তারাও এই দেড় থেকে দুই বছর হারাতে বসেছেন।
নয়া শতাব্দী/এসএম
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ