ঢাকা, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয় সম্মেলন ঘিরে আ’লীগে জল্পনা-কল্পনার শেষ নেই

প্রকাশনার সময়: ২১ ডিসেম্বর ২০২২, ০৭:৪৬

জাতীয় সম্মেলন ঘিরে আওয়ামী লীগে জল্পনা-কল্পনার শেষ নেই। সম্মেলনে উপস্থিত কাউন্সিলর ও ডেলিগেটরদের দাবির মুখে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা শেখ হাসিনাকে আবারও দলের সভাপতির দায়িত্ব নিতে হবে- এটা শতভাগ নিশ্চিত। ফলে কে হচ্ছেন সাধারণ সম্পাদক, কমিটিতে কারা আসছেন কিংবা বাদ পড়ছেন- এ নিয়েই আলোচনা হচ্ছে বেশি।

দলের একাংশের নেতাকর্মী মনে করছেন, সাধারণ সম্পাদক পদে রদবদলের সম্ভাবনা তেমন একটা নেই। তাদের যুক্তি, বেশিরভাগ জেলা সম্মেলনে পুরোনোরাই শীর্ষ নেতৃত্বে রয়ে গেছেন। কেন্দ্রেও এ ধারা অব্যাহত থাকতে পারে। সেই ক্ষেত্রে ওবায়দুল কাদেরই সাধারণ সম্পাদক পদে বহাল থাকছেন। অর্থাৎ এই পদে তিনি হ্যাটট্রিক করতে যাচ্ছেন। আর আগামী বছরের এপ্রিলের দিকে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে ওবায়দুল কাদেরের। ওই সম্ভাবনা তৈরি হলে দলের সাধারণ সম্পাদকের পদ শূন্য হয়ে যাবে। তখন সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকই হবেন দলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক। আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক কাঠামোতে সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের কোনো পদ নেই।

তবে চার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের মধ্যে যার নাম প্রথমে থাকে, তিনিই সিনিয়র হিসেবে পরিচিতি পান। আর তাকেই ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেওয়া হয়ে থাকে।

এ জন্যই সম্মেলন ঘিরে সাম্প্রতিক সময়ে সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদ নিয়ে বিশেষ আগ্রহ তৈরি হয়েছে। এই ক্ষেত্রে আলোচনার পুরোভাগে রয়েছেন চার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল-আলম হানিফ, ডা. দীপু মনি, ড. হাছান মাহমুদ ও আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম। তাদের সঙ্গে আলোচনায় রয়েছেন দুই সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন ও মির্জা আজম, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস এবং সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল।

এদিকে দলের অপর অংশ সাধারণ সম্পাদক পদে নতুন মুখ আসতে পারে বলে মনে করছে। তাদের যুক্তি, জেলা সম্মেলনগুলোতে তৃণমূল পর্যায়ে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই নেতৃত্বের অদলবদল না হলেও কেন্দ্রে সাধারণ সম্পাদক পদে বদলের সম্ভাবনাই বেশি। বিশেষ করে মহিলা আওয়ামী লীগ, যুব মহিলা লীগ ও স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সম্মেলনে তারই আভাস মিলেছে। এই তিন সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে নতুন নেতৃত্ব এসেছে। এমনকি আলোচনায় আসেননি, এমন নেতৃত্বও সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পেয়েছেন। তাই আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদেও নতুন মুখ আসতে পারে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারক নেতাদের কেউই মুখ খুলতে চাননি। তবে দলের নেতাকর্মী তাদের কাছে জানতে চাইছেন, সাধারণ সম্পাদক পদে কার সম্ভাবনা বেশি? কে এগিয়ে আছেন? নেতাকর্মীর এসব প্রশ্নের জবাবে নীতিনির্ধারক নেতাদের সবাই প্রায় এক বাক্যে বলছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সবুজ সংকেত পাওয়া নেতাই হবেন আওয়ামী লীগের পরবর্তী সাধারণ সম্পাদক। অবশ্য তিনি (শেখ হাসিনা) জাতীয় সম্মেলনে উপস্থিত কাউন্সিলরদের মতামতের ভিত্তিতেই সিদ্ধান্ত জানাবেন।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, আমি কখনোই সাধারণ সম্পাদক পদে নিজের প্রার্থিতা ঘোষণা করিনি। তবে আবারও আমার ওপর দায়িত্ব এলে আমি সেটাকে আওয়ামী লীগের পবিত্র আমানত হিসেবে গণ্য করে দায়িত্ব পালন করব।

তিনি আরও বলেন, সাংগঠনিক তৎপরতার দিক থেকে বর্তমান কার্যনির্বাহী সংসদ বেশ সফল। কেন্দ্রীয় নেতাদের পারফরম্যান্স বেশ ভালো। এই অবস্থায় কাকে রেখে কাকে বাদ দেওয়া হবে, সেটা বাছাই করা বেশ মুশকিল। তবে সম্মেলনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদে নতুন মুখ আসবে।

এই অবস্থায় আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর তিন সদস্য- কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক, অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক ও আবদুর রহমানের নাম সাধারণ সম্পাদকের আলোচনায় রয়েছে। এই পদে আরও আলোচনায় রয়েছেন চার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক- মাহবুবউল-আলম হানিফ, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম এবং সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম। অবশ্য তাদের কেউই আনুষ্ঠানিকভাবে সাধারণ সম্পাদক পদে নিজেদের আগ্রহের কথা জানাননি।

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ