ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৪, ১৩ কার্তিক ১৪৩১, ২৫ রবিউস সানি ১৪৪৬
সিলেটে দফায় দফায় ভূমিকম্প

পরীক্ষা হচ্ছে ভবনের সক্ষমতা

প্রকাশনার সময়: ১১ জুন ২০২১, ১৬:৫৫

সিলেটে ১০ দিনের মধ্যে ১০ দফা ভূমিকম্পের পর সম্ভাব্য বিপর্যয় আমলে নিয়ে জানমালের নিরাপত্তার স্বার্থে নগরীর ঝুঁকিপূর্ণ ভবন পরীক্ষা-নিরীক্ষায় নেমেছেন বিশেষজ্ঞরা। এর অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পৃথক বিশেষজ্ঞ দল প্রথম দিনের পর্যবেক্ষণে নামেন।

আপাতত দুইটি দলে ভাগ করে ৪ জন করে সদস্য নিয়ে এ কার্যক্রম পরিচালনা করা হলেও আগামীতে তা আরও বাড়ানো হবে বলে জানিয়েছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিভিল এন্ড অ্যানভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. জহির বিন আলম।

তিনি বলেন এখন আমরা ঝুঁকিপূর্ন হিসেবে ইতোমধ্যে যেসব মার্কেট চিহ্নত হয়েছে সেগুলো পরীক্ষা করছি। পর্যায়ক্রমে সকল মার্কেট-ভবন পরীক্ষা করা হবে। এখন কাজ করছেন শাবির শিক্ষক ও মাস্টার্সের শিক্ষার্থীরা। প্রথম দিনই নগরীর মধুবন সুপার মার্কেট, মিতালি ম্যানশন, সমবায় ভবন, সিটি সুপার মার্কেট, রাজা ম্যনশন, সুরমা মার্কেট এবং দরগাহ গেট এলাকার হোটেল আজমেরীতে পরীক্ষা চলে বলে জানান তিনি। এমনকি শুক্রবার একটি পর্যবেক্ষণ দল নগরীর দুইটি ভবনে পরীক্ষা করেছে বলেও জানান ড. জহির বিন আলম।

এদিকে পর্যবেক্ষণ দলের নেতৃত্বে থাকা পর শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব এপ্লাইড সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি বিভাগের ডিন প্রফেসর ড. মোশতাক আহমেদ জানান, বন্ধ থাকা ৬টি মার্কেটের গুরুত্ব বিবেচনায় এগুলো দিয়েই তারা ভবনগুলোর সক্ষমতার বিষয়ে প্রাথমিক পর্যবেক্ষণ কার্যক্রম শুরু করেছেন। আরও বিভিন্ন বিষয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর ভবনগুলোর সক্ষমতা নিয়ে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।

কোন বিষয়টি বিবেচনায় রেখে এসব ভবন পরীক্ষা করা হচ্ছে জানতে চাইলে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিভিল এন্ড অ্যানভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. জহির বিন আলম বলেন, 'আমরা ভবনগুলোকে কি ভাবে সংস্কার করে বা কোন পদ্ধতি অবলম্বন করে ঝুঁকিমুক্ত করা যায় সে বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে কাজ শুরু করেছি। কিন্তু যেগুলো একেবারেই ঝুঁকিপূর্ন, বা কোন ভাবেই এগুলোকে ঝুঁকিমুক্ত করা সম্ভব না সেগুলো ভাঙ্গা ছাড়া উপায় নেই। তবে চেষ্টা থাকবে না ভেঙ্গে এগুলোকেই কাজে লাগানো।

এই মুহূর্তে বিশেষজ্ঞরা ভূমিকম্প নিয়ে গবেষণার চেয়ে ভূমিকম্প ঝুঁকির শহরে মানুষকে বাঁচানো বা ক্ষয়ক্ষতি কিভাবে কমিয়ে আনা যায় সেদিকে লক্ষ রেখেই কাজ শুরু করেছেন। এর অংশ হিসেবে আগামী ৬ মাসের মধ্যে নগরীর সকল ভবনের সক্ষমতা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে প্রতিবেদন জমা দেবেন। চিহ্নিত করবেন ঝুঁকিপূর্ণ সব ভবন। এ বিষয়ে করণীয় ঠিক করতে বুধবার বিকেলে শাবিপ্রবিতে জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় সিলেট সিটি কর্পোরেশনের সাথে কাজ করতে আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্তে পৌঁছান শাবির বিশেষজ্ঞরা।

এর আগে গত ২৯ মে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ৭ দফায় ভূমিকম্পে কেঁপে উঠে সিলেট। পরদিন ৩০ মে ভোর রাতে ফের ভূমিকম্প অনুভূত হয়। পরে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে নগর কর্তৃপক্ষ থেকে বড় ভূমিকম্পের আগাম সতর্কতা হিসেবে বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করে সিসিক। চিহ্নিত করা হয় ২৪টি ঝুঁকিপূর্ণ ভবন। নির্দেশ দেওয়া হয় ১০ দিন বন্ধ রাখার। কিন্তু ৯ দিনের মাথায় ৭ জুন সন্ধ্যায় ফের দুই দফা ভূমিকম্পে কেঁপে উঠে সিলেট নগর। ফাটল ধরা দেয় রাজা জিসি হাইস্কুলের ‘কামরান ভবন’ ও শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি ভবনে। এতে আবারও নড়েচড়ে বসেছে সিসিক কর্তৃপক্ষ। গ্রহণ করছে নতুন পদক্ষেপ।

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ