ঢাকা, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

তুরাগে হামলার শিকার যুবলীগ নেতার পরিবার, মামলা নেয়নি পুলিশ

প্রকাশনার সময়: ২১ ডিসেম্বর ২০২২, ১৮:৫২

রাজধানীর তুরাগের চন্ডালভোগ এলাকায় গত ১৫ ডিসেম্বর তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে যুবলীগ নেতা ও তার পরিবারের উপর হামলার ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী আবুল কালাম রিপন ঢাকা উত্তর যুবলীগের বর্তমান কমিটির সহ-সম্পাদক। এ ঘটনায় এখনও থানায় মামলা দায়ের করতে পারেননি ভুক্তভোগী ওই পরিবার।

ভুক্তভোগী যুবলীগ নেতা আবুল কালাম রিপন বলেন, তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত কর্মী চন্ডালভোগ মধ্যপাড়ার মকবুল হোসেন, কুদ্দুস মিয়া, বাদশা মিয়া, আব্বাস মিয়া, বিলকিস বেগমসহ অজ্ঞাত পাঁচ/ছয় জন আমাদের উপর হামলা চালায়। এতে আমিসহ আমার বড় ভাই আবুল হোসেনকে (৫১) মাথায় লোহার রড দিয়ে আঘাত করে গুরুতর জখম করে তারা। আমার অপর ভাই মো. আবু সাঈদ (৪৪) ও আমার ভাতিজা রানা (২২) আমাদেরকে উদ্ধারের চেষ্টা করলে বিএনপিকর্মী ও মাদকাসক্ত কুদ্দুস তাদের এলোপাতারি কিল ঘুষি মারতে থাকে। সে সময় স্থানীয়রা এগিয়ে এলে আমাদের কাছে থাকা মোবাইল ফোনসহ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের ৫০ হাজার টাকা নিয়ে পালিয়ে যায় হামলাকারীরা।

তিনি বলেন, পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় মারাত্মক আহত আমার বড় ভাই আবুল হোসেনকে দ্রুত কুয়েত বাংলাদেশ মৈত্রী সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয়। যার চিকিৎসা সনদ আমাদের কাছে আছে। শুধু তাই নয় ঘটনা পর থেকে প্রতিনিয়ত হামলাকারীরা আমার পরিবারকে বিভিন্ন মাধ্যমে হুমকি-ধামকি দিতে থাকে। এ বিষয়ে ১৬ ডিসেম্বর তুরাগ থানায় অভিযোগ করতে গেলে দেখি পুলিশ হামলাকারীদের থেকে উল্টো লিখিত অভিযোগ গ্রহণ করেছে। পরে আমরাও অভিযোগ করলে তা গ্রহণ করে পুলিশ।

তিনি বলেন, দু’পক্ষের অভিযোগ নেয়ার পরে ঘটনাস্থলে আসেন তুরাগ থানা পুলিশের এসআই মোশাররফ হোসেন। তিনি স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে জায়গার ছবি তোলেন। সন্ধ্যায় হামলাকারীদের অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা রুজু করে আমার বড় ভাইকে গ্রেফতার করেন এসআই মোশাররফ। শুধু তাই নয় বাসায় ঢুকে আমার অন্যান্য ভাইদের না পেয়ে হুমকি-ধামকি দিয়ে চলে যায়। পরে ১৯ ডিসেম্বর আমি উত্তরা জোনের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার বদরুল হাসানকে জানাই ও লিখিতভাবে মামলা নেয়ার জন্য উপপুলিশ কমিশনার বরাবর আবেদন করি। কিন্তু সাত দিন পরও অজ্ঞাত কারণবশত মামলা নেয়নি পুলিশ।

তুরাগের চন্ডালভোগের বাসিন্দা আবুল কাশেম ও রফিক বলেন, ঘটনার দিন আমরা উপস্থিত ছিলাম। হামলাকারীরা মামলায় যা বয়ান দিয়েছে তা পুরোপুরি মিথ্যা ও বানোয়াট।

এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করেও অভিযুক্তদের কাউকে পাওয়া যায়নি।

ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘটনার কি সত্যতা পেয়েছেন- এমন প্রশ্নে মঙ্গলবার রাতে তুরাগ থানার এসআই মোশাররফ হোসেন বলেন, তিনি সেখানে যাননি। এ বিষয়ে ওসি স্যার সব জানেন বলে কৌশলে এড়িয়ে যান তিনি‌।

পরে যোগাযোগ করা হয় তুরাগ থানার অপারেশন ইন্সপেক্টর মফিজুল রহমানের সঙ্গে। তিনি বলেন, বিষয়টি ভালো বলতে পারবেন অফিসার ইনচার্জ।

তুরাগ থানার অফিসার ইনচার্জ মওদুদ হাওলাদারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, দুটি মামলা নেয়ার সুযোগ নেই। যেহেতু একটি মামলা হয়ে গেছে সেহেতু তারা আদালতে মামলা দায়ের করতে পারেন। অন্যথায় ৫৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর নাসির উদ্দিনের সঙ্গে কথা বলে দেখতে পারেন।

কিন্তু এ বিষয়ে ওয়ার্ড কাউন্সিলরের সঙ্গে কেন কথা বলতে হবে জানতে চাইলে তিনি কোন সদুত্তর দেননি‌।

বুধবার উত্তরা জোনের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার বদরুল হাসান বলেন, যে ঘটনাটি ঘটেছে সেখানে স্থানীয় কাউন্সিলর নাসির উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন। তিনিও সাক্ষ্য দিয়েছেন। তাই একপক্ষের মামলা নেয়া হয়েছে। অন্যদিকে যুবলীগের সহ-সম্পাদক আবুল কালাম রিপনের লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত চলছে।

নয়াশতাব্দী/জেডআই

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ